ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় তৈরি পোশাকের একটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভে শ্রমিকেরা ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে ওই মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহন ও যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের স্টারলিং ডিজাইনস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেওয়া হয়েছে তিন দিনের। আজ দুপুরে ছুটির বিষয়টি শ্রমিকেরা জানতে পেরে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা বেলা দেড়টার দিকে কারখানার সামনে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ সময় শ্রমিকেরা আরও কিছু দাবিদাওয়া উত্থাপন করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ থাকায় উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

ওই কারখানার খাইরুন্নেছা নামের এক শ্রমিক বলেন, পাঁচ দিনের ছুটি দাবি করা হয়েছে, কিন্তু ছুটি দেওয়া হয়েছে তিন দিনের। এ ছাড়া চলতি মাসের পুরো বেতন দিতে হবে। ওই কারখানার শ্রমিক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আশপাশের সব কারখানা ছুটি দিয়েছে ৯ থেকে ১২ দিন, কিন্তু আমাদের কারখানা ছুটি দিয়েছে ৩ দিন। আমরা সেখানে পাঁচ দিনের ছুটি দাবি করেছি।’

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ছুটি বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন এবং মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নাগরদোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, অভিযুক্ত স্বামী আ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় লাকী বেগম (২০) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।  
 
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিউদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত লাকী বেগম একই উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনসুর আলীর মেয়ে।  আটক স্বামী মো. সাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লী পাড়ার মো. মঙ্গলের ছেলে।    

নিহত লাকীর মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে সাকিবের সাথে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত পনের দিন আগে সে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাঁটিয়ে ফেলে। 

সোমবার সন্ধ্যার পরে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নাগরদোলায় উঠে।  

শেফালী বেগমের অভিযোগ, নাগরদোলায় চড়াকালীন সাকিব তার মেয়ে লাকীকে গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

লাকীর বাবা মনসুর আলী বলেন, “সাকিব মাদকাসক্ত ছিলো। কথায় কথায় লাকীকে নির্যাতন করতো। আমাদের ঘরে এসেও মেরেছে। সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, “অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সুজন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ