স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার যন্ত্রের কেনাকাটার অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. জিয়াউল হক।

আজ সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্য করা হয়েছে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) আহমেদ মাহবুব চৌধুরীকে। কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন ধোয়ার জন্য ৩৮ কোটি টাকায় দুটি স্বয়ংক্রিয় ধৌতকরণব্যবস্থা বা ওয়াশিং প্ল্যান্ট কিনেছিল। একটি স্থাপন করা হয় ঢাকার কমলাপুরে, অন্যটি রাজশাহীতে। ২০ মাসের মাথায় প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ হয়ে যায়।

এ নিয়ে ১৬ মার্চ ‘দুই বছরের মাথায় যন্ত্র বিকল: একেকটি ট্রেন ধুতে গচ্চা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা’ শিরোনামে প্রথম আলোতে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দুটি প্ল্যান্ট দিয়ে ২ হাজার ৯২৯ বার ট্রেন ধোয়া সম্ভব হয়েছিল। হিসাব করে দেখা যায়, প্ল্যান্ট দুটি স্থাপনে যে ব্যয় হয়েছে, তাতে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্ল্যান্ট দুটি চালানো হতো বিদ্যুতের সাহায্যে। ট্রেন ধোয়ার কাজে পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হতো। এর পরিচালনায় থাকা লোকবলসহ সব খরচ ধরলে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। রেলওয়ে সব সময় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে ট্রেন ধোয়ার কাজ করে থাকে। প্রচলিত ব্যবস্থায় হাতে ট্রেন ধুতে খরচ হয় এক হাজার টাকার মতো।

ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামে যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তাতে মূলত কিছু স্বয়ংক্রিয় ব্রাশ, সাবানপানি ও সাধারণ পানি ছিটানোর ব্যবস্থা এবং কয়েকটি বৈদ্যুতিক পাখা ছিল। সাধারণ এ ব্যবস্থা তৈরিতে এত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক দিন ধরে প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ। সেগুলো আবার চালু করতে আরও বিনিয়োগ দরকার, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সদস য র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদযাত্রায় পরিবহনে ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় হচ্ছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, ঈদযাত্রায় ১২ দিনে বিভিন্ন পরিবহনে প্রায় ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আদায় হচ্ছে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিংয়ে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবায়ন নেই।

আজ বুধবার রাজধানীর ডিআরইউতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো জানান সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক বলেন, এবার ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহনে ২২ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার ট্রিপে মানুষের যাতায়াত হবে। এসব ট্রিপে মানুষ থেকে এই ভাড়া আদায় হচ্ছে। দেশের ৯৮ শতাংশ যানেই এ সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, সরকার থেকে এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও তার বাস্তবায়ন দেখা যায় না।

মোজাম্মেল হক বলেন, সরকার ঈদের ছুটিতে বাস বা ট্রেনের ছাদে চড়ে অথবা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল না করতে বলে থাকে। কিন্তু পরিবহনে ভাড়ার ক্ষেত্রে ধনী–গরিব সবার জন্য একই ভাড়া দিতে হয়। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আলাদা ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা এই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এ ছাড়া বাসের ভাড়া নির্ধারণে যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি নেই।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, এবার নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হবে ৮০ কোটি টাকা, রাজধানীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ৬০ কোটি, বিভিন্ন ধরনের রিকশায় ১৬০ কোটি এবং প্রাইভেট কার, জিপ ও মাইক্রোবাসে ২১ কোটি, সদরঘাটে বিভিন্ন পারাপারে ১০০ কোটি, হিউম্যান হলারে ১৬ কোটি, বাস-মিনিবাসে ৯০ কোটি, ঢাকায় চলাচলকারী বাসে ১২ কোটি, ট্রেনের ছাদে ৮০ লাখ, রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে ২৫০ কোটি, রেলে টিকিটবিহীন যাত্রী থেকে ৭ কোটি ৫০ লাখ এবং বিমানে ৩৫ কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কিছু সুপারিশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গণপরিবহনে ডিজিটাল ভাড়া আদায় চালু করা, নগদ টাকার লেনদেন বন্ধ করা, সড়ক-মহাসড়কে সিসি ক্যামরা পদ্ধতিতে প্রসিকিউশন চালু করা, আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ