বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামির জামিন চাওয়ায় বাদীকে হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। পাঁচ ঘণ্টা হাজতবাসের পর মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান মামলার বাদী, হাটহাজারী থানার চন্দ্রপুর গ্রামের তসলিমা বেগম। গত বছরের ৩১ আগস্ট হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়। গত ৫ আগস্ট তাঁর স্বামী জামাল মোল্লাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

আদালত সূত্র জানায়, তসলিমার মামলায় আবুল মনসুর ও হাসান নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। আবুল মনসুর হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হামলারও শিকার হয় পুলিশ। সোমবার তাদের জামিন শুনানির সময় আসামিদের জামিনে আপত্তি নেই বলে জানান বাদী তসলিমা বেগম। এর আগে আবুল মনসুর ও হাসানসহ আরও ৩১ আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে আদালতে হলফনামা জমা দেন তিনি।

শুনানির সময় বিচারক বাদীর কাছে জানতে চান, মামলা করলেন কেন? আবার ৩১ আসামির নামে হলফনামা দিলেন কেন? এখন জানালেন জামিনে আপত্তি নেই। বাদী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে বিচারক বাদীকে হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা হাজতবাসের পর ভবিষ্যতে আর এই ধরনের কাজ করবেন না বলে আদালতে লিখিত মুচলেকা দেন বাদী। পরে আদালত তাকে ছেড়ে দেন।

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, হাটহাজারীর একটি মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবুল মনসুর ও হাসানের জামিনের আবেদন করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। কয়েক মাস আগে এই দুইজনসহ ৩১ জন আসামি ঘটনায় জড়িত নন দাবি করে হলফনামা দেন বাদী তসলিমা আক্তার। পরে বিচারক বাদীকে হাজতে পাঠানো আদেশ দেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ল গ তসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক আজ

দেড় দশক পর আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক। এতে অবিভক্ত পাকিস্তানের সম্পদ থেকে ন্যায্য হিস্যা হিসেবে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করবে বাংলাদেশ।

তহবিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতের হিস্যা হিসেবে এই অর্থ বাংলাদেশ পাবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশ এবং আমনা বালুচ পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়সহ ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে। 

সর্বশেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে।

বৈঠক উপলক্ষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ গতকাল বুধবার ঢাকায় আসেন। আজ সকালে তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন। মধ্যাহ্নভোজের পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং এর পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। গতকাল আমনা বালুচ ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত দেশটির ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময়ের হিস্যা অনুসারে  ৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার পাবে। এর একটি বড় অংশ ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পাঠানো হয়েছিল। জানা গেছে, ২০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখা থেকে এই অর্থ লাহোর শাখায় সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পাকিস্তান ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসা সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সঞ্চয়পত্রের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। 

পরিকল্পনা কমিশনের মতে, সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা ৯০ লাখ টাকা আটকে রেখেছিল পাকিস্তান সরকার। যুদ্ধকালে রূপালী ব্যাংকের করাচি শাখায় রাখা ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকাও ফেরত আসেনি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থের অর্ধেক ৪৩৫ কোটি রুপির দাবিদার বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ব্যাংকিং বিভাগ থেকেই বাংলাদেশ পাবে প্রায় ৬০ কোটি রুপি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ