‘শিশু ও মাকে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে’
Published: 24th, March 2025 GMT
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকারা ইউনিয়নে চারিতুপা সেতুর নির্মাণকাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। এতে এলাকার মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে। ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে সেতুটি। এ কাজ শেষ না হওয়ায় যাতায়াতে নৌকাই এখন একমাত্র ভরসা মানুষের।
জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন ও মেসার্স এম এ তাহের (জেভি) তিন বছর আগে ৭৫ মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। দীর্ঘদিনেও কাজটি সম্পন্ন না হওয়ায় নৌকায় যাতায়াতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচও বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও প্রসূতি মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে নদী পার হতে হচ্ছে।
সম্প্রতি বন্যার সময় এক মা তাঁর দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে নৌকায় নদী পার হতে গেলে শিশুটি পানিতে পড়ে যায়। এলাকার লোকজন পানিতে ঝাঁপ দিয়ে তাকে উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী ডাকাতিয়া নদীর চারিতুপা গ্রামের পাঁচ শতাধিক মানুষ ৩০ বছর আগে নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ বা কাঠের সেতু নির্মাণ করে যাতায়াত করতেন।
নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন গ্রামসহ চৌদ্দগ্রামের কনকাপৈত ইউনিয়নের মানুষ এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতেন। পন্নারা গ্রাম ও দৌড়করা বাজার দিয়ে চিওড়া বিশ্বরোড হয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সহজে যাতায়াত করা যেত। নৌকার মাঝি জসিম উদ্দিন বলেন, এখন প্রতিজন ১০ টাকা করে নৌকায় পারাপার করেন তিনি। দিনে ১৭ থেকে ১৮শ টাকা আয় হয়।
নৌকায় যাতায়াতকারী চারিতুপা গ্রামের রোকসানা ও কোহিনুর বেগমের ভাষ্য, ‘নৌকা দিয়ে ছোট শিশু এবং প্রসূতি মায়েদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বর্ষাকালে ঝুঁকি আরও বাড়ে।’ জানা গেছে, দুই উপজেলার বাসিন্দাদের যাতায়াতে এলজিইডি তিন বছর আগে ডাকাতিয়া নদীর ওপর ৭৫ মিটার দীর্ঘ চারিতুপা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় এখনও কাজ শেষ হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সাত মাস ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
চারিতুপা গ্রামের ছেরাজ মিয়া বলেন, এলাকার অসুস্থ রোগী, শিশু ও প্রসূতি মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। কোমলমতি শিশু ও শিক্ষার্থীদের মোড়েশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌকারা দারুসুন্নাত নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে কষ্ট করতে হচ্ছে। কাজ নিয়েও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম এ তাহেরের মালিক আবুল কাশেমের ভাষ্য, ‘সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। ওয়্যার (কেবল) পাচ্ছি না। দেশে কোথাও নেই। এজন্য কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে।’ উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত
চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ করার বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ত য় ত করত য ত য় ত কর শ ষ কর
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো ১ জনের মৃত্যু
গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ঘটনায় তাসলিম আক্তার (৩০) নামে একজন মারা গেছেন। বিস্ফোরণের এই ঘটনায় দগ্ধ ২ জন মারা গেলেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গতকাল সকাল ১০টার দিকে সীমা আক্তার (৩০) নামে একজন মারা যান।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ শাওন বিন রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, আগুনে তাসলিমা আক্তারের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো। এ ঘটনায় দগ্ধ পারভীন আক্তার (৩৫), তানজিলা (১০) ও আইয়ান নামে দেড় বছরের এক শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এর আগে ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচ জন দগ্ধ হন। রাত ১১টার দিকে তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, আগুনে পারভীনের ৩২ শতাংশ, তানজিলার ৯০ শতাংশ, আয়ানের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
তাদের আত্মীয় মফিজুল ইসলাম জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রান্না করার জন্য চুলা জ্বালালে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের আগুনে প্রায়ই দগ্ধ হচ্ছে মানুষ। তাদের অনেকে চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসছেন। কিন্তু সবাইকে বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানান চিকিৎসকরা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিসাবে, শুধু ২০২৪ সালে আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ হাজার ৮১১ জন রোগী জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৬৮০ জন রোগী। ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা যান ১০০২ জন। অর্থাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা/ইভা