বগুড়ায় দুই তরুণকে তুলে নিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে হাইওয়ে পুলিশ। গত রোববার রাত ৩টার দিকে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার পুলিশ বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বীরগ্রাম এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালককেও গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে মুক্তিপণের নগদ দুই লাখ টাকা, ডিবির পোশাক, পরিচয়পত্র ও একটি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার এসআই শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী এবং তাদের মাইক্রোবাসের চালক মেহেদী হাসান। 

পুলিশ সূত্র জানায়, আরএমপির গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্য রোববার রাতে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আসেন। তারা জুয়া খেলার অভিযোগে চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘরকান্দি গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে রাব্বী হাসান ও একই এলাকার শেরবান খানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে গাড়ি থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দরকষাকষি করে দুই তরুণের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।

বগুড়া জেলা পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে শেরপুর ও শাজাহানপুর থানা এলাকায় ডিবির মাইক্রোবাসটি থামানোর চেষ্টা করে। না পেরে তারা কুন্দারহাট হাইওয়ে থানাকে বিষয়টি জানায়। পরে হাইওয়ে পুলিশের এসআই মাসুদ রানার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় গাড়িটি আটক করা হয়। এ সময় ডিবির পাঁচ সদস্য তাদের পরিচয় দিয়ে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেন। হাইওয়ে পুলিশ আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়, ওই পাঁচজন কাউকে না জানিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে বগুড়ায় গিয়েছিলেন। এর পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার ডিবির পাঁচ সদস্যকে ওই রাতেই কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা হয়ে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সোমবার তাদের নেওয়া হয় ধুনট থানায়। সেখানে অপহরণের শিকার রাব্বি হাসানের বাবা সেলিম হোসেন তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা করেন। ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।

আটক পাঁচ ডিবি সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করে আরএমপি মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন জানান, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ গ র প ত র কর চ সদস য হ ইওয়

এছাড়াও পড়ুন:

ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া হয়। ৫ ঘণ্টা পর ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ভৈরব উপজেলার মানিকদী নতুন বাজারে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুদিদোকানে ব্যবসা করেন। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জ্বালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাঁকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর মারধর করা হয়েছে, টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমির হোসেনের কাছে মাদক আছে—এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন তাঁর কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে, আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভবনের পাশ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
  • পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতা ‘ছিনতাই’, গ্রেপ্তার ৪
  • ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত
  • শ্রমিক দল নেতার হামলায় ৩ পুলিশ আহত, গ্রেপ্তার ২