বিজিএমইএ ভবন অবরুদ্ধ করেছেন ভালুকার এক কারখানার শ্রমিকেরা
Published: 24th, March 2025 GMT
বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএর ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ভালুকার রোর ফ্যাশনের শ্রমিকেরা। এতে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কার্যালয়ের অনেক কর্মকর্তাই আজ সোমবার ভবনটিতে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে বিজিএমইএর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিকেল পাঁচটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই অচলাবস্থা চলছে।
বিজিএমইএর সাবেক নেতা, কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বকেয়া বেতন–ভাতা ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গতকাল রোববার ঢাকায় বিজিএমইএর ভবনের সামনে অবস্থান নেন রোর ফ্যাশনের প্রায় ২০০ শ্রমিক। গতকাল রাতে তাঁরা সেখানেই অবস্থান করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় বিজিএমইএর কর্মকর্তারা বের হন। আজ সকাল থেকেই বিজিএমইএর ফটকগুলো অবরোধ করে কর্মকর্তাদের ঢুকতে বাধা দেন শ্রমিকেরা। ফলে সারা দিন বিজিএমইএর কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির ছিল। যদিও শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে অফিসে আসার আগেই খবর পেয়েছি শ্রমিকেরা বিজিএমইএর ভবনে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। সে কারণে অফিসে যাইনি। যাঁরা অফিসে গেছেন, তাঁদের অনেকেই ঢুকতে পারেননি।’
ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিল্প পুলিশের এক উপপরিদর্শক জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে আর্থিক সংকটে পড়ে ময়মনসিংহের ভালুকার রোর ফ্যাশন লিমিটেড। এতে শ্রমিকদের বেতন–ভাতা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বকেয়া আদায়ে শ্রমিকেরা একাধিকবার মহাসড়ক অবরোধ করেন। এদিকে কাজ না থাকায় গত ২৪ জানুয়ারি কারখানা লে–অফ করে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দাবি, গত নভেম্বর–ডিসেম্বরে তাঁদের বেতন–ভাতা ৭০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া জানুয়ারির বেতন ও তারপর লে–অফের ক্ষতিপূরণ পাবেন শ্রমিকেরা।
ভালুকার কাঁঠালি এলাকায় ২০১৭ সালে কারখানাটি যাত্রা শুরু করে। এই কারখানায় কাজ করেন ১ হাজার ৩৭৬ শ্রমিক। এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুল ইসলাম।
জানতে চাইলে রাজধানীর তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাহাৎ খান বলেন, ‘ভালুকার রোর ফ্যাশনের শ্রমিকেরা গতকাল থেকে বিজিএমইএ ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে পুলিশ রয়েছে। কারখানাটির মালিক পলাতক থাকায় শ্রমিকদের পাওনা দেওয়ার বিষয়ে কোনো মিটিং এখন পর্যন্ত হয়নি। শুনেছি, সরকারের উচ্চপর্যায়ে সভা হওয়ার কথা রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব জ এমইএর ক কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী
সাবেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঢাকা ও ময়মনসিংহে অবস্থানরত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী ও ইফতার ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ও ময়মনসিংহের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে দেড় শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা পুনর্মিলনীতে পরিচিত মুখগুলোকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন পরিচিত সব মুখ এক ছাদের নিচে দেখতে পেয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন তারা।
মিলনমেলার এই আয়োজনকে ক্যামেরাবন্দি করতে ভোলেননি তারা। আনাড়ি হাতেই সবাই যেন হয়ে উঠেন এক একজন আলোকচিত্রী। দীর্ঘদিন পর অগ্রজ ও অনুজদের দেখা হওয়ায় ক্যামেরায় সেই স্মৃতি ধরে রাখেন। কুশল বিনিময়, আলিঙ্গনে সবাই ফিরে যান প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।
পুনর্মিলনীতে আসা আরব আমিরাত দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিশ্লেষক লালন আলতাপ জানান, পরিচিত মুখগুলোকে একসাথে দেখে মনেই হয়নি ঢাকায় আছি। ফিরে গিয়েছিলাম সেই ক্যাম্পাস জীবনে। এমন মিলনমেলায় যুক্ত হতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। এতদিনের কর্মক্লান্তি যেন মুহূর্তেই উবে গেছে।
আরেক নজরুলিয়ান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ পরিদর্শক আবু সাঈদ বলেন, এ ইফতার ও পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে পেরে অনেক আনন্দ অনুভব করছি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরনো বন্ধু, বড় ভাই ও ছোটদের পেয়ে মনে হচ্ছে ক্যাম্পাস জীবনে চলে এসেছি। তাই ক্যাম্পাস জীবনে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো বেশি বেশি মনে পড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌস আনাম জীবন বলেন, এত সুন্দর অনুষ্ঠানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার (ডেপুটি ডিরেক্টর, আইসিটি) মাহমুদ মুনিম বলেন, অনেকের সাথে দেখা হলো প্রায় অর্ধযুগ, তারও বেশি সময় পরে। যাদের সাথে কাটিয়েছি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো, তাদের অনেককে দেখে খুবই ভালো লাগছে। সবাই স্ব স্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত। কোনও সমস্যা কিংবা সহায়তায় আমরা একত্রিত হয়ে যেন কাজ করতে পারি সেটার চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হবে সেই প্রত্যাশা করি।
সাবেকদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হওয়া পুনর্মিলনীতে যোগ দেওয়া সাবেক শিক্ষার্থী হাসিব ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা একত্রিত হওয়ার প্রয়াস থেকেই এমন উদ্যোগ, ভবিষ্যতে আরো বৃহৎ পরিসরে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আমরা নানাধর্মী আয়োজন করবো।
আবদুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মিশকাত আল হারুন বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা এবার ভিন্নমাত্রা পেয়েছে প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহে উদযাপন করার মাধ্যমে। আশা করছি এর ব্যপ্তি বেড়েই চলবে।
ময়মনসিংহে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষক বাঁধন আরা মিল্কি বলেন, এবার দুটি ভিন্ন স্থানে নজরুলিয়ানদের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে নজরুলিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ আরো বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে আগত সাবেকদের ফটোসেশনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় সাবেকদের এ পুনর্মিলনী ও ইফতারপর্ব।