জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ফলাফল প্রকাশ, ফেল ১২ শতাংশের বেশি
Published: 25th, March 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সারা দেশের ৩৪৪টি কেন্দ্রে ৮৭৬টি কলেজের নিয়মিত, অনিয়মিত, মানোন্নয়নসহ মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৩১৫ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এ পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ফেল করেছেন ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী।
গতকাল সোমবার রাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন অনুষ্ঠিত ২০২৩ সালের অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষার ফলাফল ২৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় প্রকাশ করা হয়। গড় উত্তীর্ণের হার ৮৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। পরীক্ষার্থীর ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সন্ধ্যা সাতটা থেকে পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব লুক্সেমবার্গের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তরে প্রয়োজন নেই আইইএলটিএস২ ঘণ্টা আগেপ্রকাশিত ফলাফলে কোনো প্রকার অসংগতি বা ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধন অথবা ফলাফল সম্পূর্ণ বাতিল করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৯৪ শতাংশই ফেল২৯ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ার কারসাজি: ১৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৯০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুইটি কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির (শেয়ার লেনদেনে আইন লঙ্ঘন) অভিযোগে ৯ ব্যক্তি ও ৯ প্রতিষ্ঠানকে মোটি ১৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
শেয়ার কারসাজি করা কোম্পানি দুটি হলো- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা ও ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সময়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার যোগসাজোসের মাধ্যমে কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিক বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন- বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।
পুঁজিবাজারে কয়েক বছর ধরে গুঞ্জন ছিল কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হচ্ছিল। অবশেষে তদন্ত সাপেক্ষে কোম্পানির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায়ে এনেছে বিএসইসি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য রাইজিংবিডি ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
সি পার্ল বিচ রিসোর্ট: কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৯ প্রতিষ্ঠান এবং ৪ ব্যক্তিকে মোট ১৮৭ কোটি ২২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মো. কালাম হোসেনকে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে আবু সাদাত মো. ফয়সালকে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জামরুল হাসান মো. ইকবাল গণিকে ১ লাখ টাকা এবং মো. আবু নাঈমকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানা করা ৯ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইউডিসি কনস্ট্রাকশনকে ৬৮ কোটি ১ লাখ টাকা, ভেনাস বিল্ডার্সকে ৬৯ কোটি ১ লাখ টাকা, সাতরং অ্যাগ্রো ফিশারিজকে ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা, হৃদয় পোল্ট্রি ফার্মকে ১০ লাখ টাকা, হাসান নার্সারিকে ২ লাখ টাকা, আমানত অ্যাগ্রো ফিশারিজকে ৪০ লাখ টাকা, সাব্বির স্টোরকে ১০ লাখ টাকা, সরকার অ্যাগ্রো ফার্মকে ১ লাখ টাকা এবং মুক্তা ফিশারিজকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্তে ১ জুলাই ২০২২ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত ছিল, যে সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ২০২২ সালের ৩ জুলাই সি পার্লের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩.৫০ টাকা, যা ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অস্বাভাবিক ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১৭.৪০ টাকা হয়।
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স: কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে মোট ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে নূরজাহান বেগমকে ১ লাখ টাকা, সাজিদুল হাসানকে ৭৫ লাখ টাকা, সায়েদুর রহমানকে ১ লাখ টাকা, ফেরদৌসি বেগমকে ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও লুতফর রহমানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্তে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ছিল ৬২.১০ টাকা, যা ১২ জুন তারিখে অস্বাভাবিক ৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১১.৫০ টাকায় পৌঁছে যায়।
কারসাজির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির সিদ্ধান্ত
অভিযুক্তদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব থেকে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিপুল সংখ্যক শেয়ার লেনদেন করে। এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যেমে তারা একটি কৃত্রিম বাজার সৃষ্টি ও পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। যার ফলে শেয়ারটির বাজার মূল্য অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন।
শেয়ার কারসাজিতে জড়িতদের বক্তব্য এবং তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক ও ইচ্ছাকৃত এবং কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থি। এক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ব্যাখ্যা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। কমিশনের বিবেচনায়, সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান পরিপালনে আলোচ্য ব্যর্থতার জন্য, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থে আলোচ্য ব্যক্তিদের জরিমানা করা হয়। তবে অভিযুক্ত দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/এনটি/ইভা