হান্নান মাসউদের ওপর হামলা, রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এনসিপির বিক্ষোভ
Published: 25th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়ায় জাতীয় নাগরিক পাটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন দলটির নেতকর্মীরা।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার জাহাজমারা সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন।
আরো পড়ুন: হাতিয়ায় হান্নান মাসউদের ওপর হামলা, মাথায় জখম
আরো পড়ুন:
ওসমানী মেডিকেল
সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়া নিয়ে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ হামলা, আহত ৩
হাতিয়ায় হান্নান মাসউদের ওপর হামলা, মাথায় জখম
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, “হামলার খবর পাওয়ার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। তারা দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে এবং সতর্ক অবস্থান নেয়। হান্নান মাসউদ ও তার নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করেন। থানায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহাজমারা এলাকায় পথসভায় যোগ দিতে যান আব্দুল হান্নান মাসউদ। এসময় তিনিসহ তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।
জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া প্রতিনিধি মো.
হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান বলেন, “সোমবার সন্ধ্যার আগে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অব্দুর রবকে পিটিয়ে আহত করে হান্নানের লোকজন। এর প্রতিবাদে জাহাজমারা বাজারে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিলটি পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে গেলে আব্দুল হান্নান মাসউদের পথসভার সামনে পড়ে। এতে সামান্য উত্তেজেনা দেখা দেয়। তবে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
তিনি আরো বলেন, “হাতিয়ায় হান্নান মাসউদের কোনাে জনসম্পৃক্ততা নেই। তিনি পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর সন্ত্রাসীদের নিয়ে বর্তমানে হাতিয়ার বিচরণ করছেন। হাতিয়ার জনগণ তা কখনোই মেনে নেবে না।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ অভ য গ ন ত কর ম অবস থ ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
'গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, মনটা ভরি গেইল'
‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'
নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গেইল। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’
লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'
শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে।