ভুট্টাখেতে কাঁদছিল নবজাতক, উদ্ধারের পর চলছে চিকিৎসা
Published: 24th, March 2025 GMT
চারদিকেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন ফসলের খেত। এমন নির্জনতায় হঠাৎ ভেসে আসে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ। শুনতে পেয়ে নিজ মরিচখেতের পরিচর্যার কাজ থামান এক কৃষক। পরে শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে এক নবজাতককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পূর্ব মহেশালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধারের পরপর শিশুটিকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব মহেশালী গ্রামের একটি মরিচখেত পরিচর্যা করছিলেন ওই কৃষক। হঠাৎ পাশের ভুট্টাখেত থেকে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরে কয়েকজনকে ডেকে শব্দের উৎসের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় এক নবজাতককে দেখতে পান। আশপাশে খোঁজ নিয়েও শিশুটির কোনো অভিভাবককে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মুসতাককে জানানো হয়। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলামকে জানালে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এরপর নবজাতকটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মুসতাক বলেন, ‘উদ্ধার করা নবজাতকটি মেয়ে। আমরা তার অভিভাবক খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
নবজাতকটি এখন সুস্থ আছে বলে জানান ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রকিবুল আলম। আজ দুপুরের দিকে তিনি বলেন, উদ্ধারের পর শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরপরও তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শিশুটির বয়স এক-দুই দিন হতে পারে।
ইউএনও খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন শিশুটিকে সুস্থ রাখার বিষয়টি আমরা ভাবছি। কেউ শিশুটির অভিভাবকত্ব দাবি করলে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সেটি না হলে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিঃসন্তান কোনো দম্পতি শিশুটি লালনপালনের ভার নিতে চাইলে তাঁদের দত্তক দেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, হল খুলে না দেওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মার্চ ফর কুয়েট’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলেও উল্লেখ করেছেন।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
দাবিতে অনড় কুয়েট শিক্ষার্থীরা, সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ সিন্ডিকেট সভার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি হামলার ঘটনায় ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮ তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সভায় উপস্থাপন করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।”
তিসি আরো বলেন, “সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু করার এবং সব আবাসিক হলসমূহ আগামী ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েজন শিক্ষার্থী সোমবার রাতে জানান, তারা সবাই সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানার জন্য প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষা করেন। তারা আশাবাদী ছিলেন, সিন্ডিকেট মেম্বাররা মিটিং শেষে তাদের আপডেট জানাবেন। মিটিং শেষ হলে তারা আপডেট জানতে চান শিক্ষকদের কাছে। কিন্তু, তারা কোনো সাড়া পাননি। এ কারণে পূর্বঘষিত কর্মসূচি অনুসারে হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত হল খোলা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও জানান তারা।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ