রাজধানীতে জমে উঠেছে ফুটপাতের ঈদ বাজার
Published: 24th, March 2025 GMT
রাজধানীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিপণিবিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে যে যার মতো পরিবারসহ শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে ফুটপাতে বসা বিভিন্ন স্থানের হকার মার্কেটে।
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সড়ক আর ফুটপাতে বসেছে চার থেকে পাঁচশত হকারের দোকান। এসব দোকানে নানা রকমের পণ্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যে যার পছন্দমতো পণ্য দামাদামি করে কিনে নিচ্ছেন।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, গুলিস্তানের এই ফুটপাতে নানা রকমের পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, শিশুদের পোশাক, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শাড়ি, লেহেঙ্গা, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ঘড়ি, মানিব্যাগ, চশমা সবকিছুরই দোকান আছে এখানে। মাত্র ১০০ থেকে ৫০০ টাকায় জিন্স-গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, বিভিন্ন ধরনের শার্ট পাওয়া যায় দোকানগুলোতে। পাঞ্জাবি মিলছে ২৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যেই। ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে রঙ-বেরঙের টি-শার্ট।
আসাদুল ইসলাম নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক অফিস সহকারী এই মার্কেটে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। এসময় সমকালকে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল অফিস শেষেই বাড়িতে চলে যাব। তাই পরিবারের সবার জন্য ঈদের কেনাকাটা করছি। আমাদের আয় কম, বাজেটও কম। এজন্য ফুটপাতে কেনাকাটা করছি। এটাই আমাদের শপিং কমপ্লেক্স। গুলিস্তানের এই মার্কেটে ঈদ কেনাকাটার সব কিছু্রই দোকান আছে।’
স্বামী ও সন্তানদের জন্য ঈদের নতুন জামা কিনতে আসা নাদিয়া বলেন, ‘ঈদের আগে সবারই আশা পরিবারের সবাই নতুন জামা পরবে। তবে সবার সামর্থ্য তো আর সমান নয়। সকালে নিউমার্কেটে দুই ছেলের জন্য কেনাকাটা করেছি। এখন গুলিস্তানে নিজেদের জন্য কেনাকাটা করছি।’
গুলিস্তানের ফুটপাত মার্কেটে সবচেয়ে বেশি ক্রেতার দেখা মেলে শিশুদের দোকানগুলোতে। ১০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত শিশুদের জামা। ছেলেদের জামার দাম একটু কম হলেও মেয়েদের জামার দামে রয়েছে পার্থক্য।
গেন্ডারিয়া থেকে আসা রহিমা বলেন, ‘গুলিস্তানে জিনিসের দাম কিছুটা কম। দামাদামি করে নিলে কম দামে অনেক ভালো জিনিস পাওয়া যায়। ছেলের পাঞ্জাবি ৩০০ টাকা আর শার্ট নিয়েছি ২৫০ টাকায়। মেয়ের লেহেঙ্গার দাম বেশি। ১ হাজার টাকা চেয়েছে ৪০০ টাকা বলেছি। ৬০০–৭০০ হলে নিয়ে নেব।’
বিক্রেতা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমার এখানে সব নতুন নতুন কালেকশন। তাই কোনো কাস্টমার এলে ফিরে যায় না। আমি দামও রাখি কম। একটা জামায় ৫০ টাকা লাভ হলেই ছেড়ে দেই। যে কারণে দেখতেই পাচ্ছেন কাস্টমারের ভিড় বেশি।’
এছাড়াও গুলিস্তানের ফুটপাত মার্কেটে জামা-কাপড়ের মতো জুতার চাহিদাও অনেক। সব বয়সের মানুষের জুতা পাওয়া যায় এখানে। দোকানগুলোতে জুতার সাজানো আছে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে। ভিড়ও লক্ষ্যে করা যাচ্ছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা জানান, একটু কম দামি জুতা বেশি বিক্রি হয়।
বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, ‘ফুটপাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের চাহিদা অনেক। তাই সবার বাজেট অনুসারেই কাপড় আছে। সকাল থেকে বিক্রি শুরু হয়। তবে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বেচাকেনা একটু বেশি হয়। তখন মানুষ বাড়ে। চাঁদরাতের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাবে আশা করছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র ক ন ক ট ফ টপ ত ফ টপ ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদদের স্মরণে জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের ইফতার ও আলোচনা
জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সে। মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে এ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হানের সভাপতিত্বে মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
জোনায়েদ সাকী বলেন, ছোট ছোট আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা ঐক্য গড়ে উঠেছে বলেই আজকের এই অভ্যুত্থান সফল হয়েছে।
ড. মাহদী আমিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গত ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসন বিচার করা হবে। হাসিনা সরকার যত মানুষকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হত্যা করেছে তার বিচার হবে, শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, সব ধরনের গুম-খুন-হত্যাসহ বিশেষত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।
ববি হাজ্জাজ বলেন, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রথা। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার দরকার। সংস্কার বা পরিবর্তন যা করার নির্বাচিত সরকারই করতে পারবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ যেন জন্ম নিতে না পারে। যদি জন্মায়ও সেই শেকড় ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে উপড়ে ফেলা হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের আধিপত্যবাদ চলবে না। চব্বিশের তারুণ্যের চেতনার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হবে।
জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, শহীদ পরিবারগুলো এখনও নিগৃহীত। তারা যথাযথ সম্মানটা পাচ্ছে না। কয় মাস হয়েছে, এখনই যদি এ অবস্থা হয় আমরা কী ভেবে নেব? আহতদের পায়ের ঘা শুকায়নি অনেকের। বহু তরুণ চোখ হারিয়ে দিশেহারা। আমরা সবাইকে সতর্ক করে বলতে চাই, গণহত্যার বিচার হতেই হবে এই বাংলাদেশে। নাহলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হব।
সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, আগামীতে যারা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবেন তারা কী করবেন সেটা তো আমরা জানি না। বড় দলের নেতাদের কাছ থেকে আমরা জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে জোরালো বক্তব্য শুনতে পাই না। আমরা আশা করি- তারা এই বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাহেদ উর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা আলী আহসান জুনায়েদ, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ প্রমুখ।