ঈদ এলো রে ঈদ
নকুল শর্ম্মা
ঈদুল ফিতর এলো আবার
একটি বছর পরে,
খুশির জোয়ার বইছে দেখ
সবার ঘরে ঘরে।
সকল প্রাণে প্রাণের মিলন
বিভেদ ব্যথা ভুলে,
জমবে কথার মজার আসর
মনের দুয়ার খুলে।
মাংস পোলাও ফিরনি পায়েস
রান্না হবে কত,
অভুক্ত কেউ রয় না যেন
গরিব দুঃখী যত।
মানবতার ঈদের খুশি
হয়ে উঠুক পূর্ণ,
লোভ লালসা হিংসা বৃত্তির
ঘটুক দর্পচূর্ণ।
শুকতারা
ওলি মুন্সী
মায়ের আঁচল ধরছে যেমন
ধরছে হাতে বাবার
সাহ্রিতে ডেকে আমায়
খেতে দিও খাবার।
নাইট ব্লুমিং, জুঁই, জেসমিন
রাত্রে যখন ফোটে
রোজা রাখার জন্য খুকি
তেমনি করে ওঠে।
সুবেহ সাদিক হওয়ার আগে
ভোরের মোরগ ডাকে
খোকাখুকির ডাক পড়ে যায়
সকল পাড়ার বাঁকে।
চাঁদ উঠেছে চাঁদ উঠেছে
সকল দেশের তরে
রোজায় সবাই শুকতারা হই
ডুববো ঈদের পরে।
অমিল
ফাহাদ আল উমরান
একদিন সে অভিমানী কণ্ঠে
এক প্রকার বিরক্ত হয়েই বলেছিল
‘তোমার সঙ্গে আমার বড্ড অমিল,
আমার ভাবনাগুলো তোমার নিকট
আপন মনে হলেও
তোমার অনুভূতিগুলো কভু
একান্তই নিজের বলে মনে হয় না।’
আমি তার নিরেট সত্য কথাগুলো
এক প্রকার নির্লজ্জের মতোই
হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলাম।
আমার হৃদয়ে সে সম্রাজ্ঞী বেশে থাকলেও
তার ভুবন মাঝে আমি যে অস্তিত্বহীন
তা স্পষ্টতই বুঝতে পেরেছিলাম তার
অবজ্ঞা মিশ্রিত বাঁকা চাহনিতে।
অথচ আমাকে নিয়ে তার
অজানা ছিল না কিছুই,
আমি যে সত্তাকে বিসর্জন দিয়ে
বিষাদের দুর্দিনেও রঙিন হয়ে
তার পাশেই ছিলাম নিরুপায় নিস্তব্ধ
প্রেমিকের বেশে, তা সে বুঝেছিল
বহুবার; আমার বহু উপাখ্যানে।
তবু বেলা শেষে আমায় প্রত্যাখ্যান
করেছিল অমিল দোষারোপে।
বিবর্ণ নগরী
রোকশানা ছায়াময়ী
হে বিধ্বস্ত পথিক খুঁজে দেখ আমায়
ক্লান্ত নগরীর একান্ত নিস্তব্ধতায়।
বীভৎস অন্ধকারে নিমগ্ন লাল বর্ণ চাদরে
যেখানে রক্তরা খেলা করে পিচঢালা প্রান্তরে।
যেখানে স্বপ্নরা খুন হয় রাতের নীলাভ আঁধারে
যেখানে উর্বশী মগজ তিক্ত বিষের পেয়ালায়
মেতে ওঠে বেসামাল অপার রঙিন খেলায়।
সেখানে বিরাজমান আমি– ক্লান্তির সজ্জায়;
চলমান কালের অশান্ত বলিয়ান বলি রেখায়।
বিবর্ণ মায়ার কলতান ডাক দিয়ে যায়–
এসো পথিক, আমার নগরীর শেষ কোঠায়।
যেখানে তোমায় নিয়ে আমার বিলাস প্রশান্তির সমাপ্তি।
পথিক এসো তুমি,
হবে এই বিবর্ণ নগরীর একটি রাতে সাক্ষী।
ভাঁটফুলের ঘ্রাণ
শারমিন নাহার ঝর্ণা
এই নির্লিপ্ত চোখ দূরে হারিয়ে
যায় শুভ্র অম্বরে
মনটা আনমনে ছুটে যায় সবুজ গাঁয়ের
আঁকাবাঁকা ধুলোমাখা পথ ধরে,
বুনো ভাঁটফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা মন
শীতল বৃষ্টিতে করতে চায় স্নান।
কী অপরূপ আহা ভাঁটফুলের নব যৌবন
গাঁয়ের উচ্ছিষ্ট পথ করেছে আলিঙ্গন।
বুনো ভাঁটফুলের ঘ্রাণ নিতে
কেউ তো আসে না গাঁয়ে?
দুমড়েমুচড়ে ক্ষতবিক্ষত
হয় অজ্ঞ লোকের পায়ে।
আর্তচিৎকার
এস ডি সুব্রত
ঘুমে যখন অনিশ্চিত যাত্রার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা
রাতের অন্ধকারে মানুষের আর্তচিৎকার
দুঃস্বপ্নের রাত যেন ফিরে আসে বারবার
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের লাশের উপত্যকায়
ধ্বংসস্তূপে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা
আবারও নেতানিয়াহুর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ
ঘুমন্ত নারী, শিশু ও নিরপরাধ মানুষ খুন
বিশ্ব বিবেক নির্বিকার কোন দুরভিসন্ধিতে,
শান্তির সবক দেওয়া মোড়ল অশান্তির কারিগর
আরব দেশগুলোর ভূমিকাও নয় উল্লেখযোগ্য
নিষ্পাপ শিশু নারী নির্মমতার চরম শিকার
গাজার ধ্বংসাবশেষে পৌঁছায় না বাণী বিবেকের
জাতিসংঘ ওআইসি যেন ঠুঁটো জগন্নাথ
দুঃখ প্রকাশ করেই দায় সেরে নিতে চায়
জাগো বিশ্ব জাগো অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে
দাঁড়াও মানবতার পক্ষে ফিলিস্তিনের পাশে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্মৃতিসৌধে লাল পতাকা হাতে আ.লীগের পক্ষে মিছিল, আটক ৩
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাল পতাকা হাতে একদল লোক আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিল করেছেন। এসময় উপস্থিত জনতা তাদের ধাওয়া দেয় এবং কয়েক জনকে মারধর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে।
বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ফিরে যাওয়ার সময় মিছিল করেন তারা।
হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবির জানান, আনুমানিক সকাল ১১টার সময় ৫/৬ জন জাতীয় স্মৃতি সৌধে উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেন। এমন অভিযোগে তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশ আটক করে।
আরো পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বের লড়াই চলমান: বজলুর রশীদ
শ্রদ্ধার ফুলে সিক্ত স্মৃতিসৌধের বেদি
আটককৃতরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা (৪৭), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (৫০), আশুলিয়ার কলমা এলাকার মো. সোহেল পারভেজ (৪১)।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, লাল পতাকা হাতে অন্তত ৫০ জন লোক সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া দিয়ে কয়েকজনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে পুলিশ এসে তিনজনকে আটক করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায়।
আটকের পর পুলিশের গাড়িতে অবস্থানকালে আটককৃতদের একজন বলেন, “আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। জাতীয় স্মৃতিসৌধ মুক্তিযুদ্ধের অবদান। তাই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলাম।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ