সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ
Published: 24th, March 2025 GMT
চেক প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) জিয়াদুর রহমান আজ সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আতিকুর রহমান।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চেক প্রতারণার মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। পরে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন। আজ সোমবার আদালত সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিলেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চেক প্রতারণার অভিযোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আইএফআইসি ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাহিবুর রহমান। আদালত সেদিন সাকিব আল হাসানসহ চার আসামিকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন।
মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করা হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি। সেদিন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের পরিচালক ইমদাদুল হক। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী শাহাগীর হোসাইন আদালতে সেদিন হাজির হননি।
বাদীপক্ষ থেকে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। আদালত পরে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মামলার অপর আসামি মালাইকার বেগম মারা গেছেন বলে আদালতকে জানানো হয়। আদালত তাঁর মৃত্যু-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাকিব আল হাসান। সাত বছর আগে (২০১৭ সাল) আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানটি দেড় কোটি টাকা ঋণ নেয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরে ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার দুটি চেক দেয় ব্যাংকে। তবে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক দুটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরে টাকা পরিশোধ করার জন্য সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডকে আইনি নোটিশ পাঠায় আইএফআইসি ব্যাংক। এরপরও টাকা পরিশোধ না করায় গত ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের মালিক সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন অ য গ র স ক ব আল হ স ন র পর শ ধ পর য় ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ পেছাল ১১৭ বার
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আজ মঙ্গলবারও আদালতে জমা পড়েনি। এ নিয়ে এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১১৭ বার পেছানো হলো।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
আগামী ২১ মে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন দিন ঠিক করেছেন ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম।
এক যুগ পর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘র্যাবের কাছ থেকে মামলাসংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র বুঝে পেয়েছি। তদন্তকাজ নতুন করে শুরু করেছি।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে র্যাব আদালতকে জানিয়েছিল, সাগর-রুনির বাসা থেকে জব্দ করা আলামতের ডিএনএ পর্যালোচনায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষের উপস্থিতি মিলেছে। অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবে ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ছবি প্রস্তুতির চেষ্টা চলছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএ ল্যাবের ফলাফল জেনেছে র্যাব। তবে অজ্ঞাতপরিচয় দুজনের ডিএনএ থেকে ছবি তৈরির সন্তোষজনক ফল আসেনি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে দুজন জামিনে, বাকি ছয়জন কারাগারে।
৩০ সেপ্টেম্বর সাগর ও রুনি হত্যা মামলার তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত শেষে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।