গাজীপুর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন, নেতৃত্বে ফজলুল হক ও ইশরাক আহমেদ
Published: 25th, March 2025 GMT
এ কে এম ফজলুল হককে (মিলন) আহ্বায়ক ও চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীকে সদস্যসচিব করে ৩৫ সদস্যের গাজীপুর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে নতুন এ কমিটি নিয়ে অনেক নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ত্যাগী নেতা-কর্মীরা নতুন কমিটিতে স্থান পাননি।
সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল হক এর আগেও দীর্ঘদিন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে রফিকুল ইসলাম ও শাহ রিয়াজুল হান্নানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন পীরজাদা মাওলানা এস এম রুহুল আমিন, হুমায়ুন মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, হেলাল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, আবু তাহের মুসুল্লি, খায়রুল আহসান, হোসেন আরমান, নুরুল ইসলাম সিকদার, মোয়াজ্জেম দেওয়ান, পারভেজ আহমেদ, খালেকুজ্জামান বাবলু, জয়নাল আবেদিন রিজভী, বিল্লাল ব্যাপারী, ইব্রাহিম প্রধান, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, এম আনোয়ার হোসেন, আবদুল জলিল মণ্ডল, মেহেরুল ইসলাম বকশী, আবদুল মান্নান দেওয়ান, ফ ম মমতাজুদ্দিন, আফজাল হোসেন ব্যাপারী, আমিনুল হক, আবুল প্রধান, আজগর হোসেন খান, আবুল মনসুর মণ্ডল, রাশেদুল হক, আনোয়ার ব্যাপারী, সাখোয়াত হোসেন (সেলিম) ও বিধান কান্ত বর্মণ।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি মেয়াদোত্তীর্ণ গাজীপুর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে তিন সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি ফজলুল হককে আহ্বায়ক, রফিকুল ইসলাম ও শাহ রিয়াজুল হান্নানকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীকে সদস্যসচিব করে গাজীপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর অনেকেই হতাশ হয়েছেন। এ কমিটিতে এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের বিগত দিনের রাজপথের আন্দোলনে কোনো দিন দেখা যায়নি। যাঁরা দীর্ঘদিন একের পর এক মামলা খেয়েছেন, জেল খেটেছেন, এমন অনেক নেতার নাম কমিটিতে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু তাঁদের নাম নেই। নতুন এ কমিটি দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনমুখী প্রচার–প্রচারণাসহ নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে রাখা সম্ভব হবে না।
এ সম্পর্কে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়েদুল আলম বলেন, এ কমিটি গঠনের জন্য এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একটি কমিটিতে সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে যাঁরা বাদ পড়েছেন, কেন্দ্র অবশ্যই তাঁদের বিষয়ে ভালো কোনো সিদ্ধান্ত নেবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম ব এনপ র কম ট ত ক কম ট এ কম ট সদস য আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যরাতে সাংবাদিককে অবরুদ্ধ, পরে পুলিশে হস্তান্তর
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে মধ্যরাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের এক সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তাঁকে পুলিশের হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টাউনহল মোড়–সংলগ্ন ফ্ল্যাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। একদল তরুণ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
জামাল হোসেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় পরিবেশক হিসেবেও রয়েছেন তিনি।
জামাল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জিহাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি জামাল হোসেনের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ জামাল হোসেনের কাছে এসে তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আয়োজিত একটি মানববন্ধনের ছবি দেখিয়ে সেখানে জামাল হোসেনের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
মো. জিহাদ আরও বলেন, জামাল হোসেন ওই তরুণদের পরিচয় জানতে চাইলে ইয়াছিন আরাফাত নামের তাঁদের একজন নিজেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির লোক দাবি করেন। এরপর জামাল হোসেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কারণে আমাদের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে।’ জামাল হোসেন তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে আরও কিছু তরুণ সেখানে জড়ো হয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জামাল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই তরুণকে ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘ভাই এটা সেন্ট্রাল বিষয়। আমি থানায় আছি। এখানে সবাই আছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খোন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক জামাল হোসেনকে কারা অবরুদ্ধ করেছেন কিংবা পুলিশে দিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। যাঁদের নাম শুনছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মামলা নেই। গতকাল মধ্যরাতে লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া তখন তাঁকে পুলিশ উদ্ধার না করলে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা ছিল। ওসি আরও বলেন, যাঁরা তাঁকে আটক করেছেন, তাঁরা আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।