ছাত্রদল নেতাকে ‘হত্যার’ হুমকি, থানায় জিডি
Published: 24th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ছাত্রদলের এক নেতাকে ‘হত্যার’ হুমকি দেওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা মো. কামরুল হাসান আকাশ। তিনি নিজেই বাদী হয়ে গত শুক্রবার (২১ মার্চ) কবিরহাট থানায় জিডিটি করেন।
ছাত্রদল নেতা আকাশ কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নবগ্রামের আব্দুল গনির ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
আরো পড়ুন:
লেডি বাইকার এশার টার্গেট ছিল বিত্তশালীর স্ত্রী-মেয়ে: পুলিশ
হিলিতে তেলের লরি খাদে পড়ে নিহত ২
অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের আবদুল আলী ওরফে ধনু মেম্বারের ছেলে ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হাকিম সুজন (৩৮), মৃত বসু মাঝির ছেলে সফি উল্যাহ হেন্জু মাঝি, আব্দুল হাসেমের ছেলে আব্দুল মালেক ও মৃত মো.
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এক নম্বর বিবাদী গত বছরের ৮ আগস্ট আকাশকে হত্যার জন্য সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেন। বাদী গোপনসূত্রে ওই ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ পেয়েছেন। এরপর থেকে বিবাদী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হাকিম সুজন অডিও ক্লিপের ভয়েস তার বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “যে কথা হয়েছে, সেটা ছাত্রদল নেতা আকাশকে নিয়ে নয়।”
ছাত্রদল নেতা মো. কামরুল হাসান আকাশ বলেন, “এলাকায় সুজনের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত। এছাড়া, এলাকাতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাকে পছন্দ করে। এটিও একটি কারণ হতে পারে। সুজন গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে এলাকায় চলাফেলা শুরু করেন। আমি সেটিরও প্রতিবাদ করেছি। এসব নিয়ে তিনি আমার ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন।”
তিনি আরো বলেন, “বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে অথবা চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসার পথে যে কোনো সময় আমার ওপর তিনি হামলা করতে পারেন। কল রেকর্ড পাওয়ার পর আমি থানায় জিডি করেছি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
কবিরহাট থানার ওসি মো. শাহীন মিয়া বলেন, “ছাত্রদল নেতার পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অভ য গ ছ ত রদল ন ত ন ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।
২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।
অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।
অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।