তারকাদের নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে বিভ্রান্ত করা নতুন ঘটনা নয়। এর আগে বহু তারকার নাম দিয়ে ভুয়া পেজ খুলে অপরাধ করেছে দেশের সক্রিয় একটি চক্র। যাদের অনেকেই হয়েছে গ্রেপ্তার। এবার নন্দিত অভিনেত্রী অপি করিমের নাম দিয়ে খোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেজ। 

অপির ভুয়া ফেসবুক পেজ আর আইডিগুলো বেশ জনপ্রিয়। যেগুলোতে লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। যেগুলো থেকে প্রতিনিয়ত নানা বিষয়ে পোস্ট করা হচ্ছে; যা নিয়ে বেশ বিরক্ত অপি করিম।

বিষয়টি নিয়ে সমকালকে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আমার নামে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন বিষয়ে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে কে বা কারা। আমার নামে আইডিগুলো তারা কেন খুলল, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার সব খবর তাদের কাছে থাকে। ওই আইডি দেখে মনে হতেই পারে, ওটাই আমার আইডি। এতে আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছি।’

এরপর গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টও করেছেন এ বরেণ্য অভিনেত্রী। ভুয়া পেইজ আর আইডিগুলো নিয়ে অপি লিখেছেন, ‘আমার জীবনযাপন নিয়ে আমার অনেক আরাম! আমার অনেক বন্ধু নেই, আমি অনেক হট্টগোল পছন্দ করি না! পরিবার, কাজ, বই পড়া, ছবি আঁকা, গাছের যত্নে সারাদিন কেটে যায়!’

নিজের মোবাইল ফোন বিষয়ে অপি লিখেছেন, ‘ভাই-বোন আত্মীয়স্বজন দেশের বাইরে থাকার কারণে ফোন বিশেষ প্রয়োজনীয় জিনিস! গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য  ব্যবহার করতেই হয়! এর বাইরে আমার সঙ্গে ফোন থাকে খুবই কম! ফোনে তেমন ছবিও তোলা হয় না, সেলফির অভ্যা স নেই!’ 

ফেসবুকে নিজের আইডি প্রসঙ্গে অপি করিম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার আইডি আছে, যা ভেরিফায়েড করা। কিন্তু তাতে বিচরণ নেই বললেই চলে! এমন কি আমি পারতপক্ষে মোবাইল ফোনে কোনো কনটেন্ট দেখি না! আয়েশ করে টিভিতেই দেখি! আর হ্যাঁ, জ্যা মে বসে চোখ বন্ধ করে শুনি ইউটিউব খেকে গল্প। চোখের আরাম, মনেরও! তাই মনে হয় সময় অনেকটাই বেঁচে যায় আমার! এবং আমার তাতেই শান্তি!

নিজের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেজগুলো যারা খুলেছেন তাদের নিয়ে অপি করিম লিখেছেন, ‘আপনারা যা লিখেন আমার হয়ে, আমি ওইভাবে কথা বলি না, লিখিও না! আমার লেখার সঙ্গে আমার কাছের মানুষ আর অনেক ভক্ত পরিচিত! তাদের আপনারা ওইগুলো ‘আমার কথা’ বলে বিশ্বাস করাতে পারবেন না! আপনার যদি এত ইচ্ছা থাকে লিখতে তাহলে নিজের নামে লিখতে বসুন, অন্যাকে দিয়ে কেন আপনার মনের কথা বলাচ্ছেন! 


এত কষ্ট করে লিখছেন, কৃতিত্ব আপনারই প্রাপ্য! মিথ্যার ওপর ভর করে কারোর নাম দিয়ে লেখার যদি সাহস থাকে, তাহলে নিজের নাম দিয়ে লেখার সাহস দেখান! আপনারা এত কষ্ট করে আমার নাম ভাঙিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা থেকে অনুগ্রহপূর্বক নিজেদের বিরত রাখুন! সময় নষ্ট করছেন! তার চেয়ে চোখ বন্ধ করে গল্প শুনুন বা চোখ খুলে বই পড়ুন! প্রযুক্তির অনেক গুণ, ওটা ব্যটবহার করি যথাযথভাবে!

পরিশেষে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরা ভালো থাকি, অন্যকে ভালো রাখি।’

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে অপির ভুয়া এ পেজগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। যেখানে এর আগেও অভিনেত্রীর পারিবারিক ছবি শেয়ার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডি রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ ন ত র র অন ক র আইড আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘর ঠান্ডায় ইনডোর প্লান্ট

গরমকালে আমাদের ঘর যেন একেকটা ওভেনে পরিণত হয়। ফ্যান চালিয়ে উপকার মেলে না। এসি বা কুলারের ওপর নির্ভর করতে হয় দিনের বেশির ভাগ সময়। ভাবুন তো, যদি এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় থাকে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে– তাও কোনো বিদ্যুৎ বা মেশিন ছাড়াই? 
হ্যাঁ, প্রকৃতির কাছে আছে এমন কিছু দারুণ সমাধান। কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে, যেগুলো শুধু ঘরের শোভা বাড়ায় না, বরং তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, বাতাস পরিষ্কার করে আর আপনার মন-মেজাজও ঠান্ডা রাখে। 
কেন ইনডোর প্লান্ট ঘর ঠান্ডা রাখে? 
গাছ বা পাতার মাধ্যমে পানি ছাড়ে, যাকে বলে বাষ্পমোচন (ট্রান্সপিরেশন)। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরের গরম তাপ শোষণ করে। ফলে ঘর একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। বড় পাতার গাছগুলো আবার সূর্যের আলো আটকে দেয়। ফলে সরাসরি রোদ ঘরে ঢুকে গরম করতে পারে না। শুধু তাই নয়, কয়েকটা গাছ একসঙ্গে রাখলে ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার একটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করে। 
কোন গাছগুলো ইনডোরে লাগানো সবচেয়ে ভালো?
ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে এমন অনেক ইনডোর গাছ আছে। আজ আমরা এমন কিছু গাছ নিয়ে বলব, যেগুলো বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায় এবং সহজে ঘরে রাখা যায়।  
স্নেক প্লান্ট 
অল্প আলো আর কম পানিতে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এ গাছ। যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত গাছের খেয়াল রাখতে পারেন না, তাদের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে রাতেও অক্সিজেন ছাড়ে বলে শোবার ঘরে রাখার জন্য দারুণ। এ ছাড়া বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান যেমন ফরমালডিহাইড শোষণ করে। 
পিস লিলি
নরম পাতার এ গাছটি ঘরে ঠান্ডা ভাব আনে বাষ্পমোচনের মাধ্যমে। এর সাদা ফুল ঘরে এনে দেয় প্রশান্তি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া। বাতাস পরিষ্কারে কার্যকর এবং ঘরের ভেতরের বাতাসকে আর্দ্র রাখে, যা গরমে খুব উপকারী। 
আরবিকা পাম
সবুজ পাতায় ঘেরা এ গাছ শুধু চোখে শান্তি দেয় না, বাতাসে আর্দ্রতাও বাড়ায়। হালকা বাতাসে পাতাগুলো দুলে যেন প্রকৃতির স্পর্শ এনে দেয়। এটি বিভিন্ন টক্সিন শোষণ করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং সহজে মানিয়ে যায় ঘরের কোনায় বা জানালার পাশে। 
স্পাইডার প্লান্ট 
এই গাছ দ্রুত বড় হয়, তাপ শোষণ করে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একে মা গাছ বলা হয়। কারণ, এর শরীর থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নেয়, যেগুলো আবার নতুন করে লাগানো যায়। খুব বেশি যত্ন ছাড়া বেড়ে ওঠে এবং ঘরের বাতাসে থাকা কার্বন মনোঅক্সাইড ও ফরমালডিহাইড দূর করে। 
অ্যালোভেরা 
ঔষধি গাছ হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও, অ্যালোভেরা ইনডোর ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে দেয়। পাতার ভেতরের জেল আমাদের ত্বকের যত্নে যেমন ব্যবহার হয়, তেমনি পাতাগুলো গরম তাপ শুষে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।  
রাবার প্লান্ট 
বড় আকারের মোটা পাতায় সূর্যের আলো আটকে দিতে পারে এ গাছ। তাই রোদ থেকে আসা অতিরিক্ত উত্তাপ কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি ঘরের ভেতর দারুণ এক সবুজ পরিবেশ তৈরি করে। কম আলো ও মাঝারি পানির চাহিদা থাকায় এর যত্ন নেওয়া সহজ। 
জেড প্লান্ট 
ছোট আকৃতির এ গাছটি টেবিল বা জানালার ধারে রাখলে জায়গা কম লাগে অথচ সৌন্দর্য বাড়ে অনেকগুণ। খুব কম পানি লাগে এবং পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।  
ইনডোর গাছের যত্নের কিছু সহজ টিপস 
আলো বুঝে গাছ রাখুন: যেসব গাছ রোদ পছন্দ করে (যেমন অ্যালোভেরা, আরবিকা পাম) সেগুলো দক্ষিণ দিকে রাখুন। কম আলো সহ্য করতে পারে এমন গাছ (যেমন স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট) উত্তরমুখী স্থানে রাখাই ভালো। 
পানি দিন বুঝেশুনে: সব গাছে প্রতিদিন পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছের শিকড় পচে যেতে পারে। 
মাটি ও সার: জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ ভালো বেড়ে ওঠে। বছরে ২-৩ বার সার দিতে পারেন। 
পাতা পরিষ্কার রাখুন: পাতায় ধুলো জমে গেলে গাছ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। তাই মাঝে মধ্যে নরম কাপড় দিয়ে পাতাগুলো মুছে দিন। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ