চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচ থেকে উদ্ধার করা তরুণীর মরদেহের পরিচয় মিলেছে। তার নাম জ্যোৎস্না বেগম। 

পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ে করতে চাপ দেওয়ায় প্রেমিকের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় নয়ন বড়ুয়া নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার নয়ন বড়ুয়া রাউজান উপজেলার পশ্চিম গহিরা গ্রামের মৃত মিলন বড়ুয়ার ছেলে।

পিবিআই সূত্র জানায়, নয়ন বড়ুয়া ও জ্যোৎস্না বেগম কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা গত ফেব্রুয়ারিতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নগরের বন্দরটিলা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। সম্প্রতি জ্যোৎস্না নয়নকে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে দু’জনের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। শনিবার সকালে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জেরে জ্যোৎস্নাকে গলাটিপে হত্যা করেন নয়ন। পরে লাশটি কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে প্লাস্টিকের বস্তার ভরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে লালখানবাজার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে ফেলে যান তিনি।

গত শনিবার নগরের লালখানবাজার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচ থেকে জ্যোৎস্নার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত জ্যোৎস্না নোয়াখালীর কবিরহাট থানার নলুয়ারচর গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে।

পিবিআইর চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জ্যোৎস্নার বড় বোন তৈয়বা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহের পরিচয় শনাক্তের পর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদদের স্মরণে জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের ইফতার ও আলোচনা

জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সে। মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে এ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হানের সভাপতিত্বে মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

জোনায়েদ সাকী বলেন, ছোট ছোট আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা ঐক্য গড়ে উঠেছে বলেই আজকের এই অভ্যুত্থান সফল হয়েছে।

ড. মাহদী আমিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গত ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসন বিচার করা হবে। হাসিনা সরকার যত মানুষকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হত্যা করেছে তার বিচার হবে, শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, সব ধরনের গুম-খুন-হত্যাসহ বিশেষত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।

ববি হাজ্জাজ বলেন, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রথা। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার দরকার। সংস্কার বা পরিবর্তন যা করার নির্বাচিত সরকারই করতে পারবে।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ যেন জন্ম নিতে না পারে। যদি জন্মায়ও সেই শেকড় ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে উপড়ে ফেলা হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের আধিপত্যবাদ চলবে না। চব্বিশের তারুণ্যের চেতনার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হবে।

জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, শহীদ পরিবারগুলো এখনও নিগৃহীত। তারা যথাযথ সম্মানটা পাচ্ছে না। কয় মাস হয়েছে, এখনই যদি এ অবস্থা হয় আমরা কী ভেবে নেব? আহতদের পায়ের ঘা শুকায়নি অনেকের। বহু তরুণ চোখ হারিয়ে দিশেহারা। আমরা সবাইকে সতর্ক করে বলতে চাই, গণহত্যার বিচার হতেই হবে এই বাংলাদেশে। নাহলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হব।

সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, আগামীতে যারা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবেন তারা কী করবেন সেটা তো আমরা জানি না। বড় দলের নেতাদের কাছ থেকে আমরা জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে জোরালো বক্তব্য শুনতে পাই না। আমরা আশা করি- তারা এই বিষয়টি ভেবে দেখবেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাহেদ উর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা আলী আহসান জুনায়েদ, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ