বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার, আটক ২
Published: 24th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় উপজেলা বিএনপির এক নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি দেশীয় অস্ত্র ও ১১ রাউন্ড তাজা গুলিসহ দুইজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
আজ সোমবার ভোররাতে উপজেলার আড়কান্দি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আটকৃকতরা হলেন- ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রোকনুজ্জামান রোকন ও তার ভাই বিএনপি নেতা কাকন। তবে রোকনের পরিবারের দাবি, উদোড় পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপেতেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকরা সাজানো এই নাটক করে তাকে আটক করিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ৮টা থেকেই আড়কান্দি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা চলাকালীন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আহমেদের ছেলে হিমেল ও তার সহযোগী মামুনের নেতৃত্বে গুলি করলে বিএনপি সমর্থিত ফিরোজ আলী গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় উভয়পক্ষ থেকে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ ওঠে। এরপরই বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। অগ্নিসংযোগ করে তিনটি প্রাইভেটকারে এবং ভাঙচুর করে একটি মোটরসাইকেল। বাড়ির সামনে থাকা সিসি ক্যামেরা ও এসিও ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ সোমবার ভোর ৫টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালায় ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রোকনুজ্জামান রোকনের বাড়িতে। এ সময় তার বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে দুটি দেশীয় অস্ত্র ও তাজা গুলি উদ্ধার করে। আটক করা হয় বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান রোকন এবং তার ভাই কাকনকে।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা হয়েছে। তবে ঘটনাটিকে সাজানো এবং মিথ্যা অভিযোগে রোকনুজ্জামান রোকন ও তার ভাইকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার স্ত্রী শামীমা সুলতানা ঝুমা।
তিনি বলেন, আমার সামনেই বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে সেনাবাহিনী। তল্লাশির সময় কোনো অস্ত্র পায়নি। রোকন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে জড়িত না। সে প্রতিপক্ষ রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম আলম বলেন, বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান রোকনের উপর ৩০ আগস্ট হামলা চালায় প্রতিপক্ষ রাজনীতিকরা। গতকালও পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রোকন ও বিএনপি নেতাদের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম বলেছেন, সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রোকনুজ্জামান রোকন ও তার ভাই কাকনকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে। ভেড়ামারা থানাকে আটককৃত আসামি ও অস্ত্র গুলি তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র র জন ত আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুড়ে যাওয়া মার্কেটের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়েছিলেন যুবদল নেতা, অডিও ভাইরাল
খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পুড়ে যাওয়া অস্থায়ী মার্কেটের মালিক রাসেল মিয়ার সঙ্গে যুবদল নেতা নাজমুল হুদা সাগরের চাঁদা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৯ মার্চ আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেট পুড়ে যায়। ফোনালাপটি এর কয়েকদিন আগের। সাগর খুলনা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুবদলের ওই কমিটির সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু গত ২৩ মার্চ রাতে মুক্তিপণের দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ফোনালাপের শুরুতে মার্কেট মালিক রাসেলকে সাগর বলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছো না, এটা কি ঠিক হচ্ছে তোমার?’
জবাবে রাসেল বলেন, ‘ভাই, আমি আছি খুব বিপদে।’
তখন সাগর বলেন, ‘তুমি আমারে বলছো টাকা দিয়ে যাবা, তুমি পাঁচ মাসেও আমার সঙ্গে যোগাযোগই করলে না। এটা তোমার কাছে আমি প্রত্যাশা করি?’
রাসেল বলেন, ‘ভাই টাকা ইনকাম করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।’
উত্তরে সাগর বলেন, ‘কেন ইনকাম কঠিন হয়ে গেল কেন? তুমি আমারে প্রথমে বললা ৫০ হাজার করে দিবা পিকচার প্যালেস থেকে। সেদিন বললা না ভাই ৩০ হাজার করে দিব। একটা টাকাও দিলা না। তুমি তো মেলাটেলা করতেছো।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘আমি মেলা করছি না। মন্টুর মেলায় কয়েকটি স্টল দিয়েছি।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় দু’জনের মধ্যে।
শেষে যুবদল নেতা বলেন, ‘যাই হোক তুমি আমার সঙ্গে যে কমিটমেন্ট করেছো সেটা কি রাখবা, না রাখবা না ? সেটা বললেই হয়ে যায়।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘এখন পিকচার প্যালেসের যে অবস্থা, আছি খুব বিপদে। দোকানদারদের বেচাকেনা কম। টাকা-পয়সা ঠিকমতো দিতে পারছে না। আমিও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেছি না।’
ব্যবসায়ীর বক্তব্য শেষে কিছুটা সময় চুপ করে রূঢ় কণ্ঠে সাগরকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করব না।’
এ বিষয়ে রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি শেষ হয়ে গেছি। পথে বইসে গেছি। আমারে আর শেষ কইরেন না’।
আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেটের ৪৪টি দোকান পুড়ে যায়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জায়গা ভাড়া নিয়ে এক বছর আগে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেন ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া। তিনি শহরে মেলা রাসেল নামে পরিচিত।