মাদারীপুরে শ্রমিক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 24th, March 2025 GMT
মাদারীপুরে পৌর শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার নতুন মাদারীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল ওই এলাকার মোফাজ্জেল মুন্সির ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল সন্দেহভাজন যুবলীগ থেকে শ্রমিক দলে যোগ দেওয়া লিটন হাওলাদারকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
সূত্র জানায়, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদারের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা লিটন হাওলাদারকে সম্প্রতি মাদারীপুর পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি করা হয়। এ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সির সঙ্গে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় লিটন হাওলাদারের। লিটন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি চাঁদাবাজি, লুটপাট, হত্যা, সংঘর্ষসহ একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় এ কমিটির বিরোধিতা করেন শাকিল মুন্সি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলায় লিটনের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে। তাঁর মামলার জামিন শুনানি ছিল রোববার। সমর্থকদের ধারণা ছিল, মামলায় কারাবন্দি আক্তার হাওলাদার জামিনে মুক্তি পাবেন। তাঁকে বরণ করে নিতে তারা আদালত চত্বরেও জড়ো হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে রোববার দুপুরে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষ ঘটে। বিকেলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। রাত ৯টার দিকে লিটন সমর্থক উপজেলা শ্রমিক দলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাকিল।
এ ঘটনায় রোববার রাতে শাকিলের লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁর সমর্থকরা। সোমবার বিকেলে জানাজা শেষে তারা কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সেলিম মুন্সি ও হায়দার হাওলাদারের ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নিহত শাকিলের পরিবারের সদস্যরা জানান, লিটন হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হাওলাদারসহ বেশ কয়েকজন হামলা করে শাকিলকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিলে সেখানেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শহরে বিক্ষোভ করেন বিএনপি সমর্থকরা।
মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বলেন, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদার। তাঁর এক ভাই জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। আরেক ভাই লিটন যুবলীগ নেতা। তারাই শাকিলকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত হোসেন বলেন, শাকিলকে আওয়ামী লীগের দোসররা খুন করেছে। এ হত্যার সঙ্গে লিটন হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, আলাউদ্দিন নপ্তী ও আকমল হোসেন খান জড়িত।
নিহত শাকিলের ভাই মাদারীপুর পৌর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হাসান মুন্সি বলেন, ‘আমার ভাই শাকিলকে প্রতিপক্ষ লিটন, আল আমিন, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প য় হত য এ ঘটন য় য বল গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
নাগরদোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, অভিযুক্ত স্বামী আ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় লাকী বেগম (২০) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিউদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লাকী বেগম একই উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনসুর আলীর মেয়ে। আটক স্বামী মো. সাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লী পাড়ার মো. মঙ্গলের ছেলে।
নিহত লাকীর মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে সাকিবের সাথে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত পনের দিন আগে সে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাঁটিয়ে ফেলে।
সোমবার সন্ধ্যার পরে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নাগরদোলায় উঠে।
শেফালী বেগমের অভিযোগ, নাগরদোলায় চড়াকালীন সাকিব তার মেয়ে লাকীকে গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাকীর বাবা মনসুর আলী বলেন, “সাকিব মাদকাসক্ত ছিলো। কথায় কথায় লাকীকে নির্যাতন করতো। আমাদের ঘরে এসেও মেরেছে। সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, “অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/টিপু