৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে ইস্টার্ণ ব্যাংক
Published: 25th, March 2025 GMT
ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ওই বছরের জন্য ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। এর মধ্যে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। বাকি ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বোনাস।
গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত ইস্টার্ণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর এই লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট সূত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণা অনুসারে, সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৮৬ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪ টাকা ৫১ পয়সা (রিস্টেটেড)। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩১ টাকা ৬৩ পয়সা।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, কোম্পানির পুঁজিভিত্তি শক্তিশালী করতে এই স্টক লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের সম্ভাব্য ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি এবং আইন অনুসারে কিছু অনুপাত বৃদ্ধি করতে এই লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে এই স্টক লভ্যাংশ দেওয়া হবে।
কোম্পানির সংরক্ষিত পুঁজি থেকে বা এমন যে মুনাফা এখনো হয়নি তার ভিত্তিতে এই স্টক লভ্যাংশ দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ক্ষতি করেও এই মুনাফা দেওয়া হবে না।
ইস্টার্ণ ব্যাংক ২০২৩, ২০২২ ও ২০২১ সালে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং একই পরিমাণে স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। গত এক বছরে ইস্টার্ণ ব্যাংকের শেয়ারের সর্বেোচ্চ দাম ছিল ৩২ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ২২ টাকা ৯০ পয়সা।
ইস্টার্ণ ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০ বছর ধরে ৩ শতাংশের ঘরে। আর্থিক সূচকের পাশাপাশি ভাবমূর্তিতেও অনেক শক্তিশালী ব্যাংকটি। সেবার মানেও ব্যাংকটি এগিয়ে। গত বছর শেষে ইস্টার্ণ ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
আগামী ২১ মে বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
সিগারেটের মূল্যস্তর তিনটি করার দাবি প্রজ্ঞা-আত্মার
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর ৪টি থেকে কমিয়ে ৩টি করার দাবি জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও মূল্য সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে সংগঠন দুটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিগারেটে ৪টি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করে না। নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে নিরুত্সাহিত হবে।
এতে তামাক কর ও মূল্যবিষয়ক বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মাহফুজ কবীর বলেন, বর্তমানে ৮০ শতাংশের অধিক সিগারেট ব্যবহারকারী নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের ভোক্তা। এই দুই স্তরকে একত্রিত করে দাম বৃদ্ধি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং সিগারেটের ব্যবহার কমবে। বর্ধিত রাজস্ব চলমান বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা বলেন, সরকারের উচিত হবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবধরনের তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ৭টি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয় যে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাশ মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ, এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একইসময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির যেসব দাবি তুলে ধরা হয় সেগুলো হচ্ছে, নিম্ন স্তর এবং মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা; এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ করা। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭% সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।
ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। এছাড়া সব তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আত্মার কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন, কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য প্রদান করেন। আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
উল্লেখ্য, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যান। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।