ঈদযাত্রায় ভোগাতে পারে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক
Published: 24th, March 2025 GMT
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের জন্য একদিকে সড়ক সংকীর্ণ, অন্যদিকে খানাখন্দের অভাব নেই। স্বাভাবিক সময়েই যেখানে যানবাহন চলে ধীর গতিতে, সেখানে চিন্তা বাড়িয়েছে ঈদযাত্রায় বাড়তি পরিবহনের চাপ। উত্তরবঙ্গে যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আশুলিয়ার ধউর থেকে বাইপাইল হয়ে ঢাকা ইপিজেডের ১৫ কিলোমিটার সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি হতে পারে এমন শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
পুলিশ বলছে, সড়কে ঈদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রস্তুতি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে থাকবে সর্বোচ্চ তৎপরতা।
ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল এবং নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক। এই দুই সড়ক হয়েই যাতায়াত করে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার হাজারো যানবাহন। সড়কে ঈদের আগে বৃদ্ধি পায় যানবাহনের চাপ। গেল কয়েক বছর ধরে ইপিজেড থেকে আশুলিয়া হয়ে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এ কারণে সড়ক হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ। ফলে স্বাভাবিক সময়েই যানজট লেগে থাকে। শঙ্কা রয়েছে, এই পথটুকু পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যেতে পারে ঘরমুখো মানুষের।
আরো পড়ুন:
পাবনায় বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৫
গোপালগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
আরো পড়ুন: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণযজ্ঞে সড়কের বিবর্ণ দশা
উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা নাদের পরিবহনের চালক মো.
উন্নয়ন কাজ ঘিরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। রয়েছে অটোরিকশার দৌরাত্ম। ঈদ যাত্রার বাড়তি চাপে তাই ভোগান্তির সম্ভাবনা করছেন অনেকেই।
সড়কের বাইপাইল এলাকায় কথা হয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালক নাজমুল হুদার সঙ্গে। তিনি বলেন, “নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইলের অবস্থা খুবই খারাপ। খানাখন্দে সড়ক ভরা। প্রশাসন যদি খানাখন্দ মেরামত করত, তাহলে যানজট একটু কমতো।”
তিনি আরো বলেন, “এই বাইপেলেই যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ঈদে যখন পোশাক কারখানা ছুটি হবে, লোকজনের চাপ বাড়বে তখন তো অবস্থা আরো খারাপ হবে।”
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ঈদের ছুটি শুরু হলে পোশাক শ্রমিকদের ঢল নামবে সড়কে। তাই সড়কে যাত্রীদের চাপ নিরসনে পোশাক কারখানাগুলো ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়া এবং দুর্ঘটনা ও যানযট এড়াতে যাত্রী ও চালকদের আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “প্রতিবছর আমরা দেখি, ঈদে পোশক কারখানাগুলো একসঙ্গে ছুটি হয়। যে কারণে ঘরমুখো শ্রমিকরা বাড়ি একসঙ্গে রওনা হন। সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। আমি গার্মেন্টস মালিকদের অনুরোধ জানাব, তারা যেন পর্যায়ক্রমে কারখানাগুলো ছুটি দেন। যাতে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। শ্রমিক ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ থাকবে, তারা যেন ট্রাক ও বাসের ছাদে উঠে বাড়িতে না যান।”
তিনি আরো বলেন, “সাভারের পোশাক কারখানাগুলো ২৫ তারিখ থেকে ছুটি হবে। শ্রমিকরা যাতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন সে জন্য উদ্যোগ নিতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ থাকবে।”
নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই থানা কমিটির সভাপতি নাহিদ মিয়া বলেন, “ঈদকে কেন্দ্র করে একাধিক ট্রিপের আশায় চালকরা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালান। এতে দুর্ঘটনা ঘটে। যেহেতু, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে, আমরা চাইব কিভাবে সড়ক ব্যবস্থা সুন্দর একটা সিস্টেমে আনা যায়। কারণ ঈদকে সামনে রেখে সড়কে যানজট হয়। মানুষজন যাতে যাত্রাপথে ভোগান্তির শিকার না হন সেভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান বলেন, “নির্মাণ কাজ তো এভোয়েড (এড়ানো) করা যাবে না, বন্ধ করাও যাবে না। নির্মাণ কাজ তো আশুলিয়াবাসীর জন্য, ঢাকাবাসীর জন্য। মানুষ ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা থেকে বাইরে যান। নির্মাণ কাজ চলবে, আমরা এই নির্মাণ কাজের মধ্যেই আমাদের ডেপ্লয়মেন্ট (মোতায়েন) দিয়ে মানুষের যাতে যাতায়াতে কষ্ট না হয় সে ব্যবস্থা করব। ডাইভারশন বা সার্ভিস রোড দিয়ে গাড়িগুলো পার করার জন্য যারা নির্মাণ কাজে এনগেইজড তাদের অনুরোধ করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “সড়কে যে কোনো ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের প্রচুর ডেপ্লয়মেন্ট থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করবে। মানুষের নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
ঢাকা/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ঈদ উৎসব ঈদ সড়ক র ব ঈদয ত র অন র ধ আম দ র র জন য য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন
বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণসহ স্বাস্থ্য খাতে বড় বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে চীন। হাসপাতালের নাম ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাসপাতালের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও উত্তরবঙ্গে জমি দেখা হচ্ছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে স্বাস্থ্য খাতে চীনা সহায়তা বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, হাসপাতাল নির্মাণ ছাড়াও স্বাস্থ্যের অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ সহায়তা দেবে চীন। এর মধ্যে রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতিমধ্যে দেশে এসেছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই দেশের সরকার এ দেশের মানুষকে এক হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল উপহার হিসেবে দিচ্ছে।নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাবাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে চীনের বড় ধরনের সংশ্লিষ্টতা বরাবরই ছিল। বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো নিয়মিতভাবে ওষুধের কাঁচামাল (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট-এপিআই) চীন থেকে আমদানি করে। ব্যবসায়ীরা মেডিকেল সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির একটি বড় অংশ আমদানি করেন সেখান থেকে। প্রতিবছর অনেক ছাত্রছাত্রী মেডিকেল শিক্ষার জন্য চীনে যান। বাংলাদেশ বেশি করোনার টিকা কেনে চীন থেকে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের সেরা বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ওই হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। ওই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গে চিকিৎসা হাব গড়ে তোলা হবে। এ মাসের মধ্যে অন্তত এই হাসপাতালের স্থান নির্বাচন চূড়ান্ত হতে পারে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, জেনারেল হাসপাতালটি মিরপুর, উত্তরা বা ধামরাইয়ে হতে পারে। টারসিয়ারি বিশেষায়িত হাসপাতালটি হতে পারে দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী অথবা উত্তরবঙ্গের কোনো জেলায়। এই তিন জেলায় যেখানে ঝামেলামুক্ত ১২ একর জমি পাওয়া যাবে, সেখানেই হাসপাতাল হবে।হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ১৯ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে স্বাস্থ্য খাতে চীনা সহায়তা বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় তিনটি প্রকল্প প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি জেনারেল হাসপাতালের, আরেকটি টারসিয়ারি হাসপাতালের। অন্যটি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের পুনর্বাসন সেন্টার।
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা নীলফামারী জেলায় গিয়েছিলেন হাসপাতালের জমি দেখার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দলের একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য একসঙ্গে কমপক্ষে ১২ একর জমি দরকার। এমন জমি পাওয়া কঠিন।
এই রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতিমধ্যে দেশে এসে গেছে বলে ওই কার্যবিবরণীতে উল্লেখ আছে।ওই কর্মকর্তা বলেন, জেনারেল হাসপাতালটি মিরপুর, উত্তরা বা ধামরাইয়ে হতে পারে। টারসিয়ারি বিশেষায়িত হাসপাতালটি হতে পারে দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী অথবা উত্তরবঙ্গের কোনো জেলায়। এই তিন জেলায় যেখানে ঝামেলামুক্ত ১২ একর জমি পাওয়া যাবে, সেখানেই হাসপাতাল হবে।
অন্যদিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের পুনর্বাসন সেন্টারটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতিমধ্যে দেশে এসে গেছে বলে ওই কার্যবিবরণীতে উল্লেখ আছে।
খাত আরও আছেঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংস্কার ও আধুনিকায়নে অর্থ দেবে চীন। এ–সংক্রান্ত যে প্রকল্প দলিল তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই দেশের সরকার এ দেশের মানুষকে এক হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল উপহার হিসেবে দিচ্ছে। এই হাসপাতাল উত্তরবঙ্গে, রংপুরেই করার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের বেসরকারি বিনিয়োগও আসছে। খুব শিগগির চীন থেকে ২০০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে। তখন বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হবে।