জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলা হয়েছে।

হান্নান মাসউদের নিজ জেলা নোয়াখালীর হাতিয়ায় জাহাজমারা বাজারে সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার ওপর হামলা হয়। এতে করে তিনিসহ পার্টির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

এ দিন রাত সোয়া ১০টার দিকে হান্নান মাসউদের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

হবিগঞ্জে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা

বরিশালে পাওনা টাকার জেরে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম

পোস্টে অভিযোগ করা হয়, বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে (আব্দুল হান্নান মাসউদ) মেরে ফেলার উদ্দেশ্য অতর্কিত হামলা চালায়।

হান্নান মাসউদের প্রোফাইলে হাতিয়ার ঘটনার পর ধারাবাহিক পোস্ট দেওয়া হয়েছে। ছবি ও ভিডিও পোস্টগুলোতে দেখা গেছে, হামলার প্রতিবাদে হান্নান মাসউদ তার সহযোদ্ধাদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

একটি পোস্টে লেখা হয়, হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের পথসভায় আব্দুল হান্নান মাসউদের পথসভায় বাধা দেয় একদল নব্য ফ্যাসিস্ট। প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি।

হান্নান মাসউদের প্রতিনিধি হিসেবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ ইউছুফ। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (২২ মার্চ) এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ এলাকার দুস্থ মানুষের খোঁজ-খবর নিতে হাতিয়ায় আসেন। সোমবার বিকালে তিনি উপজেলার জাহাজমারা বাজারে যান। ইফতার শেষে সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাজারে একটি পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন। 

বক্তব্য চলার সময় বিএনপি নামধারী একদল লোক বাজারের পশ্চিম দিক থেকে একটি মিছিল নিয়ে হান্নানের পথসভায় অতর্কিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ইউছুফ।

হান্নানের এই প্রতিনিধি আরো অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার ওপর হামলার চেষ্টা করলে উপস্থিত জনতা তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। 

এই ঘটনার পর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবিতে হান্নান মাসউদের নেতৃত্বে জাহাজমারা বাজারেই এনসিপির নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

ঢাকা/সুকান্ত/রাসেল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ন ন ন ম সউদ র পথসভ য়

এছাড়াও পড়ুন:

হামরা কাজ করিবা পারিলে ভোট দিবেন, নাহিলে দিবেননি : সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। এখানে আমি উত্তরাঞ্চলের ৩২টি জেলার মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পঞ্চগড়ের ছেলে হিসেবে আপনাদের সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই। আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় কাজ শুরু করেছি। আমরা খুব শিগগিরই আপনাদের দ্বারে দ্বারে যাব।’

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের বিজয় চত্বরে আজ সোমবার দুপুরে এক পথসভায় সারজিস আলম এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে করে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হন।

দেবীগঞ্জের ফার্মগেট মোড়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা–কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে সারজিস আলমকে স্বাগত জানান। এরপর তিনি শহরের বিজয় চত্বরে পথসভায় বক্তব্য দেন। পরে তিনি শতাধিক গাড়িবহর (কার-মাইক্রোবাস) নিয়ে বোদা উপজেলার দিকে রওনা হন। এই গাড়িবহর নিয়ে তিনি পাঁচ উপজেলায় পথসভা করবেন বলে জানিয়েছেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েই শুধু নিজেদের উপস্থাপন করতে চাই না। আমরা কাজ করে দেখাতে চাই এবং সেই কাজের সুযোগ আপনাদের কাছে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী বাংলাদেশে যে নতুন বাংলাদেশ আসছে, এখানে দলের নাম দেখে কিংবা কোনো মার্কা দেখে কেউ আর ভোট দেবেন না। কোন লোকটা কেমন, কে কেমন কাজ করছেন, কার কথার সঙ্গে কাজের মিল কেমন, এসব দেখে আগামীর বাংলাদেশে মানুষ বিভিন্ন মার্কায় এবং দলে ভোট দেবেন।’

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের অনেকের সন্তানের মতো। অনেকের ভাইয়ের মতো, অনেকের নাতির মতো। আমরা ভুল করলে আপনারা শুধরে দেবেন। আমরা আপনাদের সেই কথাগুলো শুনতে সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু আপনারা এটুকু নিশ্চিত করবেন যে আমরা এখন থেকে আর কোনো কোনো দলের, কোনো মার্কার অন্ধভক্ত হব না। যদি আপনি অন্ধভক্ত হন, তাহলে আপনার মূল্য আর কেউ দেবে না। আপনারা মনে রাখবেন, আপনাদের সন্তানেরা এখন তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। আপনাদের সন্তনেরা এখন যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সব সময় প্রস্তুত।’  

একপর্যায়ে স্থানীয় ভাষায় সারজিস আলম বলেন, ‘হামার দেবীগঞ্জের যে লোকলা আছেন তুমার (আপনাদের) সাথে খুব দ্রুত আমাদের দেখা হবে, দেবীগঞ্জের প্রত্যেকটি গ্রামে, ইউনিয়নে, রাস্তাঘাটে। হামরা হামার (আমাদের) মার্কা লেহেনে (নিয়ে) দলের নাম লেহেনে তুমার লগত (আপনাদের কাছে) ভোট চাহিবা অসিমো (চাইতে আসবো)। হামরা যদি কাজ করিবা পারি, যদি তুমার কথা রাখিবা পারি, তাহিলে ভোট দিবেন, নাহিলে দিবেননি। অন্যলার মতো হামরা কহিমোনি যে, হামাক দেন। এই কাথা কহিমোনি। যদি হামরা কাজ করিবা পারি, তুমার কাথা শুনি, ভোট ছাড়াও তুমার সামনোত যাই তাহিলে ভোট দিবেন।’  

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘এত দিন ধরে সাধারণ মানুষকে নেতারা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছে। তারা খালি ভোটের আগের দিন ভোট চাইতে যায় আর হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দেয়। আর ভোটটা শেষ হওয়ার পর তার কাছে একটা একটা পিয়ন পদ, একাট ভিজিডি কার্ড, একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড যে কাজেই যান না কেন, কাজ হওয়ার আগেই তারা টাকার জন্য হাত পেতে বসে থাকে। এই নতুন বাংলাদেশে এগুলো আর হতে দেওয়া যাবে না। যে যেই জায়গা থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ না করে সাধারণ মানুষের কাছে লুটপাট করবে, তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আর এই বাংলাদেশে মেনে নেওয়া যাবে না। একটা জিনিস মনে রাখবেন, পাঁচ বছরে এক দিন যদি আপনি তার কাছে কিছু নেন, বাকি পাঁচ বছর সে আপনার রক্ত চুষে খাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হান্নান মাসউদের ওপর হামলা, রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এনসিপির বিক্ষোভ
  • পথসভায় বাধা, হামলায় আহত হান্নান মাসউদ
  • হাতিয়ায় হান্নান মাসউদের পথসভায় হামলা
  • হাতিয়ায় হান্নান মাসউদের পথসভায় হামলার অভিযোগ
  • ব্যান্ড পার্টি ও শতাধিক গাড়ির বহরে শোডাউন সারজিসের, উঠছে প্রশ্ন-সমালোচনা
  • নোয়াখালীতে এনসিপির নেতা হান্নান মাসউদের পথসভায় হামলা, আহত ৫
  • উড়োজাহাজ থেকে নেমে শতাধিক গাড়িসহ ‘শোডাউন’ দিয়ে নিজ এলাকায় সারজিস আলম
  • আগামীর বাংলাদেশে মার্কা দেখে কেউ ভোট দেবে না: সারজিস
  • হামরা কাজ করিবা পারিলে ভোট দিবেন, নাহিলে দিবেননি : সারজিস আলম