ইমরান-আকরামের মুখে পাকিস্তানের বিশ্বজয়ের গল্প
Published: 25th, March 2025 GMT
দুই সপ্তাহ আগেও যে দলটি তাদের অধিনায়কের মতে, ‘মানসিকভাবে তলানিতে ছিল’—সেই দলটাই কফিন থেকে উঠে বিশ্বকাপ জিতে নিলে কেমন লাগবে? কল্পনার রথ সর্বোচ্চ ছুটিয়েও হয়তো এমন কিছু ভাবা কঠিন। পাকিস্তানের ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয় সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করার গল্প। ৩৩ বছর আগের সেই দিনও ছিল রোজার মধ্যে। ১৮তম রোজা—বিকেলের দিকে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ ইফতার ভুলে পিলপিল করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। রাস্তায় রাস্তায় তুমুল উল্লাস–উদ্যাপন। যেন নতুন জীবন পেয়েছে পাকিস্তান, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ! রমিজ রাজা ঠিক এ কথাই বলেছিলেন পাকিস্তানের ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ের ২৫ বছর পূর্তিতে জিও নিউজের আয়োজনে। সেটা ২০১৭ সাল। ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ইমরান, ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম–উল–হক, মঈন খান, মুশতাক আহমেদদের নিয়ে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন রমিজ—সাবেক এ ওপেনার নিজেও সেই দলটির একজন। সেই অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সে দলটির সাত নায়ক মিলে আড্ডার মেজাজে অনেক গল্পসল্পই করেছেন সেসব দিনের। আজ পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের ৩৩ বছর পূর্তিতে গল্পগুলো শোনা যাক—
অধিনায়ক ইমরান যথারীতি অনুষ্ঠানের মধ্যমণি। ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ে তাঁর নেতৃত্বগুণকে আরও একবার স্বীকৃতি দিতে করতালিতে সিক্ত করলেন বাকি ছয়জন। অধিনায়কের প্রতি সম্মানবোধ সবার এতই বেশি যে তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও সেটা দেখা গেল—ইমরান আসন গ্রহণের পর বাকিরা বসলেন। শুধু ইমরানই পায়ের ওপর পা তুলে বসলেন, বাকিরা তাঁর সামনে চেয়ারে আরাম করে গা এলিয়ে দিলেও আদবটা থাকল চোখেমুখে।
রমিজের শুরুটাও হলো এমনই এক প্রসঙ্গে—ইমরানকে বললেন, মনে হচ্ছে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছি এবং আগের মতোই আপনাকে আমরা ভয় পাই। তবে রাজনীতিতে যেহেতু জড়িয়েছেন, এখন নিশ্চয়ই ভিন্নমত মেনে নিতে পারেন? পাশাপাশি হাসতে হাসতে রমিজ আরেকটি প্রশ্নও তুললেন, এমন একটা ‘ফাটেচার’ (উর্দু শব্দ—বাংলায় জীর্ণশীর্ণ) দল নিয়েও ইমরান কীভাবে কাপ জয়ের স্বপ্ন দেখলেন?
আরও পড়ুন‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব৯ ঘণ্টা আগে’৯২ বিশ্বকাপ জিতে রাজনৈতিক দল তেহরিক–ই–ইনসাফ গঠন করা ইমরান তখনো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হননি। গলায় গাম্ভীর্য ও আভিজাত্য ঝরিয়ে ইমরান উত্তর দেন, ‘দুটো কারণে। প্রথম কারণ হলো তখন তোমরা সবাই খুব তরুণ ছিলে, আর আমি চল্লিশের কাছাকাছি। মুশতাক দু–তিন বছর এসেছে, ওয়াসিম সেরা সময়ে ছিল। তো, সবাই কম বয়সী হওয়ায় সম্ভবত আমাকে নিয়ে ভীতি ছিল। কিন্তু আমি কাউকে কখনো কামড় দিইনি।’ রমিজ ফোড়ন কাটেন, ‘এখন তো এটাই বলবেন!’
হাসির রোল থামার পর ইমরান দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেন, ‘বিশ্বকাপে তিনবার অধিনায়কত্ব করেছি। ’৮৩ বিশ্বকাপের দল ভালো না খারাপ ছিল.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক প জয় র অন ষ ঠ ন ইমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।
২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।
অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।
অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।