গ্রন্থাগার থেকে নেওয়া বই সবাই সাধারণত নির্ধারিত তারিখের মধ্যেই জমা দেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েক দিন এদিক–সেদিক হতে পারে বৈকি। তাই বলে ৯৮ বছর! হ্যাঁ, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের একটি গ্রন্থাগার থেকে নেওয়া বই ফিরেছে পুরো ৯৮ বছর পর। বইটি বার্ট্রান্ড ডব্লিউ সিনক্লেয়ারের লেখা ওয়াইল্ড ওয়েস্ট।
সিনসিনাটি অ্যান্ড হ্যামিল্টন কাউন্টি পাবলিক লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি বইটি ফেরত আসার খবর দিয়েছে। তারা বলেছে, ১৯২৬ সালে সর্বশেষ পড়তে নেওয়া বইটি গত বছরের শেষ দিকে তাদের প্রিন্স হিল শাখায় ফিরে এসেছে। এত দিন পর কোথা থেকে বইটি গ্রন্থাগারে ফেরত এল, সে উত্তরও দিয়েছে গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ।
গ্রন্থাগারিক ক্রিস্টোফার স্মিথ বলেছেন, একটি পরিবার তাদের একজন বয়স্ক স্বজনের বাড়ির বইয়ের তাকে থাকা ওই বইটি খুঁজে পেয়েছেন। বই পাওয়ার কয়েক দিন আগে ওই স্বজন মারা যান।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউভিএক্সইউ নিউজকে স্মিথ আরও বলেন, ‘যেহেতু আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না, তাই ধরে নিয়েছি ওই ব্যক্তিই গ্রন্থাগার থেকে বইটি নিয়েছিলেন।’
এত আগে কে বইটি নিয়েছিলেন, সেটি খুঁজে বের করতে হলে অনেক পুরোনো কাগজপত্র ঘেঁটে দেখতে হবে বলে জানান স্মিথ।
বার্ট্রান্ড ডব্লিউ সিনক্লেয়ারের ‘ওয়াইল্ড ওয়েস্ট’ ফিরে না আসায় কয়েক বছর পর গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ সেটির নতুন কপি কিনে আনে। সেই বইটি এখনো গ্রন্থাগারে আছে এবং লোকজন সেটি পড়তে নেন।
ফিরে পাওয়া বইটি সম্পর্কে স্মিথ আরও বলেন, ‘বইটি খুব ভালো অবস্থায় আছে, বলতে গেলে এটি প্রায় শত বছরের পুরোনো বই.
বইটি প্রায় অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়ায় স্মিথের উচ্ছ্বাস যেন থামছেই না। তিনি বলেন, ‘এটি যেভাবে আমাদের কাছে ফেরত এসেছে, সেটা ভেবে দেখার মতো। এটি কি আবর্জনায় পরিণত হতে পারত না? অথবা রিসাইকেল হতে কিংবা কাগজের মণ্ড তৈরির জন্য এটিকে গলিয়ে ফেললে কী হতো? বইটি যেমন ছিল, ঠিক তেমন বই আকারে আমাদের কাছে ফেরত এসেছে। এটা সত্যই দারুণ কিছু নয় কি?’
গ্রন্থাগার থেকে বই নেওয়ার পর সেটি নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত না দিলে জরিমানা দিতে হয়। তবে এই বইয়ের বেলায় কোনো জরিমানা করা হচ্ছে না বলে জানান স্মিথ। যদি জরিমানা করা হতো, তবে অতীত ব্যবস্থা অনুযায়ী ৯৮ বছর দেরি করার জন্য প্রায় ৭৩০ মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে হতো।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কলমাকান্দায় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ, মুদি দোকানি গ্রেপ্তার
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মাদ্রাসাপড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন (৫৫) নামে এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ মোজাম্মেল হোসেনকে আদালতে পাঠিয়েছে।
মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মোজাম্মেল হোসেনকে আসামি করে কলমাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সে মামলাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মোজাম্মেল উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের দক্ষিণ চৈতানগর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি সকালে ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় পরীক্ষার ফি দেওয়ার জন্য তার বাবার কাছ থেকে ১৩০ টাকা নেয়। মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে মোজাম্মেল হোসেনের দোকান থেকে ১০ টাকার একটি কলম কিনে মনের ভুলে বাকী টাকা দোকানে ফেলে রেখে চলে যায়। কিছুসময় পর ফেলে আসা টাকা আনতে পুনরায় মোজাম্মেলের দোকানে যায় ওই শিক্ষার্থী। এসময় মোজাম্মেল বলেন, দোকানে টাকা নেই। বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা আনতে। পরে সে মোজাম্মেলের বাড়িতে টাকা আনতে যায়। এসময় মোজাম্মেল ওই শিক্ষার্থীর পিছু নেন। সে ঘরে প্রবেশ করতেই মোজাম্মেল ঘরের দরজা বন্ধ করে হাত-মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, ১৭ ও ১৯ জানুয়ারি চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে পুনরায় ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন মোজাম্মেল। আর এ ঘটনাটি কাউকে বললে ওই শিক্ষার্থীকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও ভয় দেখান মোজাম্মেল। এরপর থেকে ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় যেতে রাজি হচ্ছিল না। কেন সে মাদ্রাসায় যেতে চায় না এর কারণ তার মা জানতে চাইলে কয়েকদিন পর বিষয়টি সে খুলে বলে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন সমকালকে জানান, মঙ্গলবার সকালে এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরপরই মোজাম্মেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।