লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ৮ উইকেটে ২০৯ রান তাড়া করতে নেমে ৬.৪ ওভারেই ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। ম্যাচটা এখান থেকে দিল্লি জিতবে, তা বোধ হয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির পাঁড় ভক্তও ভাবেননি। কিন্তু আশুতোষ শর্মা ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। সেই অন্য কিছুটা আসলে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এগিয়ে চলার ‘ম্যাজিক।’
আরও পড়ুন‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব২৬ মিনিট আগেএক প্রান্তে তাঁর খুনে মেজাজের ব্যাটিংয়ে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দিল্লি শেষ উইকেট জুটিতে ৬ বলে ৬ রানের সমীকরণের সামনে এসে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে মোহিত শর্মা প্রান্ত বদলের পর তৃতীয় বলেই ছক্কা মেরে দিল্লিকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন আশুতোষ। পাঞ্জাব কিংসের হয়ে গত মৌসুমে দারুণ সব স্ট্রোক খেলা এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার এবার দিল্লির হয়ে নিজের প্রথম ম্যাচেই বিশাখাপট্টনমে রাজাশেখরা রেড্ডি স্টেডিয়ামে আলো জ্বাললেন। দ্রুত উইকেট পড়ায় শুরুতে ১৯ বলে ১৯ রান করা আশুতোষ দলকে জিতিয়ে অপরাজিত ছিলেন ৩১ বলে ৬৬ রানে। ইনিংসটিতে রয়েছে ৫ ছক্কা ও ৫ চারের মার।
দিল্লির ১ উইকেটের এই জয়ে শুরুটা ছিল একদমই অন্য রকম। লক্ষ্ণৌ পেসার শার্দূল ঠাকুরের করা প্রথম ওভারেই ফেরেন ওপেনার জ্যাক ফ্রেজার–ম্যাকগার্ক ও তিনে নামা অভিষেক পোড়েল। দ্বিতীয় ওভারে সামির রিজভি এবং তারপর ষষ্ঠ ওভারে অক্ষর প্যাটেলও ফিরে গেলে ভাবা হয়েছিল, দিল্লির হার স্রেফ সময়ের ব্যাপার। ১৮ বলে ২৯ রান করা ফাফ ডু প্লেসিও বিপদ বাড়িয়ে আউট হন পরের ওভারে। আশুতোষ ঠিক এরপরই পাল্টা লড়াই শুরু করেন।
আরও পড়ুনতামিম ভেবেছিলেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, তারপর যা ঘটল...৭ ঘণ্টা আগে
ক্রিস্তান স্টাবসকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৩৫ বলে ৪৮ রানের জুটি। ২২ বলে ৩৪ রান করা স্টাবস আউট হওয়ার পর সপ্তম উইকেটে ভিপরাজ নিগমকে নিয়ে গড়েন ২২ বলে ৫৫ রানের জুটি। ১৭তম ওভারে ভিপরাজ আউট হওয়ার পর শুধু আশুতোষই ছিলেন দিল্লির জয়ের আশায় একমাত্র ভরসা। সেখান থেকে বলতে গেলে একাই লড়েছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ৬.৪ ওভারে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসেবে নেমে সমীকরণ যখন ১৭ বলে ৩৯ রানের, হাতে মাত্র ২ উইকেট; আশুতোষ এখান থেকে ১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে চার–ছক্কায় তোলেন ১৬ রান। পরের ওভারে ওঠা ১৬ রানের মধ্যে ১২ রানই আশুতোষের।
পুরান ও মার্শের জুটিতে বড় সংগ্রহ পায় লক্ষ্ণৌউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।
গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না।
তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে।