ভিজিএফের স্লিপ চাওয়ায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নারীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ
Published: 25th, March 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে ভিজিএফের স্লিপ চাওয়ায় এক নারীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিষয়টি আমলে নিয়ে গতকাল ইউএনও রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এর আগে গত শুক্রবার বন্দবেড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। থাপ্পড় মারার কারণে ওই বিধবা নারীর কানের ব্যথা বেশি হলে স্বজনেরা তাঁকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী নারী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় অর্থায়নে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ ও অতি দরিদ্র, অসহায় পরিবারের মধ্যে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য দেওয়ার জন্য বন্দবেড় ইউনিয়নের জন্য ৭ হাজার ৮০০টি কার্ড বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য ৫০০টি স্লিপ দেওয়া হয়। প্রতিটি স্লিপের বিপরীতে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ভিজিএফের চাল বিতরণের খবর পেয়ে বাগুয়ারচর গ্রামে ওই নারী একটি স্লিপের জন্য বন্দবেড় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে যান। এ সময় ইউপি সদস্য তাঁকে থাপ্পড় মারেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মেম্বারের কাছে স্লিপ চাইতে গেলে মেম্বার আমাকে বলেন, “তুই আমাকে ভোট দিস নাই। তোকে স্লিপ দেওয়া হবে না।” প্রতিবাদ করলে তিনি আমার ডান কানে থাপ্পড় মারেন এবং জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন।’
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দিন ভিজিএফের স্লিপের জন্য অনেক মানুষের ভিড় ছিল। এ কারণে স্লিপ দিতে একটু দেরি হওয়ায় সে (ভুক্তভোগী নারী) আমার বাড়িতে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাই আমি তাঁকে বাড়ি থেকে হাত ধরে সরিয়ে দিয়েছি। আমি তাঁকে থাপ্পড় মারি নাই।’
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে মৌখিকভাবে ঘটনা শুনেছি। ভিজিএফের স্লিপের লাইনের ভিড় থেকে ওই নারীকে সরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে বলে জেনেছি। তদন্ত করে তবেই ওই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ জ এফ র স ল প র জন য সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যার অভিযোগে সাবেক এমপিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ
তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ–দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ রোববার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে মিছিল, সমাবেশ হয়েছে। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই কর্মসূচি শেষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে (ইউএনও) স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঁওতাল পল্লি জয়পুর ও মাদারপুর গ্রাম থেকে এসে লোকজন উপজেলা সদরের থানা মোড় এলাকায় সমবেত হন। বেলা একটার দিকে তাঁরা সেখান থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে তির-ধনুকসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত ফেস্টুন নিয়ে সাঁওতাল নারী-পুরুষেরা অংশ নেন। গোবিন্দগঞ্জ সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে। বক্তব্য দেন দুনিয়াস সরেন, শ্যামবালা হেমরম, সাহেব মুরমু, সুফল হেমরম, বিটিশ সরেন, অঞ্জলি মুরমু, ষোয়াস সরেন, অলিভিয়া হেমরম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ, চিনিকল কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল, মঙ্গল, রমেশসহ ৩ সাঁওতাল নিহত এবং ২০ জন আহত হন। এই ঘটনার পর থোমাস হেমরম বাদী হয়ে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের তৎকালীন আওয়ামী লীগ–দলীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যা মামলার বিচার হওয়া তো দূরের কথা, মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দসহ অন্য মূল আসামিদের কেউই গ্রেপ্তার হয়নি। গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আবুল কালাম ও শাকিল পলাতক। ঘটনার ৯ বছরেও গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার হয়নি। বক্তারা অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।