ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু, জেনে নিন বিভিন্ন রুটের শিডিউল
Published: 24th, March 2025 GMT
ঈদ এলেই ‘স্বপ্নে যাবে বাড়ি আমার...’ জিঙ্গেলটির কথা মনে পড়ে সবার আগে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে মাঠ-ঘাট পেরিয়ে যাত্রীবোঝাই ট্রেনের ছুটে চলা। এ সময়টায় বাড়তি ভিড় থাকলেও ট্রেনযাত্রাকেই নিরাপদ মনে করেন যাত্রীরা। ফলে টিকিট পেতে লাগে কাড়াকাড়ি। ভোগান্তি লাঘবে প্রায় শতভাগ টিকেট অনলাইনে বিক্রি করে রেল কর্তৃপক্ষ। আগাম টিকেট সংগ্রহ করা ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ।
যারা ১৪ মার্চ টিকিট কিনেছেন, তারা আজ থেকে ট্রেনে যাত্রা শুরু করবেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচলকারী মোট ১২০টি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলবে।
এছাড়া, বিভিন্ন লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেনও চলাচল করবে। শিডিউল বিপর্যয় রোধে ঢাকাগামী ৯টি ট্রেনের বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি বাতিল করা হয়েছে।
ঈদযাত্রার জন্য সবচেয়ে বেশি যাত্রী কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রা করেন। এজন্য স্টেশনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে এবং টিকিট কাউন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনী উপস্থিত রয়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঈদযাত্রা সুষ্ঠু করতে আশা প্রকাশ করেছে, সব ট্রেন শিডিউল মেনে চলবে। ঈদে পাঁচটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হচ্ছে, এগুলো হলো— চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল, ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল। এর পাশাপাশি ঈদ যাত্রার জন্য ৪৪টি অতিরিক্ত বগি যুক্ত করা হয়েছে।
ঈদযাত্রায় ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ বাতিল করা হয়েছে, তবে ঈদের পর এসব ট্রেনের নিয়মিত বন্ধ পুনরায় কার্যকর হবে।
এই সময়ের মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, চিলাহাটি, বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি থাকবে না। অন্যদিকে, সুন্দরবন, মধুমতি, বেনাপোল, জাহানাবাদ, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস এবং নকশীকাঁথা কমিউটার ট্রেন ঢাকার শহরতলী প্ল্যাটফরম থেকে যাত্রা শুরু করবে।
টিকিটবিহীন যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলবে। এ জন্য রেলওয়ে, জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। চলন্ত ট্রেন, স্টেশন ও রেললাইনে নাশকতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এবারের ঈদযাত্রায় কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যেমন ২৬ মার্চ থেকে জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ঢাকামুখী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে জয়দেবপুরমুখী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ইস্যু করা হবে না।
বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে বিমানবন্দরগামী আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিট দেওয়া হবে না। ঈদের ১০ দিন আগে এবং ঈদের পরে ১০ দিন পর্যন্ত ট্রেনে সেলুন কার সংযোজন করা হবে না।
ঈদের ফিরতি টিকেট ৩ এপ্রিল থেকে সংগ্রহ করা যাবে। ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ থেকে যথাক্রমে ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ এপ্রিলের টিকিট পাওয়া যাবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ য ত র ঈদ স প শ ল ঈদয ত র ব ম নবন র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।
২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।
অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।
অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।