দেশ নিয়ে আবারও সুকৌশলে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশকে আবার অস্থিতিশীল করার এবং বাংলাদেশকে আবারও বিপদে নিমজ্জিত করার জন্য।

আজ সোমবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে আয়োজিত বিএনপির মিডিয়া সেল আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের জন্য এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপির মিডিয়া সেল।

মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন এ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাদেরও বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এর পেছনে কোনো মহৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। তিনি বলেন, ‘এর (ষড়যন্ত্র) পেছনে ঠিক তা–ই আছে, অতীতে ফ্যাসিস্ট আমলে যেভাবে আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম অবস্থাকে বিপন্ন করা হয়েছে। আমরা যেন আবারও অরক্ষিত হয়ে পড়ি, তার একটি হীন প্রচেষ্টা হচ্ছে, যে সেনাবাহিনী জাতির সব সংকটে পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে।’

সাংবাদিকেরা অতীতে জাতির কঠিন সময় সঠিক তথ্য নিয়ে সামনে এসেছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, আবারও আপনারা অতীতের মতো জাতির সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরবেন।’

বিএনপির বিরুদ্ধে এখনো নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) অতীতেও আমাদের জন্য কাজ করেছেন। আগামী দিনেও বিএনপির বিরুদ্ধে এসব প্রচারের বিরুদ্ধে আপনারা সত্য তথ্য তুলে কাজ করবেন।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ষড়যন ত র ব এনপ র র জন য ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যা বিভক্তি তৈরি করে: নুরুল হক

বর্তমান প্রেক্ষাপটে কয়েক দিন ধরে যে পরিস্থিতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া, তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি, দেশে আরেকটি এক–এগারো ঘটানোর কোনো চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র চলছে কি না।

কারণ, দীর্ঘ ১৬ বছর যে ফ্যাসিবাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছিল, আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, তারা কোনো দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল না। তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল। বৈদেশিক সমর্থন ছিল। দেশের মধ্যে ব্যবসায়ী সমাজ থেকে শুরু করে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যেও তাদের একটা শক্ত অবস্থান ছিল।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবসা–বাণিজ্য সর্বক্ষেত্রে তাঁর সুবিধাভোগীরা এখনো দেশে অবস্থান করছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মহল, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি তৈরি করার জন্য বর্তমান ছাত্র নেতাদের বিভ্রান্ত করছে। ছাত্রদের সঙ্গে রাজনৈতিক দল, সামরিক বাহিনী বা সরকারের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি করছে।

এখানে আমাদের পরিচিত ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন, সেই ঘটনাটি যদি সত্য হয়ে থাকে, তাদের সঙ্গে সেনানিবাসে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এমন আলাপ–‍আলোচনা করেছিল, বিষয়টি নিয়ে আরও আগে একটি শক্ত প্রতিবাদ দেখানোর দরকার ছিল। সেটি না করে তার বেশ কয়েক দিন পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া এবং সেটিকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি, সেটি আসলে অনাকাঙ্ক্ষিত। এরপর ফেসবুকে দেওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ভিডিও বক্তব্য দেখলাম। সেখানে তিনি মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করা নিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁদের যে আলোচনা হয়েছিল, তা নিয়ে কথা বলেছেন। রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁদের আরও সচেতন, দায়িত্বশীল ও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।

ছাত্রনেতারা, যাঁরা এ আন্দোলনের পরিচিত মুখ, তাঁদের মনে রাখতে হবে, এখন আর তাঁরা ছাত্র নন। তাঁরা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের জায়গায় আছেন। সুতরাং তাঁদের কোন কথায় প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, সেটা ভাবা দরকার। এই মুহূর্তে কোনো দল বা রাজনৈতিক নেতাদের এমন কোনো ভূমিকা নেওয়া বা এমন কথা বলা উচিত হবে না, যেটা জাতির মধ্যে বিভক্তি তৈরি করবে। যেটা জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলবে। এমনটা হলে দেশে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতান্ত্রিক যাত্রা। যেই যাত্রা বিঘ্নিত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার, তার দোসর এবং বিদেশি প্রভুরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করবে। নানাভাবে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করবে। সেই বিষয়ে যেন আমরা সচেতন থাকি।

নুরুল হক: সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একাত্তর ও চব্বিশ সমান যারা বলে, তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি
  • ‘সারজিস ছাত্রলীগ থেকে এনসিপির বড় নেতা হতে পারলে আমরা কী দোষ করেছি’
  • ‘সারজিস ছাত্রলীগ থেকে এনসিপি করলে আমরা কেন ছাত্রদল করতে পারব না’
  • নারীরা কীভাবে ইতিকাফ করবেন
  • ‘দেশটা কারও বাপের না’ বললে আমার গায়ে লাগে: মির্জা আব্বাস
  • দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
  • সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে: তারেক রহমান
  • দুই ছাত্রনেতা সেনাপ্রধানের সঙ্গে কেন সাক্ষাৎ করেন, তা জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত: নুরুল হক
  • এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যা বিভক্তি তৈরি করে: নুরুল হক