ময়মনসিংহের ভালুকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় তিন একর বনভূমি পুড়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন লাগার পর বন বিভাগের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন লাগার সোয়া তিন ঘণ্টা পর রাত সোয়া নয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নে উথুরা রেঞ্জের আঙ্গারগারা বিটের অধীন চানপুর এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলটির গজারি ও সেগুনগাছের নিচে বেতবাগান ছিল। শুকনা পাতার স্তূপে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন লাগার খবর পান বন বিভাগের কর্মীরা। পরে নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। বেতগাছের ভেতর দিয়ে শুকনা পাতায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।

রাত আটটার দিকে ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে দুটি ইউনিট নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করেন। রাত সোয়া নয়টায় বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানান ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, কী কারণে আগুন লেগেছে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।

বন বিভাগের আঙ্গারগারা বিটের কর্মকর্তা মো.

মাজহারুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ইফতারের আগমুহূর্তে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুনের খবর পান। আগুন লাগা স্থানটিতে গজারি ও সেগুনবাগান ছিল। নিচে বেতবাগান ও ছোট ছোট অন্য গাছও ছিল। শুকনা পাতার স্তর ছিল এলাকাটিতে। নেভানোর চেষ্টা করেও বেতের কাঁটার কারণে ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি, দ্রুত আগুনও ছড়াতে থাকে।

মাজহারুল হক আরও বলেন, কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে মনে হয়েছে। এ ছাড়া আগুন লাগার কোনো কারণ নেই। বনের ক্ষতি করার জন্যই আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে অন্তত তিন একর বনভূমির বেতবাগান ও ছোট গাছ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র কর ম খবর প

এছাড়াও পড়ুন:

এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’

গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।

২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।

অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।

অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ