সাভারের বিকেএসপিতে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার তামিম ইকবাল। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর তার হার্টে একটি ব্লক ধরা পড়ে এবং রিং (স্টেন্ট) পরানো হয়। বর্তমানে তিনি একটি হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (CCU) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

মাঠেই হার্ট অ্যাটাক, হাসপাতালে তামিম ইকবাল

জানা গেছে, তামিম দুইবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন। ঠিক কীভাবে দিনের শুরু থেকে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটল, তা জানানো হয়েছে তামিম ইকবালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এডমিনের বরাতে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে। নিচে তা তুলে ধরা হলো—

হার্টে ব্লক তামিমের, পরানো হলো রিং

‘সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করেন তামিম। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রথমে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মনে করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতামূলকভাবে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।’

তামিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন প্রধান উপদেষ্টা

‘পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মোহামেডান ক্লাবের ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হেলিকপ্টার ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়, যেন দ্রুত উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। তবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে আবারও তামিমকে নেওয়া হয় নিকটবর্তী কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে।’

তামিমের জন্য প্রার্থনায় শাহরুখ খানের নাইট রাইডার্স

‘সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে একটি ব্লক শনাক্ত হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে রিং পরানো হয়। এখন তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (CCU) রয়েছেন।’

তামিমের জন্য দোয়া চাইলেন তাসকিন-মিরাজরা

তামিম ইকবালের দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশজুড়ে দোয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে তার জন্য প্রার্থনায় শামিল হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল ত ম ম ইকব ল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে দারিদ্র্যের হার কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা

দেশে দারিদ্র্যের হার এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত এক ধারণা জরিপ বা পারসেপশন সার্ভেতে এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার বিআইডিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে এ হার হয়েছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। যদিও বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ দেশব্যাপী অনেক বড় নমুনার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আর বিআইডিএস পাঁচটি জেলার ওপর ধারণা জরিপ করেছে। বিআইডিএস বলেছে, তাদের জরিপটি খানা আয় ও ব্যয় জরিপের সঙ্গে তুলনা করার জন্য নয়। তবে ধারণা জরিপে এটি ফুটে উঠেছে যে, দুই বছর আগের চেয়ে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। 

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় জরিপটি পরিচালিত হয়। ঢাকা, বান্দরবান, খুলনা, রংপুর ও সিলেট জেলা জরিপের জন্য নির্ধারণ করা হয়। মোট ৩ হাজার ১৫০টি খানা বা পরিবারের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে শহরের খানা ১ হাজার ৯৯০টি এবং গ্রামীণ খানা ১ হাজার ১১৬টি। সবচেয়ে বেশি ৭৫০টি খানা ঢাকার। 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডব্লিউএফপির অফিসার ইনচার্জ সিসেমানি পারসেসমেন্ট। জরিপের ফল তুলে ধরেন সংস্থার গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনূস। বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূস যৌথভাবে জরিপ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমানে মানুষের অবস্থা যে আরও খারাপ হয়েছে, তা জরিপে উঠে এসেছে এবং বাস্তবতার সঙ্গে যার মিল রয়েছে। 
বিবিএসের জরিপে ২০২২ সালে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিবিএসের জরিপে শহরে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে এসেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। 

বিবিএসের জরিপে ঢাকা জেলায় ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে ২০২৪ সালে যা বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খুলনা জেলায় দারিদ্র্যের হার ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৪ সালে বিআইডিএসের জরিপে যা দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে সিলেট শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৬ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে যা ২০২৪ সালে হয়েছে ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। রংপুর জেলায় বিবিএসের ২০২২ সালের জরিপে দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ শতাংশ। ২০২৪ সালে বিআইডিএসের জরিপে যা হয়েছে ২৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বান্দরবান জেলায় ২০২২ সালে বিবিএসের জরিপে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে যা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ২০২২ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত ৩৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ড. এ কে এনামুল হক বলেন, বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বুঝতে বিআইডিএসের জরিপটি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নীতিনির্ধারণে এসব তথ্য ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন– রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, দেশে বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক কারণ ইত্যাদি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিসেমানি পারসেসমেন্ট বলেন, এটি বিবিএসের সঙ্গে তুলনা না করলেও বর্তমান পরিস্থিতি বোঝাতে বেশ কাজে দেবে। এর ফলে সরকারের যে কোনো নীতিনির্ধারণ অনেক বেশি সঠিক হবে। 

জানতে চাইলে এ ধারণা প্রতিবেদনের লেখক এবং বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূস সমকালকে বলেন, তাদের জরিপটা খানা আয় ও ব্যয়ের মতো নয়। তারা পাঁচটি জেলায় একটি ধারণা জরিপ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, সার্বিকভাবে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মূলত ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য কতটা বাড়ল কিংবা কমলো, তা পর্যালোচনা করেছেন তারা। এতে দেখা গেছে, আগের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যের হার বেশি। বিশেষ করে রাজধানীতে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। এ জন্য তিনি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওপর চাপের অভিঘাতকে দায়ী করেন। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিবালয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
  • বেড়েছে দারিদ্র্যের হার কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা
  • তামিমের অসুস্থতা: সকাল থেকে যা ঘটেছে