জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না
Published: 24th, March 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া অনুমোদনের একটি সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। প্রস্তাবটি ফেরত দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত দপ্তর, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়।’
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়ার ওপর মতামত চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিষয়ক মন্ত্রণালয় খসড়ার ওপর অর্থ বিভাগের মতামতের জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থ সচিব গত ১৯ মার্চ অর্থ উপদেষ্টা ড.
সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। উক্ত অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তুতকৃত খসড়া অধ্যাদেশের ওপর অর্থ বিভাগের মতামত পাঠানোর জন্য বিবেচ্য পত্রে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এতে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য গত ১২ ডিসম্বের ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস এ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক’ বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর-এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজস্বখাতে ৩৩ টি পদ সৃজনসহ সাংগঠনিক কাঠামো হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বর্তমানে উক্ত অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক খসড়া অধ্যাদেশ প্রস্তুত করে এর ওপর অর্থ বিভাগের মতামত চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, সচিবালয় নির্দেশমালা, ২০২৪ অনুযায়ী অধিদপ্তরসমূহ সংযুক্ত দপ্তর হিসেবে সরকারি নীতি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী কার্যব্যবস্থার অংশ। মন্ত্রণালয়/ বিভাগ কর্তৃক নির্দেশিত নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংযুক্ত দপ্তরসমূহ প্রয়োজনীয় নির্বাহী কার্যাবলি পরিচালনা করে থাকে। মন্ত্রণালয়/বিভাগের অধীনে নতুন দপ্তর/অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি'র কার্যপরিধিভুক্ত। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি'র অনুমোদনের প্রেক্ষিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস হালনাগাদ করা হয়েছে। তাছাড়া, আইন/অধ্যাদেশের মাধ্যমে সাধারণত সংবিধিবদ্ধ/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়। উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত দপ্তর, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এ শহীদ পরিবারের কল্যাণ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নীতিমালা, ২০২৫’ খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এর ওপর অর্থ বিভাগ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীতব্য উল্লিখিত নীতিমালা এবং মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস বাস্তবায়নের মাধ্যমে আলোচ্য অধিদপ্তরের কার্যাবলি পরিচালিত হবে। এসকল বিষয়াদি বিবেচনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য আইন/অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রয়োজন নেই বলে অর্থ বিভাগ মনে করে।
এ অবস্থায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথকভাবে আইন/অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রয়োজন নেই মর্মে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে অবগত করে চিঠি যেতে পারে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার মতামত চাওয়া হলে তিনি তাতে অনুমোদন দিয়েছেন।
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স রস ক ষ প ন র জন য উপদ ষ ট র মত মত প রস ত পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা জাতির গর্ব: সেনাপ্রধান
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা জাতির গর্ব হিসেবে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, এই আন্দোলনে তরুণ সমাজ শুধু অংশগ্রহণই করেনি বরং কীভাবে সত্য ও সঠিক পথে ন্যায় সংগত দাবী আদায় করা যায় সেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসস্থ ‘আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স’-এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা ও শহীদ যোদ্ধাদের পরিবারদের সম্মানে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৭২ জন আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জুলাই যোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণে সব সময় পাশে থেকেছে। সেনাপ্রধান অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে’—এই মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও দেশমাতৃকার কল্যাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় পাশে থাকবে।
দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, সততা, মানবিকতাবোধ ও নিয়মানুবর্তিতার সমন্বয়ে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে এই দেশ সমৃদ্ধির শিখরে আরোহণ করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান। তিনি সেই স্বপ্নপূরণে সবাইকে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের ও নিহত যোদ্ধাদের প্রতিটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।