পারভেজের সেঞ্চুরিতে আবাহনীর জয়রথ ছুটছে
Published: 24th, March 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে আবাহনী লিমিটেডের জয়রথ ছুটছে। লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে সোমবার (২৪ মার্চ) তারা হারিয়েছে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবকে। শিরোপাধারীদের এবারের জয়ের নায়ক ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন ইমন। লিগের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে ৫ উইকেটে জয় এনে দেন পারভেজ।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব ৯ উইকেটে ২০১ রান করে। জবাব দিতে নেমে আবাহনী লিমিটেড ৩৯.
লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে গুলশানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন পারভেজ। এরপর ৪৭ এবং অপরাজিত ৫৫ রানের দুইটি ইনিংস খেলেছিলেন। শেষ তিন ম্যাচে আউট হন সিঙ্গেল ডিজিটে। এবার তার ব্যাট থেকে আসে ঝকঝকে ১২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ১৪৮ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ১৩ চার ও ৫ ছক্কায় ১৩৩ বলে ইনিংসটি সাজান পারভেজ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৪ বলে ৫৪ রান করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ভালো করেননি শান্ত (২), মিঠুন (১) ও মুমিনুল (২)।
আরো পড়ুন:
রাকিবের ব্যাটে পারটেক্সের রোমাঞ্চকর জয়, বৃষ্টির পেটে বিকেএসপির ম্যাচ
নাঈমের উড়ন্ত সেঞ্চুরিতে প্রাইম ব্যাংকের সহজ জয়
এর আগে ধানমন্ডির ইনিংস একাই টানেন ফজলে মাহমুদ রাব্বী। ১২৬ বলে ৮৭ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ফজলে তার ইনিংসটি খেলেন। শেষ দিকে জিয়াউর রহমানের ৬৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ধানমন্ডির রান কোনোমতে দুইশ পেরিয়ে যায়।
বল হাতে পেসার নাহিদ রানা ৪৫ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন। সমান ৪ উইকেট নেন স্পিনার রাকিবুল হাসানও। ১৬ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। ধানমন্ডি ক্লাবের এটি আট ম্যাচে পঞ্চম হার। মাত্র তিনটি জয় পেয়েছে তারা।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ধ নমন ড উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা মাত্র
বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।
একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।
লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’
ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’
এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)
মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।
আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।
আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫