টাইব্রেকারে নাটকীয় জয়, সেমিফাইনালে মুখোমুখি স্পেন-ফ্রান্স
Published: 24th, March 2025 GMT
উয়েফা নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে ফ্রান্স ও স্পেনকে। দুই দলই দুই লেগ শেষে সমতায় থাকায় ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স ও লামিন ইয়ামালের স্পেন। শেষ চারেই এবার মুখোমুখি হবে ইউরোপের দুই পরাশক্তি।
প্রথম লেগে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল ফ্রান্স। তবে দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে তারা। ৫২ মিনিটে ওলিসে এবং ৮০ মিনিটে দেম্বেলের গোলে ২-০ ব্যবধানে জয় পায় স্বাগতিকরা। দুই লেগ শেষে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ে গোল না হলে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় পায় ফ্রান্স। টাইব্রেকারে ফ্রান্সের হয়ে শট মিস করেন কুন্দে ও থিও হার্নান্দেজ। ক্রোয়েটরা মিস করে তিনটিতে। মার্টিন বাটুরিনার পর ব্যর্থ হন ফ্রাঞ্জো ইভানোভিচ ও স্টানিচিস।
অন্যদিকে, স্পেনেরও ছিল রোমাঞ্চকর লড়াই। প্রথম লেগে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল তারা। দ্বিতীয় লেগেও ম্যাচটি শেষ হয় ৩-৩ গোলে। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে পেনাল্টি থেকে ওয়ার্জিবালের গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধে ডিপে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান। পরে ওয়ার্জিবাল ফের লিড দিলেও ইয়ান ম্যাটসেন আবার সমতায় ফেরান ডাচদের। অতিরিক্ত সময়ে ইয়ামালের গোলে স্পেন আবার এগিয়ে যায়, কিন্তু জাভি সিমন্সের পেনাল্টিতে আবারও সমতা ফেরে। দুই লেগে ৫-৫ গোলে ড্র হওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। সেখানে স্পেন ৫-৪ ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। স্পেনের হয়ে শুধু ইয়ামাল শট মিস করেন, আর নেদারল্যান্ডসের পক্ষে ব্যর্থ হন ল্যাং ও মালেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী ঐতিহ্যে চুনারুঘাটের বৈশাখী মেলা, কৃষিপণ্যের বাহারে মুখর পীরের বাজার
শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার পীরের বাজারে শুরু হয়েছে বৃহৎ বৈশাখী মেলা, স্থানীয়ভাবে যা 'বান্নি' নামে পরিচিত। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি চুনারুঘাটসহ সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয় এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে কৃষিপণ্যের বিশাল সমাহার। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লাঙল, জোয়াল, দা, কাঁচি, মই, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ অসংখ্য কৃষি উপকরণ। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হস্তশিল্প ও মনিহারি পণ্যেরও ছিলো চোখধাঁধানো উপস্থিতি।
স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এমনকি উত্তরবঙ্গ থেকেও বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।
চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন তারা।
তবে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন কমে যাওয়ায় মেলার জৌলুস কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে। সেইসঙ্গে আশপাশে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠায় মেলার পরিসরও সীমিত হয়েছে।
স্থানীয় ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, মেলায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। মেলা চলাকালীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ বাহিনী, নিশ্চিত করেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল ছোট পরিসরে পূজা আয়োজনের মাধ্যমে। পরে তা বৃহৎ মেলায় রূপ নেয়।
এখনও অনেকেই শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে এই মেলায় আসেন, স্মৃতিচারণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেলায় পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামবাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
চুনারুঘাটের এই বৈশাখী মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি এ অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।