জাহাজবাড়িতে ‘জঙ্গি নাটক’ এর অভিযোগ: সাবেক আইজিপিসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 24th, March 2025 GMT
‘জঙ্গি নাটক সাজিয়ে’ ঢাকার কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে ৯ তরুণ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২৪ মার্চ) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন—ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর জোনের সাবেক ডিসি জসিমউদ্দিন মোল্লা।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত সংস্থার সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে, এই তিন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় জাহাজবাড়ি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক রাখার আবেদন করি। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ মে তারিখ ধার্য করেছেন।”
তিনি বলেন, “জঙ্গি তকমা দিয়ে জাহাজবাড়িতে ৯ তরুণকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে এখানে রেখে হত্যা করা হয়। ইসলামি ভাবধারা সম্পন্ন মানুষের ভেতর ভয়ের সংস্কৃতি চালু করতেই এভাবে জঙ্গি আখ্যা দিয়ে সাধারণ মানুষকে এভাবে হত্যা করা হত, যাতে শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা যায়।”
এ প্রসিকিউটর বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড ছিল নিষ্ঠুরতম রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড। সমালোচনার মুখে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার ক্রসফায়ারের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে এভাবে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মানুষ হত্যা করত। এভাবেই একের পর এক বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করে।”
তাজুল ইসলাম বলেন, “নিহত ৯ তরুণের স্বজনদেরও ভয় দেখানো হয়েছিল লাশ গ্রহণ না করার জন্য। এর মধ্য দিয়ে ঘৃণার সংস্কৃতি চালু করা হয়। দেশের মানুষকে দেখানো হয় যে, এরা জঙ্গি ছিল, সেজন্য স্বজনরাও তাদের লাশ গ্রহণ করেনি।”
প্রসঙ্গত, রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ‘জাহাজ বিল্ডিং’ বাড়ির পঞ্চম তলায় ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই ভোররাতে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে নয় সন্দেহভাজন জঙ্গি মারা যান। হাসান নামের একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশ। পালিয়ে যায় একজন। তারা সবাই জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
ওই ঘটনায় ২৭ জুলাই রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো.
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুড়ে যাওয়া মার্কেটের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়েছিলেন যুবদল নেতা, অডিও ভাইরাল
খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পুড়ে যাওয়া অস্থায়ী মার্কেটের মালিক রাসেল মিয়ার সঙ্গে যুবদল নেতা নাজমুল হুদা সাগরের চাঁদা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৯ মার্চ আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেট পুড়ে যায়। ফোনালাপটি এর কয়েকদিন আগের। সাগর খুলনা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুবদলের ওই কমিটির সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু গত ২৩ মার্চ রাতে মুক্তিপণের দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ফোনালাপের শুরুতে মার্কেট মালিক রাসেলকে সাগর বলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছো না, এটা কি ঠিক হচ্ছে তোমার?’
জবাবে রাসেল বলেন, ‘ভাই, আমি আছি খুব বিপদে।’
তখন সাগর বলেন, ‘তুমি আমারে বলছো টাকা দিয়ে যাবা, তুমি পাঁচ মাসেও আমার সঙ্গে যোগাযোগই করলে না। এটা তোমার কাছে আমি প্রত্যাশা করি?’
রাসেল বলেন, ‘ভাই টাকা ইনকাম করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।’
উত্তরে সাগর বলেন, ‘কেন ইনকাম কঠিন হয়ে গেল কেন? তুমি আমারে প্রথমে বললা ৫০ হাজার করে দিবা পিকচার প্যালেস থেকে। সেদিন বললা না ভাই ৩০ হাজার করে দিব। একটা টাকাও দিলা না। তুমি তো মেলাটেলা করতেছো।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘আমি মেলা করছি না। মন্টুর মেলায় কয়েকটি স্টল দিয়েছি।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় দু’জনের মধ্যে।
শেষে যুবদল নেতা বলেন, ‘যাই হোক তুমি আমার সঙ্গে যে কমিটমেন্ট করেছো সেটা কি রাখবা, না রাখবা না ? সেটা বললেই হয়ে যায়।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘এখন পিকচার প্যালেসের যে অবস্থা, আছি খুব বিপদে। দোকানদারদের বেচাকেনা কম। টাকা-পয়সা ঠিকমতো দিতে পারছে না। আমিও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেছি না।’
ব্যবসায়ীর বক্তব্য শেষে কিছুটা সময় চুপ করে রূঢ় কণ্ঠে সাগরকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করব না।’
এ বিষয়ে রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি শেষ হয়ে গেছি। পথে বইসে গেছি। আমারে আর শেষ কইরেন না’।
আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেটের ৪৪টি দোকান পুড়ে যায়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জায়গা ভাড়া নিয়ে এক বছর আগে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেন ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া। তিনি শহরে মেলা রাসেল নামে পরিচিত।