বিদেশে পড়ালেখার নানা তথ্য মেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্ল্যাটফর্মে
Published: 24th, March 2025 GMT
২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কয়েকজন তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি (সিইউআরএইচএস)। মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা ও স্নাতক গবেষণা সংস্কৃতির প্রসারে কাজ করে এই সংগঠন। প্রথম দিকে তাদের এই কার্যক্রম ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমাবদ্ধ। ক্লাবের সদস্যরা ফেসবুক গ্রুপে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক তথ্য দিতেন। পরে নিজেরাই তা শেয়ার করতেন। ২০২২ সালে ‘জামাল নজরুল ইসলাম ন্যাশনাল কনফারেন্স’ আয়োজনের মাধ্যমে চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি মূলধারার সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সঠিক তথ্যের অভাব। এটি নিরসনে শুরু থেকেই কাজ করছি আমরা।’ সংগঠনটি বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও শিক্ষাপদ্ধতি, বৃত্তির খবর, প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়। তাদের আরও একটি উদ্যোগ হলো ‘স্কলার্স রিসেপশন’। যেখানে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ দেখায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্লাব০৯ মার্চ ২০২৫চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গবেষণা উৎসব থেকে শুরু করে টেডএক্স চিটাগং ইউনিভার্সিটি, বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড, স্কলারস রিসেপশন—নানা আয়োজনের সঙ্গেই রয়েছে সিইউআরএইচএস। এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর কর্তৃক মিলেছে বিজ্ঞান সংগঠনের স্বীকৃতি।
বর্তমানে তাদের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত আছেন ৯৮ হাজারের বেশি সদস্য। অনুসারী আছেন আরও ৪৮ হাজার, যাঁদের অধিকাংশই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির সভাপতি ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক কাবেরী দাশ বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রমগুলো প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থী ও আট শর বেশি গবেষকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্যসূত্র পেয়ে তাঁরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন, পিএইচডি করছেন। আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। এই বিষয়গুলোই আমাদের বড় প্রাপ্তি।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম থেকে গিয়ে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহরের মেয়র হলেন তৈয়ব১২ অক্টোবর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট
এছাড়াও পড়ুন:
পথ দেখাবে সৃজনশীল ক্লাব
বুটেক্স বাঁধন
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের অধিক ব্যাগ রক্ত দিয়েছে। ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনটি দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। বর্তমানে দেশের মোট ৫৪টি জেলায় ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঁধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং স্বেচ্ছাসেবী এই সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশের ছাত্র এবং তরুণ প্রজন্মকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) ২০০৬ সালের ২৪ মে বাঁধনের কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৮ বছরে ধরে নিরলসভাবে মানবতার সেবার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। বর্তমানে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ইমন কুমার সাহা এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আফিফ ইসলাম সাজিদ। বুটেক্সের সিনিয়র হোক কিংবা জুনিয়র যখনই জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন হয় তখনই সবারই নির্ভরতার জায়গা বুটেক্স বাঁধন।
দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া এই সংগঠনটি শুধু রক্ত ব্যবস্থা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং শীতকালে ও ঈদে অসহায় মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ, ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থী-বাঁধনকর্মী-উপদেষ্টাদের নিয়ে ইফতার আয়োজন, বার্ষিক ভ্রমণ, নবীন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ব্লাড গ্রুপিং, রক্তদাতাদের সংবর্ধনা ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে এই সংগঠনটি। বছরজুড়ে বাঁধনের নানা আয়োজন থাকলেও তাদের প্রধান আয়োজন হলো বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দাতা সংবর্ধনা ও নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান। ২৯তম ব্যাচের মো. শামীম রেজা (আহ্বায়ক) এবং কে. এম. আবদুন নূর (সদস্য সচিব) এর হাত ধরে স্বেচ্ছায় রক্তদানের এই মহৎ কার্যক্রমটি বুটেক্সে চালু হয়। বর্তমানে বাঁধনের বুটেক্স ইউনিটের ১৯তম কমিটিতে মোট ১৭ জন সাংগঠনিক সদস্য রয়েছেন।
সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব
‘স্টেপস টুওয়ার্ড ইয়োর ড্রিম’ স্লোগানে ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একঝাঁক স্বপ্নবাজ তরুণের হাতে গড়ে ওঠে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ারবিষয়ক সংগঠন ‘সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব’। পড়ালেখা শেষ করে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাবেন নাকি বিসিএস ক্যাডার, ব্যাংকার, করপোরেট চাকরি, উদ্যোক্তা হবেন– এসব নিয়ে থাকেন দ্বিধাগ্রস্ত। আর এমন সিদ্ধান্তহীনতায় নষ্ট হয়ে যায় অনেকটা সময়। এসব শিক্ষার্থীকে সহায়তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। শুরু থেকে ৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি সদস্য ক্লাবটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবটি প্রতিবছর ক্যাম্পাসে ‘জব ফেস্ট’ বা ‘চাকরি মেলার’ আয়োজন করে। সংগঠনটি নবীন শিক্ষার্থীদের তিনটি ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং একটি বিষয়ের ওপর প্রেজেন্টেশন নিয়ে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ করে থাকে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মাস্টারমাইন্ড’ নামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে তারা। প্রতি সপ্তাহে কুইজ প্রতিযোগিতা, গবেষণা-সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারণার জন্য ‘রিসার্চ টক’, শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে ‘নলেজ টক’ নামে সেমিনার আয়োজন করে।v