খুলনায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 25th, March 2025 GMT
গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হকসহ ছয় নেতার বিরুদ্ধে খুলনায় দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে খুলনা সদর থানায় মামলা দুটি রেকর্ড করা হয়। এসব মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা।
মামলার একটিতে নগরের শান্তিধাম মোড়ে ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাব দখলমুক্ত করার সময় সংঘর্ষের ঘটনায় মারধর এবং অন্য মামলায় টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করা হয়েছে।
‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাব দখলমুক্ত করার সময় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈম হাওলাদার। ওই মামলায় গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক, খুলনা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশিদুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০-২৫ জনকে। অন্য দুই আসামি হলেন যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো.
আর টাকা ছিনতাইয়ের মামলাটি করেছেন খুলনা জেলা কমিটির সদস্য শেখ সাকিব আহমেদ। ওই মামলায় জনি, রাশেদসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য দুই আসামি হলেন গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজ শেখ (রুবেল) ও হিরোন। এজাহারে বলা হয়েছে, ২৩ মার্চ বিকেলে নগরের গোলক মনি পার্কের সামনে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনতাই করেন ওই চারজন।আরও পড়ুনখুলনায় ক্লাব দখলমুক্ত নিয়ে সংঘর্ষ: বৈষম্যবিরোধী ৫ নেতার নামে মামলা২২ মার্চ ২০২৫
এর আগে শান্তিধাম মোড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ২১ মার্চ শেখ রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে বৈষম্যবিরোধীছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা কমিটির সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম (বাপ্পী), যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন, মহররম মাহীম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক শেখ রাফসান জানি ও কেন্দ্রীয় সদস্য রুমি রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল ৫০-৬০ জনকে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিধাম মোড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, অন্য মামলাটি হয়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনায়। দুটি মামলাই তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনখুলনায় ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টানানো হলো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের ব্যানার২৭ জানুয়ারি ২০২৫গত ২৭ জানুয়ারি খুলনা নগরের শান্তিধাম মোড়ে অবস্থিত ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাব দখল করে নেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। ওই ভবনে ব্যানার লাগিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তাঁরা। ১৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভবনটি দখলমুক্ত করে ‘ছাত্র-জনতা’। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার দাবি করা হয়।
শান্তিধাম মোড়ে অবস্থিত পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবটির কার্যক্রম যে ভবনে পরিচালনা করা হতো, সেটি মূলত গণপূর্তের একটি দ্বিতল ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। নিচতলায় ছিল আরও কিছু কার্যালয়। ২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র। এরপর ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কর্মকর্তারা।
ক্লাব ভবন দখল করে কার্যালয় করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন রাতেই গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। পরে ওই অব্যাহতি কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে দাবি করেন রাশেদুল ইসলাম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ঘটন য় র শ দ ল ইসল ম দখলম ক ত ছ নত ই নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
নাগরদোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, অভিযুক্ত স্বামী আ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় লাকী বেগম (২০) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিউদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লাকী বেগম একই উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনসুর আলীর মেয়ে। আটক স্বামী মো. সাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লী পাড়ার মো. মঙ্গলের ছেলে।
নিহত লাকীর মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে সাকিবের সাথে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত পনের দিন আগে সে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাঁটিয়ে ফেলে।
সোমবার সন্ধ্যার পরে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নাগরদোলায় উঠে।
শেফালী বেগমের অভিযোগ, নাগরদোলায় চড়াকালীন সাকিব তার মেয়ে লাকীকে গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাকীর বাবা মনসুর আলী বলেন, “সাকিব মাদকাসক্ত ছিলো। কথায় কথায় লাকীকে নির্যাতন করতো। আমাদের ঘরে এসেও মেরেছে। সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, “অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/টিপু