ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে খেলতে নেমে মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরে দ্রুতই তাকে সাভারের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাবেক এই জাতীয় দলের অধিনায়ক ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন।

হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই তামিমের এনজিওগ্রাম করা হয়, যেখানে তার হার্টে একটি ব্লক ধরা পড়ে। জানা গেছে, ওই ব্লকটি ছিল শতভাগ বন্ধ। তাই বর্তমানে তাকে ঢাকায় আনার মতো অবস্থায় নেই। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত তার হার্টে স্টেন্ট (রিং) বসানো হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা চলছে হাসপাতালেই।

তামিমের হঠাৎ অসুস্থতায় ক্রিকেটাঙ্গনে নেমে এসেছে উদ্বেগ ও শোকের ছায়া। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জরুরি বোর্ড সভা স্থগিত করেছে।

এদিকে তামিমের দ্রুত সুস্থতা কামনায় এগিয়ে এসেছে ওপার বাংলার আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্সও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় তারা লিখেছে, ‘শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠুন, তামিম ইকবাল। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব আপনার সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা করছে।’

সারাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অনেকেই তামিমের দ্রুত আরোগ্য কামনায় পাশে দাঁড়িয়েছে। লঙ্কান সাবেক ক্রিকেটার লাসিথ মালিঙ্গা তামিমের সুস্থতা কামনা করে লিখেছেন, ‘তামিমের দ্রুত এবং পূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি। সবসময় মাঠে যেমন লড়ে গিয়েছো সেভাবেই লড়তে থাকো।’

এদিকে তামিমের সবশেষ অবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল-ক্লিনিক শাখা) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান জানান, তিনি (তামিম ইকবাল) একিউট এমআই বা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন, যার ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। প্রাথমিকভাবে প্রাইমারি পিসিআই করা হয় এবং এলসিএক্স নামের ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। তাই জরুরিভিত্তিতে সেখানে স্টেন্ট (রিং) বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্লকেজ কমে গিয়ে হার্টে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, যা তাকে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদুল ফিতরে ভূয়া তালিকা করে ভিজিএফ’র চাল আত্মসাত 

দিনাজপুরের হাকিমপুরে উপজেলার খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপনের বিরুদ্ধে দুস্থদের ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এর কয়েকজন ইউপি সদস্য জড়িত আছেন বলেও অভিযোগ। প্রায় ১৮০০ জনের নামে-বেনামে ভূয়া তালিকা করে ১৮ মেট্রিকটন চাল আত্মসাত করেন তারা। এমন কি মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে ওই তালিকায়। 

অভিযোগ থেকে জানা যায়, এই পবিত্র ঈদুল ফিতরে খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের ৪ হাজার ১৬৯ জনের ভিজিএফ চালের তালিকা করেন ওই প্যানেল চেয়ারম্যান। এ তালিকায় একজনের নাম একাধিকবার তোলেন। এক ওয়ার্ডের তালিকাভুক্তদের অন্য ওয়ার্ডের তালিকায়ও নাম ওঠান। এমনকি ওই তালিকায় মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে। এভাবে চাল আত্মসাত প্রক্রিয়ায় প্যানেল চেয়ারম্যান স্বপনের সঙ্গে ৩ ইউপি সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন- ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহানুর রহমান, ৭নং ইউপি সদস্য আবুল কাশেম ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। 

এ ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন বঞ্চিত সুবিধাভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ইউনিয়নের মংলা বাজারের বাসিন্দা তাহাজ্জত আলী বলেন, “আমার প্রতিবেশী মৃত রবিউল ইসলামের নাম ভিজিএফ তালিকায় রয়েছে। কিন্তু  তিনি গত ৩ বছর আগে মারা গেছেন। এক বছর পূর্বে তার স্ত্রীর অন্যত্র বিয়েও হয়েছে। চেয়ারম্যান চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভিজিএফের তালিকায় এই মৃত ব্যক্তির নাম তালিকাভুক্ত করেছেন।”  

অভিযোগকারী মাধবপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী বেগম জানান, ভিজিএফএর তালিকায় তার নামের সিরিয়াল ২৩৭৬। অথচ কয়েকবার চেয়ারম্যানের নিকট ভিজিএফ চালের জন্য গেলে তার নাম তালিকায় নেই বলে ফিরিয়ে দেন। 

তিনি জানান, শুধু তাকে নয় এরকম আরও অনেক মেয়ে মানুষকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

অভিযোগকারী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, তার মাস্টার রোলের সিরিয়াল নম্বর ২১০। তালিকায় তার নাম নেই বলে তাকেও ওই দিন চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমরা গরীব মানুষ ঈদের আগে ভিজিএফের চালের অপেক্ষায় থাকি। সেই চাল যদি চেয়ারম্যান  খেয়ে ফেলেন তাহলে তো গরীবের তো আর বাঁচার পথ নাই। সরকারের উচিত গরীবের চাল মেরে খাওয়া চেয়ারম্যানকে শাস্তি দেওয়া।” 

লিখিত অভিযোগকারী সাইমুমুর রহমান ডলার জানান, ১নং ওয়ার্ডের ৮৬ জন , ২নং ওয়ার্ডের ৭৫ জন, ৩নং ওয়ার্ডের ৬৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডের ৫৬ জন,  ৫নং ওয়ার্ডের ১১১ জন, ৬নং ওয়ার্ডের ১৩১ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৯২ জন, ৮নং ওয়ার্ডের ১০৯ জন ও ৯নং ওয়ার্ডের ৮৩ জনের মোট ৮০৬ জনের নাম অন্য ওয়ার্ডের মাস্টার সিরিয়ালে একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা এসব নামের বিপরীতে বরদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ করেছেন। 

এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, “ভিজিএফ এর চাল বিতরণে সময় ট্যাগ অফিসারসহ সব ওয়ার্ডের মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন। আমি সব চাল সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করেছি।”

এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, “খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। পিআইওকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মোসলেম/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ