‘ছবি তুইল্যা লাভ নাই। কত সাংবাদিক আইয়া ছবি লইয়া গেল। কোনো ফায়দা অইলো না। সেতু সংস্কার অইলো কই?’ বস্তা মাথায় নিয়ে দেবে যাওয়া বেহাল সেতু পার হচ্ছিলেন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের দুলাল মিয়া। এ সময় হতাশা প্রকাশ করে কথাগুলো বলেন তিনি। নির্মাণের সাত দিনের মাথায় বন্যার স্রোতে দেবে যায় এটি। এরপর সংস্কার হয়নি ২০ বছরেও।
সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এটি উপজেলার চানপুর, হরিরামপুর, জিগারকান্দা, বালিচান্দা, পলাশকান্দা, দনারভিটা, মাইঝপাড়া, পুড়াপুটিয়া, উগলিরপাড়সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। দেবে যাওয়ায় বর্ষায় ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় তাদের। সেতুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি এলাকার বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পলাশকান্দা গ্রামের পাশখলা খালের ওপর নির্মাণ করা হয় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি। উভয় পাশে সংযোগ সড়কের সঙ্গে মাটি ভরাট না করায় কয়েকদিন পরই বন্যার পানির স্রোতে দেবে যায়। ফলে বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি এলাকার মানুষ আর ব্যবহার করতে পারেননি। মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য এটি নির্মিত হলেও বাস্তবে কোনো লাভ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে চলাচলের উপযোগী করতে সেতুর দু’পাশে বাঁশ-কাঠের সংযোগ সেতু নির্মাণ করে হেঁটে পার হচ্ছেন। দেবে যাওয়ার পর বারবার জনপ্রতিনিধিদের পালাবদল হলেও পরিবর্তন হয়নি অবস্থার। কর্তৃপক্ষও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। অথচ ধানসহ এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতসহ যানবাহন দিয়ে রোগী ও পণ্য পরিবহনের বিকল্প তেমন কোনো পথ নেই।
উভয় পাশে মাটি ভরাটের আগেই সেতু হেলে পড়ে জানিয়ে পলাশকান্দা গ্রামের জিয়াউর হুদা বলেন, জন্মের পর থেকেই তাদের খাল পাড়ি দিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুর বেহাল দশার কারণে সড়কের উন্নয়নেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এতে বর্ষাকালে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। হেলে পড়া সেতু দিয়ে হেঁটে যাতায়াত করা গেলেও যানবাহন চলাচল সম্ভব নয়। এতে উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে নিতে ৭ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়।
কুটরাকান্দা কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, এ সেতু দিয়ে গ্রামের মানুষ ছাড়াও পাঁচটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চলাচল করতে হয়। বন্যার সময় চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। দূর দিয়ে ঘুরে আসতে হয়। সেতুটি খুব দরকার। অনেককে বলেও কাজ হয়নি।
গত ২০ অক্টোবর থেকে সিংহেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তারেক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি এ সেতুর ব্যাপারে অবগত নই। কেউ যদি এসে আবেদন করেন, তাহলে দেখব।’ উপজেলা প্রকৌশলী মো.

ফয়সাল আহমেদের ভাষ্য, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। এ সেতুর ব্যাপারে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সকালেই পড়ুন আলোচিত ৫ খবর

ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ