ফেডের লোকসানের ধারা অব্যাহত, যদিও গত বছর কমেছে
Published: 24th, March 2025 GMT
গত বছর টানা দ্বিতীয় বছরের মতো অপারেটিং লস বা পরিচালন লোকসানের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। ২০২৪ সালে তারা ৭ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার লোকসান দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ফেড বলেছে, গত বছর লোকসানের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কমেছে। ২০২৩ সালে ফেডের লোকসান হয়েছিল ১১ হাজার ৪৩০ কোটি। সর্বশেষ ২০২২ সালে ফেড মুনাফা করেছিল ৫ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই লোকসানের প্রধান কারণ ছিল ২০২০–২১ সালের কোভিড-১৯ মহামারি। এরপর ২০২২–২৩ সালে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়ে দীর্ঘ সময় উচ্চ পর্যায়ে রাখা হয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার কমাতে শুরু করে।
২০২৩ সালে সুদ বাবদ সংস্থাটির ব্যয় ছিল ২৮ হাজার ১১০ কোটি ডলার। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে যা ২২ হাজার ৬৮০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালে সুদ বাবদ আয় ছিল ১৭ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার। ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতিজনিত অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে ফেডের সর্বশেষ বৈঠকে সুদহার ৪ দশমিক ২৫ থেকে ৪ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলও সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করায় অনিশ্চয়তা ‘অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্যই নিজেই স্বীকার করেছেন, তাঁর প্রশাসন ‘খুব বড়’ পদক্ষেপ নিতে চলেছে এবং এর ফলে দেশটিতে ‘ক্রান্তিকালীন সময়’ বা ‘বিশৃঙ্খল’ পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। তবে তাঁর এসব পদক্ষেপের জেরে যুক্তরাষ্ট্র মন্দার কবলে পড়বে কি না, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি।
সবচেয়ে উদ্বেগের খবর, ফেব্রুয়ারিতে আবারও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হলে মূল্যস্ফীতি বিপজ্জনক পর্যায়ে উঠে গেলে নীতি সুদহার আরও বাড়াতে হবে ফেডারেল রিজার্ভকে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গত বছর
এছাড়াও পড়ুন:
জি কে শামীমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায়ের নতুন তারিখ ২৭ মার্চ
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মার্চ।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারকে মো. রবিউল আলম আজ রোববার এই তারিখ ধার্য করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী বিল্লাল হোসেন।
জি কে শামীম কারাগারে আছেন। তাঁর মা পলাতক। এ মামলায় গত ২২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। আদালত সেদিন ৩০ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন। কিন্তু সেদিন (৩০ জানুয়ারি) রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত।
তবে আসামিপক্ষ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি আবার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করার আবেদন করা হয়। পরে আদালতের আদেশে মামলাটি রায়ের পর্যায় থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আসে। আজ রোববার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের নতুন তারিখ ঠিক করেন আদালত।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দুদক মামলা করে।
মামলায় ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শামীমকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাঁর মায়ের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআরের (স্থায়ী আমানত) কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এই টাকার তথ্য শামীম বা তাঁর মায়ের আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার তাঁর ছেলে শামীমের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ নিজ নামে রেখে তাঁকে (শামীম) অপরাধে সহায়তা করেছেন।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন শামীম। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচার আইনে পৃথক মামলা হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, শামীমের কার্যালয়ে অভিযান চলিয়ে ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার জব্দ করে র্যাব। এই টাকার কোনো উৎস পায়নি দুদক। সব মিলিয়ে শামীমের ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে শামীমের। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসবের দাম ৪১ কোটি টাকা। শামীম তাঁর অস্ত্রধারী সাত দেহরক্ষীকে দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডারবাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে এসব অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। অন্যদিকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই শামীমকে ১০ বছর এবং তাঁর সাত দেহরক্ষীর প্রত্যেককে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।