কুড়িগ্রামে স্মৃতি রাণী (৩৫) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের আরাজি কদমতোলা এলাকার রফিকুল ইসলামের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, সকালে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। স্মৃতি রাণী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কার্তিকের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, নিহতের স্বামী কাজের সন্ধানে ঢাকায় গেছেন। তিন সন্তান নিয়ে গৃহবধূ বাড়িতেই থাকতেন। আজ সকালে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে আরাজি কদমতোলা এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের গোয়ালঘরে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবউল্লাহ বলেন, ‘‘এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে সিপিআর ও এইডি প্রশিক্ষণ চালুর পরামর্শ

ধরুন, আপনারা কয়েকজন গাড়িযোগে দূরে কোথাও যাচ্ছেন। হঠাৎ সহযাত্রীদের একজনের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। দ্রুত তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস না ফিরলে মৃত্যু নিশ্চিত। স্বল্প দূরত্বে কোনো হাসপাতালও নেই। এ ক্ষেত্রে আপনি কী করবেন? এ ক্ষেত্রে আপনার সিপিআর বা কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশনের মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকলে অসুস্থ সহযাত্রীর জীবন বাঁচাতেও পারেন।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ভবিষ্যতের তামিমদের বাঁচান: সিপিআর-প্রস্তুত বাংলাদেশ গঠনে প্রতিবছর ১,০০,০০০ জীবন বাঁচান’ শীর্ষক এক নীতিনির্ধারণী আলোচনার আয়োজন করা হয়।

এ আলোচনায় জীবনরক্ষাকারী সিপিআর ও এইডি (অটোমেটেড এক্সটারনাল ডিফিব্রিলেটর) যন্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন আলোচকেরা। সম্প্রতি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট অ্যাটাকে ক্রিকেটার তামিম ইকবালের জীবন বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ই–টু–ডি ওয়ার্ল্ড স্কুল অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়ালস, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন সিপিআর দিয়ে তামিম ইকবালের হৃৎস্পন্দন ফেরানোর ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখা মোহামেডানের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম। সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন ই-টু-ডি ওয়ার্ল্ড স্কুল অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়ালসের প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর ও পার্টনার অধ্যাপক বারি কাহার।

অধ্যাপক বারি কাহার বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা হলো আম্বুলেন্সে এইডি থাকে না, চালক বা সেবাকর্মীরা সিপিআর জানেন না। সঠিক নিয়মে না জানার জন্য অনেকে সিপিআর দিতে গিয়েও ব্যর্থ হন। আবার দেখা যায়, চিকিৎসকেরাও সিপিআর দেওয়া নিয়ে আইনি ভয় পান। কেননা, অনেকে ভাবেন বুকে চাপ দেওয়ার কারণেই রোগী মারা গেছেন।

এ পরিস্থিতি বদলানো সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক বারি কাহার। তিনি বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তকে ‘বেসিক লার্নিং স্কিল’ হিসেবে সিপিআরকে যুক্ত করা গেলে দক্ষ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে উঠবে।

সভায় অধ্যাপক এম এ রশিদ বলেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট অ্যাটাক মানেই হৃৎপিণ্ডের আচমকা থেমে যাওয়া। তখন হাসপাতালের চেয়ে জরুরি হয় পাশে থাকা মানুষটা। হাসপাতালে আসা অনেক রোগীকে বাঁচানো যেত, যদি পাশে কেউ মাত্র দুই মিনিট আগে সিপিআর দিত।

ইব্রাহিম কার্ডিয়াক অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সালেহা নাসরিন বলেন, শুধু ঢাকায় নয়, প্রতিটি জেলা শহরে স্কুল-কলেজে সিপিআর ও এইডি প্রশিক্ষণ চালু করা এখন সময়ের দাবি। এইডি ব্যবহার করতে চিকিৎসক হতে হয় না। একজন দোকানদারও পারেন জীবন বাঁচাতে, যদি তাঁকে একবার শেখানো হয়।

গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও মেডিকেল অ্যাডভাইজার ব্রিগেডিয়ার (অব.) মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তকে অবশ্যই সিপিআর যুক্ত করা দরকার। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও কাজ করা দরকার।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগের প্রধান সালাহ উদ্দিন, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের চিকিৎসক নুসরাত দৃষ্টি, কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট প্রদীপ কুমার সরকার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আনোয়ার হাবিব কাজল, স্কিল জবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কে এম হাসান, জাগো ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ইয়ুথ কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া জাহান প্রমুখ।

আরও পড়ুনতামিম ইকবালের জীবন রক্ষা করেছে সিপিআর, এটি কেন সবার জেনে রাখা জরুরি, কোথায় শিখবেন ২৬ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ