বকেয়া বেতন না দিয়ে হঠাৎ কারখানা বন্ধ, শ্রমিকদের বিক্ষোভ
Published: 25th, March 2025 GMT
বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কামরাঙ্গীচালা এলাকায় একটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে এক ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকেরা। পরে তারা সড়ক থেকে সরে যান।
কামরাঙ্গীচালা এলাকার ‘হ্যাগ নীট ওয়্যার’ কারখানায় তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকেরা বেশ কয়েকদিন ধরে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আজ সকাল ৭টার দিকে শ্রমিকেরা কাজে গিয়ে দেখেন, কারখানার ফটকে তালা ঝুলছে। কারখানা বন্ধ দেখতে পেয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেন। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়। সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকদের কারখানার সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়।
কালিয়াকৈর থানার মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুস সেলিম গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে মহাসড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে; তাদের এনে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যাসের দাম বাড়ায় বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ঘোষিত গ্যাসের নতুন মূল্যহারকে বৈষম্যমূলক আখ্যায়িত করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)। সংগঠনটি বৈষম্যমূলক মূল্যহার অতিসত্বর পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
এদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (ইউরোচ্যাম) নতুন ঘোষিত গ্যাসের দাম বৈষম্যমূলক, অন্যায় এবং বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারাও দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশ ইকােনমিক জােনস ইনভেস্টর অ্যাসােসিয়েশন গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। সমিতির নেতারা জানান, এ সিদ্ধান্ত বিনিয়াগ, উৎপাদন ব্যায় এবং রপ্তানি প্রতিযােগিতার সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারাও সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।
গত রোববার নতুন শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়। নতুন শিল্পের পাশাপাশি এখন যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন, সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে। পাশাপাশি নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৩১ দশমিক ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফিকি বলেছে, নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন গ্রাহক, নতুন গ্যাস সেলস এগ্রিমেন্ট, অনুমোদিত লোডের চেয়ে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারকারী এবং প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের বেশি দাম পরিশোধ করতে হবে, এমনকি তা একই খাতের কোম্পানি হলেও। এই দ্বৈত মূল্যনীতি শুধু ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতি লঙ্ঘন করে না, বরং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি অনিশ্চিত করে।
এতে বলা হয়, ভিন্ন ভিন্ন দামের মডেল নজিরবিহীন এবং এর কারণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। একই খাতে পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে আলাদা জ্বালানি খরচের কারণে উৎপাদন খরচে পার্থক্য তৈরি হবে এবং এ ধরনের মূল্য কাঠামো সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির নীতির পরিপন্থি। সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকার যখন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন শুধু নতুন শিল্প কিংবা নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত একটি বিপরীতমুখী আচরণ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করবে, ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে এবং বিনিয়োগ সম্মেলনের মতো ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্জনকে ধ্বংস করবে।
ফিকি সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, ‘আমরা জ্বালানির চাহিদা ও তা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিইআরসিকে নতুন গ্যাসের মূল্য কাঠামো পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইউরোচ্যামের প্রতিক্রিয়া
গ্যাসের নতুন দামের মডেলটিকে বৈষম্যমূলক, অন্যায় এবং বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ব্যবসায়ী সংগঠন ইউরোচ্যাম বাংলাদেশ জানিয়েছে, এটি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং নতুন ও সম্প্রসারণশীল শিল্পের ওপর উচ্চমূল্য আরোপের মাধ্যমে বিনিয়োগের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন নুরিয়া লোপেজ বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা নিশ্চিত এবং শিল্প সম্প্রসারণে সহায়তা করার জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ জ্বালানি শুল্ক কাঠামো বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রস্তাবিত এই কাঠামো ব্যবসার ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত করার হুমকি তৈরি করছে এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা পাঠাচ্ছে।’