গাজীপুরে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ভোগান্তি
Published: 24th, March 2025 GMT
ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় তৈরি পোশাকের একটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভে শ্রমিকেরা ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে ওই মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহন ও যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের স্টারলিং ডিজাইনস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেওয়া হয়েছে তিন দিনের। আজ দুপুরে ছুটির বিষয়টি শ্রমিকেরা জানতে পেরে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা বেলা দেড়টার দিকে কারখানার সামনে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ সময় শ্রমিকেরা আরও কিছু দাবিদাওয়া উত্থাপন করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ থাকায় উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
ওই কারখানার খাইরুন্নেছা নামের এক শ্রমিক বলেন, পাঁচ দিনের ছুটি দাবি করা হয়েছে, কিন্তু ছুটি দেওয়া হয়েছে তিন দিনের। এ ছাড়া চলতি মাসের পুরো বেতন দিতে হবে। ওই কারখানার শ্রমিক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আশপাশের সব কারখানা ছুটি দিয়েছে ৯ থেকে ১২ দিন, কিন্তু আমাদের কারখানা ছুটি দিয়েছে ৩ দিন। আমরা সেখানে পাঁচ দিনের ছুটি দাবি করেছি।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ছুটি বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন এবং মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পুড়ে যাওয়া মার্কেটের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়েছিলেন যুবদল নেতা, অডিও ভাইরাল
খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পুড়ে যাওয়া অস্থায়ী মার্কেটের মালিক রাসেল মিয়ার সঙ্গে যুবদল নেতা নাজমুল হুদা সাগরের চাঁদা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৯ মার্চ আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেট পুড়ে যায়। ফোনালাপটি এর কয়েকদিন আগের। সাগর খুলনা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুবদলের ওই কমিটির সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু গত ২৩ মার্চ রাতে মুক্তিপণের দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ফোনালাপের শুরুতে মার্কেট মালিক রাসেলকে সাগর বলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছো না, এটা কি ঠিক হচ্ছে তোমার?’
জবাবে রাসেল বলেন, ‘ভাই, আমি আছি খুব বিপদে।’
তখন সাগর বলেন, ‘তুমি আমারে বলছো টাকা দিয়ে যাবা, তুমি পাঁচ মাসেও আমার সঙ্গে যোগাযোগই করলে না। এটা তোমার কাছে আমি প্রত্যাশা করি?’
রাসেল বলেন, ‘ভাই টাকা ইনকাম করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।’
উত্তরে সাগর বলেন, ‘কেন ইনকাম কঠিন হয়ে গেল কেন? তুমি আমারে প্রথমে বললা ৫০ হাজার করে দিবা পিকচার প্যালেস থেকে। সেদিন বললা না ভাই ৩০ হাজার করে দিব। একটা টাকাও দিলা না। তুমি তো মেলাটেলা করতেছো।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘আমি মেলা করছি না। মন্টুর মেলায় কয়েকটি স্টল দিয়েছি।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় দু’জনের মধ্যে।
শেষে যুবদল নেতা বলেন, ‘যাই হোক তুমি আমার সঙ্গে যে কমিটমেন্ট করেছো সেটা কি রাখবা, না রাখবা না ? সেটা বললেই হয়ে যায়।’
মার্কেট মালিক বলেন, ‘এখন পিকচার প্যালেসের যে অবস্থা, আছি খুব বিপদে। দোকানদারদের বেচাকেনা কম। টাকা-পয়সা ঠিকমতো দিতে পারছে না। আমিও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেছি না।’
ব্যবসায়ীর বক্তব্য শেষে কিছুটা সময় চুপ করে রূঢ় কণ্ঠে সাগরকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করব না।’
এ বিষয়ে রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি শেষ হয়ে গেছি। পথে বইসে গেছি। আমারে আর শেষ কইরেন না’।
আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেটের ৪৪টি দোকান পুড়ে যায়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জায়গা ভাড়া নিয়ে এক বছর আগে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেন ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া। তিনি শহরে মেলা রাসেল নামে পরিচিত।