মেক্সিকোতে গাড়ি খাদে পড়ে ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও চারজন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর মেক্সিকোর প্রদেশ নুয়েভো লিওনে। দুর্ঘটনাস্থলটি যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী এই প্রদেশের রাজধানী মন্টেরে থেকে অল্প দূরে।

রাস্তা থেকে প্রায় ৪০০ ফুট নিচে গাড়ি পড়ে যাওয়ার পর হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। এদিকে খাদে পড়ে যাওয়ার পর গাড়িতে আগুন লেগে যায় এবং সেই আগুন আশপাশের বনেও ছড়িয়ে পড়ে। পরে আগুন নেভানোর জন্য হেলিকপ্টার পাঠানো হলেও তা নিয়ন্ত্রণের আগেই ২ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, রোববার উত্তর মেক্সিকোতে একটি ভ্যান খাদে পড়ে আগুন ধরে যাওয়ার পর ১২ জন নিহত এবং আরও চারজন আহত হয়েছেন বলে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সান্তিয়াগো পৌরসভার মেয়র ডেভিড দে লা পেনা এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনাটি গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।

প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৩৯৪ ফুট (১২০ মিটার) খাদে পড়ে যাওয়া ভ্যানটিতে ১৬ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীরা কোথা থেকে এসেছিলেন এবং চালকও ওই ১৬ জনের মধ্যে ছিলেন কিনা সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলেই কিছু লোক মারা গেলেও, অন্যদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তারা পরে মারা যান। কর্তৃপক্ষের শেয়ার করা বেশ কিছু ছবিতে দেখা গেছে, একটি শুকনো বন থেকে ধোঁয়া উঠছে, যেখানে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং একটি হেলিকপ্টার সেই আগুন নেভানোর জন্য কাজ করছে।

রাজ্য কর্তৃপক্ষ অনুমান করছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগে প্রায় দুই হেক্টর জমি পুড়ে গেছে।

মেক্সিকোতে অবশ্য সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা বেশ সাধারণ। এই মাসের শুরুতে দক্ষিণ মেক্সিকোতে একটি বাস উল্টে যাওয়ার ফলে ১১ জন মারা যায়। গত মাসে, দক্ষিণ মেক্সিকোতেও একটি বাসের সাথে একটি ট্রাকের সংঘর্ষে ৪১ জন মারা যায়।

আর গত বছরের শেষের দিকে মধ্য মেক্সিকোতে একটি বাস দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ