গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
Published: 24th, March 2025 GMT
রাফাহ এবং খান ইউনিসের কয়েকটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ভয়ংকর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়াও চলে স্থল অভিযান, ইসরাইল থেকে ছোড়া হয় কামানের গোলা। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, গত ২৪ ঘন্টায় গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪১ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। এর ফলে চলমান গাজা যুদ্ধে এই পর্যন্ত ৫০ হাজার ২১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের সংখ্যায় এই মরদেহ দুটিও যুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের হামলায় ৬১ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতি অনুযায়ী, অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়েছে, কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
১৮ মার্চ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আকস্মিক বিমান হামলা করে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নতুন করে শুরু হওয়া এই হামলায় ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। ২ মার্চ এই চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরুর কথা ছিল। এই পর্যায়ে গাজা যুদ্ধের অবসান এবং অবরুদ্ধ এই উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সরে যাওয়ার কথা ছিল।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের সময়সীমা আরও বাড়িয়ে সকল জিম্মিদের মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তবে হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার জন্য তাগিদ দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এছাড়া ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক-প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে শিক্ষা উপদেষ্টার তাগিদ
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল ইসলাম আবরার। তিনি শিল্পের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ বিষয়গুলোতে নজর রেখে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে দক্ষতা ও বাস্তবমুখী করা জরুরি।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক নয়, বরং সহায়ক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভূমিকা রাখবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষাক্রমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া গুণগতমান উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর প্রক্রিয়া চলমান। এর মাধ্যমে গবেষণা ও নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাসম্ভব সহায়তা করবে।
উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। আগামীতে এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ড. সবুর খান অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ প্রসঙ্গে বলেন, যে পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে আদায় করা হয়েছে, তা গবেষণা কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য পুনরায় বরাদ্দ করা উচিত। এ অর্থ উদ্ভাবনী গবেষণা, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যয় হলে উচ্চশিক্ষা খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের পদ্ধতি প্রসঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আবেদীন বলেন, প্রতিটি পদের জন্য ১৫-২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তিনজন অধ্যাপকের নাম প্রস্তাব করতে হয়। সে হিসাবে সহস্রাধিক মানসম্পন্ন অধ্যাপক পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমিতির কোষাধ্যক্ষ কে বিএ ম মঈন উদ্দিন চিশতি বলেন, একটি মানসম্পন্ন ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কয়েকশ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে নিজস্ব অর্থায়নে জমি কেনার পর ক্যাম্পাস নির্মাণে অর্থের সংস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তিনি স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার বিষয়ে সরকারি সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য কাইয়ূম রেজা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।