অপারেশন ডেভিল হান্ট চলাকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে, আবার অনেকে গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

তবে পালিয়ে না গিয়ে এখনো এলাকায় বীরদর্পে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে নাসিক ১৭নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া নামাপাড়া এলাকার চিহ্নিত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বোরহানউদ্দিন ও তার ছেলে ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রোকনউদ্দিন আরমান।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের একান্ত অনুগামী সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল করীম বাবু ওরফে ডিশ বাবুর সহযোগী ছিলেন এই শেখ বোরহানউদ্দিন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শামীম ওসমান সহ ডিশ বাবু নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও এখনো এলাকায় বাহল তবিয়তে প্রকাশ্যে রয়েছেন শেখ বোরহানউদ্দিন ও তার ছেলে।

জানাগেছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নামাপাড়া খানকা শরীফের মোতওয়াল্লী আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মেজাহউদ্দিন খোকনকে সড়িয়ে নিজে মোতওয়াল্লীর পদটি দখল করে নেন।

অভিযোগ রয়েছে সেসময় খানকা শরীফে ওরশের নাম করে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের থেকে বিভিন্ন সময় মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন তিনি।  সরকার পতনের পর বর্তমানে সেই খানকা শরীফের মোতওয়াল্লীর পদটিকে পূঁজি করে এলাকায় অবস্থান করছেন তিনি।

শুধু তাই নয়, খানকা শরীফের নিজস্ব জমিতে অবৈধভাবে ২টি ব্যাটারী চালিত অবৈধ অটোরিক্সার গ্যারেজ, ২টি ব্যাকারী, ১টি ওয়ার্কশপ এবং ৫টি দোকানঘর তুলে তা ভাড়া দিয়ে সেই টাকা নিজের পকেটস্থ করছেন তিনি।

এছাড়া, নামাপাড়া সমাজ উন্নয়ন সংসদের রেজিষ্ট্রিকৃত নিজস্ব ক্লাবকে দোকানঘর হিসেবে ভাড়া দিয়ে সেই ভাড়া আত্মসাৎ করছেন তিনি। তার এহেন কর্মকান্ডে কেউ বাধা দিতে চাইলে তার ছেলে এবং ভাই ভাতিজাদের দিয়ে নির্যাতন করানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আরো জানাগেছে, শেখ বোরহানউদ্দিনের ছেলে ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রোকনউদ্দিন আরমান ছিলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলার আসামী অয়ন ওসমান ও আহমেদ কাওসারের একান্ত আস্থাভাজন।

শুধু তাই নয়, ছাত্র আন্দোলনের সময় অবৈধ অস্ত্র কিনতে মোটা অংকের টাকার যোগান দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তারা বিরুদ্ধে। পতিত সরকারের আমলে এলাকায় অয়ন ওসমান ও আহমেদ কাওসারের শেল্টারে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলো রোকনউদ্দিন আরমান।

তবে, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ এক নেতার কিছু অনুগামীদের সাথে সখ্যতা গড়ে এলাকায় প্রকাশে চলাফেরা করছে স্বৈরাচারের দোসর শেখ বোরহানউদ্দিন ও তার ছেলে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক য় আওয় ম সরক র ওসম ন

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সাজার মেয়াদ শেষে কারামুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।

এদিকে জাকির খানকে বরণ করে নিতে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকান ওয়াহিদ জানান, ১৯৯৪ সালের সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলার রায়ে জাকির খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছিল। আপিল করার পর উচ্চ আদালতে সাজা কমিয়ে আট বছর করা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনে তাঁর সাজা কমে পাঁচ বছর করা হয়। পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষে আজ রোববার সকালে জাকির খানকে কারামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে আজ সকাল থেকে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকলে ও প্রাইভেট কারের বহর নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। নেতা-কর্মীরা ট্রাকে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বহর বের করেন। জেলা কারাগারের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় হয়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হন জাকির খান। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে চড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেওভোগের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম খন্দকার হত্যাসহ ৪টি হত্যাসহ মোট ৩৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাকির খান আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শহরের দেওভোগ এলাকায় জাকির খান তাঁর বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। দেওভোগ এলাকার সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে হত্যা করে শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেন। ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর গোপনে দেশে ফিরে এসে রাজধানীর বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় পরিচয় গোপন করে সপরিবার বসবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর পর থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে জাকির খানসহ সব আসামি খালাস পান।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সাজা শেষে জাকির খান কারামুক্ত হয়েছেন। তিনি ২৬টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • রিয়াদ-আপনের নেতৃত্বে সদর থানা যুবদল বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে মহানগর যুবদলের বৈশাখী শোভাযাত্রা  
  • নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • বর্ণিল সাজে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • রূপগঞ্জে দুই সাব-রেজিস্ট্রারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা : স্বামী আটক
  • নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে : জব্বার   
  • আড়াই বছর পর নারায়ণগঞ্জের জাকির খান কারামুক্ত, শোডাউন
  • নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ