২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটিতে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির প্রতীক জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
এবার ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে ইতোমধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধকে রংতুলির আঁচড়ে ও বাহারি রঙের ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। নানান রঙের আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হযেছে পুরো স্মৃতিসৌধ। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের চারপাশ।
এক মাস ধরে গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে দিনরাত কাজ করে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধকে ধুয়েমুছে ঝকঝকে করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধের মিনার, শহীদ বেদি থেকে মূল ফটক পর্যন্ত হেরিংবন্ড পথ রংতুলির আঁচড়ে সেজেছে। সবুজ চত্বরের মাঝে লাল, নীল, হলুদসহ বাহারি ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সৌধের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
দিবসটির প্রথম প্রহরে জাতির বীর সন্তানদের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তাদের দেওয়া হবে তিন বাহিনীর গার্ড অব অনার। এর পর সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দল, বিদেশি কূটনীতিক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ সামাজিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। 
গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, জাতীয় স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে স্মৃতিসৌধের ভেতরে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২৬ মার্চ ভোরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর পর সাধারণ জনগণের জন্য মূল ফটক খুলে দেওয়া হবে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রাথমিকভাবে সৌধ এলাকায় প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা হয়েছে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতা দিবস ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি চার স্তরের নিরাপত্তা রক্ষায় তিন সহস্রাধিক সদস্য নিরাপত্তা দিতে কাজ করছেন। পুরো এলাকায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
এদিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আগমন উপলক্ষে স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু। তিনি বলেন, এবার ভিন্ন আঙ্গিকে দলীয় হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে তারা উপস্থিত থাকবেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যরাতে সাংবাদিককে অবরুদ্ধ, পরে পুলিশে হস্তান্তর

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে মধ্যরাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের এক সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তাঁকে পুলিশের হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টাউনহল মোড়–সংলগ্ন ফ্ল্যাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। একদল তরুণ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

জামাল হোসেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় পরিবেশক হিসেবেও রয়েছেন তিনি।

জামাল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জিহাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি জামাল হোসেনের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ জামাল হোসেনের কাছে এসে তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আয়োজিত একটি মানববন্ধনের ছবি দেখিয়ে সেখানে জামাল হোসেনের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন।

মো. জিহাদ আরও বলেন, জামাল হোসেন ওই তরুণদের পরিচয় জানতে চাইলে ইয়াছিন আরাফাত নামের তাঁদের একজন নিজেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির লোক দাবি করেন। এরপর জামাল হোসেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কারণে আমাদের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে।’ জামাল হোসেন তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে আরও কিছু তরুণ সেখানে জড়ো হয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জামাল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই তরুণকে ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘ভাই এটা সেন্ট্রাল বিষয়। আমি থানায় আছি। এখানে সবাই আছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খোন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক জামাল হোসেনকে কারা অবরুদ্ধ করেছেন কিংবা পুলিশে দিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। যাঁদের নাম শুনছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মামলা নেই। গতকাল মধ্যরাতে লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া তখন তাঁকে পুলিশ উদ্ধার না করলে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা ছিল। ওসি আরও বলেন, যাঁরা তাঁকে আটক করেছেন, তাঁরা আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ