হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক
Published: 24th, March 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে সোমবার সকালে ঠিকঠাক বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের বাইরে খুনসুটি শেষে শরীর গরম করে মাঠে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন। এরপর টসও করতে যান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক।
কিন্তু ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই টের পেতে থাকেন শরীর সাড়া দিচ্ছে না। বুক চেপে আসছে। ততক্ষণে বাকিরা বুঝে যান, তামিম হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তামিম নিয়ে হুলস্থূল লেগে যায়। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয় প্রস্তুতি। প্রথমে মাইনর ও পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হয়ে পড়া তামিমকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
কিন্তু তামিমের জ্ঞান ফেরাতে ওদিকে চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছিলেন না। ২২ মিনিট সময় ধরে সিপিআর ও তিনটি ডিসি শক দিতে হয়েছে। এরপর দ্রুত এনজিওগ্রাম করে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লাগিয়েছে ডাক্তাররা। অবিশ্বাস্য গতিতে হয়েছে সবকিছু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তামিমের জ্ঞান ফিরেছে এবং কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
তামিমের এই অবস্থার ভেতরেও বিকেএসপিতে চলেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা স্থগিত করেন। কিন্তু বিকেএসপি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে তামিম যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন মাঠে তার সতীর্থরা খেলছিলেন। মিরাজ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছেন ৭ উইকেটে।
স্থগিত না করে কীভাবে খেলা চললো, সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মোহামেডানের ইচ্ছাতেই খেলা চালিয়ে নিয়েছেন তারা। দুই দলকেই সিসিডিএম এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ম্যাচ স্থগিত করার কথা জানান। কিন্তু ম্যাচটি খেলতে রাজি হয় দুই দলই। এজন্য খেলা বন্ধ হয়নি।
তার ভাষ্য, ‘‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলা চালিয়ে যেতে চাইছিল। শাইনপুকুরও তাই। তারা কেউই চায়নি খেলা বন্ধ হোক। আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম এরকম পরিস্থিতিতে খেলা বন্ধ করা যায় কি না। এজন্য ক্লাবগুলোকে জানানো হয়। কিন্তু তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলা চালিয়ে নেয়।’’
জানা গেছে, দুই দলই চেয়েছে ড্রেসিংরুমে কিংবা মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে। তাতে মাঠের ভেতরে ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। খেলা শেষে মুশফিক, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুলরা ছুটে গেছেন তামিমকে দেখতে হাসপাতালে। কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের কাছাকাছি গিয়ে দেখাও করেছেন দুয়েকজন।
ঢাকা/ইয়াসিন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসক জানালেন, তামিমের জটিলতা এখনো কাটেনি
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ক্রিকেটার তামিম ইকবালের অবস্থা এখনো জটিল। আজ বিকেএসপিতে মোহামেডানের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। এরপর তাকে পাশেই ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর রিং পরানো হলেও এখনো জটিলতা এখনো কাটেনি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির মেডিকেল ডিরেক্টর রাজিব।
তামিমের চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘যতগুলো চিকিৎসা প্রয়োজন, সবকিছু করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে কন্ডিশনটা অনুকূলে আছে। ওনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এটার জন্য একটা এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্ট করা হয়েছে। এটা খুব স্মুথলি এবং এফিশিয়েন্টলি হয়েছে। ওনার এই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে এখন।’
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে সকালে শাইনপুকুরের বিপক্ষে টস করেন মোহামেডানের অধিনায়ক তামিম। এরপর অসুস্থ অনুভব করলে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে হাসপাতালে আনলে ব্লক ধরা পড়ে। ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট মনিরুজ্জামান মারুফের তত্ত্বাবধানে তাঁর ব্লক সরানো হয়।
তবে এখনো পুরোপুরি জটিলতা কাটেনি বলে জানান ডাক্তার রাজিব, ‘একটু ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল। স্টেন্ট পরও তিনি অবজারভেশনে আছেন। এবং ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন এখনো কাটেনি, একটু সময় লাগবে।’
তবে সবার কাছে দোয়া চেয়ে তামিমকে নিয়ে আশার কথাও শুনিয়েছেন তিনি, ‘আমরা আশাবাদী তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারবেন।’
তামিমের অসুস্থতার খবরে আজ বিসিবির পরিচালকদের সভা স্থগিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ছুটে গেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও অন্যান্য পরিচালকরা। হাসপাতালে আছেন তামিমের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী ও ভাই নাফিস ইকবাল।