জাহাঙ্গীরনগর-সংলগ্ন মহাসড়কে চলন্ত বাসে ছিনতাই, চালকসহ আটক ৩
Published: 24th, March 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ফটক এবং সিঅ্যান্ডবি এলাকার মাঝামাঝি স্থানে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শুভযাত্রা নামে একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একজন ছুরিকাহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাসটির চালকসহ তিনজনকে আটক করে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আটক তিনজন হলেন শুভযাত্রা বাসের চালক আলী হোসেন, তাঁর সহকারী মো.
প্রত্যক্ষদর্শী বাসের কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শুভযাত্রা বাসটি সাভারের সিটি সেন্টার এলাকায় এলে চারজন যাত্রী বাসে ওঠেন। এরপর বাসটি সিঅ্যান্ডবি এলাকায় এলে তাঁরা বাসের লাইট বন্ধ করে দিয়ে যাত্রী রবিউল হায়দারকে ছুরি ধরে তাঁর কাছে যত টাকা আছে তা দিতে বলেন। রবিউল টাকা বের করতে করতে তাঁরা পকেট থেকে টাকা ছিনিয়ে নেন এবং হাতে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় বাসের আরও কয়েকজনের কাছ থেকে মুঠোফোন, টাকা ও বাসে থাকা দুটি নতুন টেলিভিশন সেট ছিনিয়ে নিয়ে তাঁরা বাস থেকে নেমে যান। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পৌঁছালে বাসে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী ও যাত্রীরা বাসটি আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে যান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাসের চালক ও তাঁর দুই সহকারীকে আটক করে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ছুরিকাহত রবিউল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সাভারের গেণ্ডা এলাকা থেকে বাসে উঠি। ছিনতাইকারীরা বাসে উঠে সরাসরি আমার কাছে এসে ছুরি ধরে বলে, যা টাকা আছে দে। আমি টাকা বের করতে করতে তারা আমার পকেটে হাত দিয়ে ১৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আমার হাতের বাহুতে ছুরি মারে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছি।’
আরেক ভুক্তভোগী মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের একজন আমার গলায় ছুরি ধরে বলে মোবাইল দিয়ে দিতে। আমি ভয়ে ভয়ে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারা আরও দুজনের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। এ ছাড়া বাসে থাকা দুটি টেলিভিশন সেটও নিয়ে গেছে।’
বাসে থাকা যাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের একটা প্রোগ্রাম শেষে আমরা সাভারের মডেল মসজিদের সামনে থেকে বাসে উঠি। বাসটি সিটি সেন্টার এলাকায় এলে চারজন বাসে ওঠে। বাসে থাকা একজন মেয়ের পায়ে পাড়া দিয়ে ঝামেলা করে উত্তেজনা তৈরি করে। পরে বাসটি সিঅ্যান্ডবি এলাকায় পৌঁছালে তারা বাসের হেলপারের গলায় ছুরি ধরে এবং আমার পাশে থাকা এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমার ধারণা, তারা আগে থেকেই জানত, আমার পাশে যিনি বসা তার কাছে টাকা আছে।’
তানজিল হায়দার আরও বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা তিন মিনিটের মধ্যে ছিনতাই করে বাস থেকে নেমে যায়। আমরা বাস থেকে নেমে তাদের ধাওয়া দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ছিনতাইকারীরা বাস থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বাস ড্রাইভার বাসটি ছেড়ে দেয়। আমার ধারণা বাসের হেলপারের গলায় তারা যে ছুরি ধরে ছিল, সেটা নাটক হতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীরা টাকা ও মোবাইল নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানা-পুলিশ বাসের চালক, তাঁর দুই সহকারীকে আটক করেছে। তদন্ত করে দ্রুত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হলো।
নিহত ব্যক্তির নাম জসিম উদ্দিন ব্যাপারী (৩৮)। তিনি রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের ফজলুল করিম ব্যাপারীর ছেলে। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ছিলেন এবং উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মো. ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
৭ এপ্রিল বিএনপির দুটি পক্ষ উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট ও চরবংশী গ্রামে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। এর মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাইজুদ্দিন দেওয়ান নামের একজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় জসিম উদ্দিন ব্যাপারীসহ তিনজনকে। এর মধ্যে জসিমের মৃত্যু হয়েছে। নিহত দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের জখম ছিল।
জসিম উদ্দিন ব্যাপারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছিল। সংঘর্ষে এ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হলো। ওসি আরও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।