বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএর ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ভালুকার রোর ফ্যাশনের শ্রমিকেরা। এতে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কার্যালয়ের অনেক কর্মকর্তাই আজ সোমবার ভবনটিতে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে বিজিএমইএর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিকেল পাঁচটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই অচলাবস্থা চলছে।

বিজিএমইএর সাবেক নেতা, কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বকেয়া বেতন–ভাতা ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গতকাল রোববার ঢাকায় বিজিএমইএর ভবনের সামনে অবস্থান নেন রোর ফ্যাশনের প্রায় ২০০ শ্রমিক। গতকাল রাতে তাঁরা সেখানেই অবস্থান করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় বিজিএমইএর কর্মকর্তারা বের হন। আজ সকাল থেকেই বিজিএমইএর ফটকগুলো অবরোধ করে কর্মকর্তাদের ঢুকতে বাধা দেন শ্রমিকেরা। ফলে সারা দিন বিজিএমইএর কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির ছিল। যদিও শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে অফিসে আসার আগেই খবর পেয়েছি শ্রমিকেরা বিজিএমইএর ভবনে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। সে কারণে অফিসে যাইনি। যাঁরা অফিসে গেছেন, তাঁদের অনেকেই ঢুকতে পারেননি।’

ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিল্প পুলিশের এক উপপরিদর্শক জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে আর্থিক সংকটে পড়ে ময়মনসিংহের ভালুকার রোর ফ্যাশন লিমিটেড। এতে শ্রমিকদের বেতন–ভাতা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বকেয়া আদায়ে শ্রমিকেরা একাধিকবার মহাসড়ক অবরোধ করেন। এদিকে কাজ না থাকায় গত ২৪ জানুয়ারি কারখানা লে–অফ করে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দাবি, গত নভেম্বর–ডিসেম্বরে তাঁদের বেতন–ভাতা ৭০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া জানুয়ারির বেতন ও তারপর লে–অফের ক্ষতিপূরণ পাবেন শ্রমিকেরা।

ভালুকার কাঁঠালি এলাকায় ২০১৭ সালে কারখানাটি যাত্রা শুরু করে। এই কারখানায় কাজ করেন ১ হাজার ৩৭৬ শ্রমিক। এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুল ইসলাম।

জানতে চাইলে রাজধানীর তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাহাৎ খান বলেন, ‘ভালুকার রোর ফ্যাশনের শ্রমিকেরা গতকাল থেকে বিজিএমইএ ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে পুলিশ রয়েছে। কারখানাটির মালিক পলাতক থাকায় শ্রমিকদের পাওনা দেওয়ার বিষয়ে কোনো মিটিং এখন পর্যন্ত হয়নি। শুনেছি, সরকারের উচ্চপর্যায়ে সভা হওয়ার কথা রয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব জ এমইএর ক কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েকশত লোক বাড়ি হামলা করে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় সালিশ থেকে গিয়ে কয়েকশত মানুষ বাড়িঘর ভাঙচুর করে নিজ ঘরে বাবা আব্দুল গফুর (৪০) ও ছেলে মেহেদী হাসানকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যা করার পর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করেছে লোকজন।

বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম প্রায় পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে। যারা গ্রামে আছে, তারাও ভয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।

আরো পড়ুন:

নরসিংদীতে নারীর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক

নড়াইলে ছুরিকাঘাতে মাইক্রোবাস চালক নিহত

নাওগাঁও গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্দুল গফুর ও আব্দুল গফুরের ছেলে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরির অভিযোগ ছিল। এ সব কারণে তাদের নিজের গোষ্ঠীর লোকজনও অতিষ্ঠ ছিল বলে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরি ঘটনায় গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে গ্রামে সালিশে বসার কথা ছিল। দুপুরে গফুরের বাড়ি সংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষের সালিশ বসে। সালিশে আব্দুল গফুর ও মেহেদী হাসান উপস্থিত না হয়ে নিজ ঘরে রাম দা নিয়ে বসে থাকে। তাদের খোঁজে সালিশের লোকজন বাড়িতে গেলে দা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে আব্দুল গফুর। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আব্দুল গফুর ও তার ছেলে মেহেদী হাসানকে হত্যা করে। বাবা ও ছেলেকে হত্যা করার পর শত শত মানুষ রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন অর রশিদ নামে একজনের বাসা, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করে।

আব্দুল গফুরের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, ‘‘স্থানীয় হাবিবুর রহমানসহ শত শত মানুষ সালিশের নামে আমার স্বামী ও ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। যত অপরাধই করে থাকুক দেশে আইন আছে, আইনের মাধ্যমে বিচার হতো। বাবা ও ছেলেকে কেন নির্মমভাবে হত্যা করলো?’’

বাবা ও ছেলে নিহত হওয়ার পরপরই সালিশকারীরা ঘা ঢাকা দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান জানান, শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ বসেছিল। সালিশ থেকে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিলন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুলবাড়িয়ায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তা‌র ৩
  • ময়মনসিংহে সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় ৮৭ জনের নামে মামলা
  • সালিশে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • সালিসে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • কয়েকশত লোক বাড়ি হামলা করে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • দুই হাত কেটে ফেলেও বাঁচানো গেল না সাদাফকে
  • পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছে না ময়মনসিংহ মিনি চিড়িয়াখানার অসুস্থ ভালুকটি
  • ৯০ দিনের সুযোগকে কাজে লাগানোর পরামর্শ ব্যবসায়ীদের
  • অধস্তন আদালত তদারকি কমিটি পুনর্গঠন
  • ভর্তুকি দিলেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি তুলা আসবে