চতুর্থ পর্যায়ের ক্যানসার থেকে ফিরে আসার গল্প বললেন উপস্থাপক সামিয়া
Published: 24th, March 2025 GMT
প্রায় তিন বছর ধরে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত উপস্থাপক সামিয়া আফরিন। সিঙ্গাপুরে দুই বছর চিকিৎসা নিয়েছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি এত দিন পরিবার ও কাছের বন্ধুবান্ধব ছাড়া তেমন কেউ জানতেন না। ২০ মার্চ ঢাকার বনানীতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের অর্থসহায়তার জন্য পোশাক প্রদর্শনীর আয়োজনে নিজের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে কথা বলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে সামিয়া জানান, দুই বছর মেয়াদি চিকিৎসা কোর্স শেষ হয়েছে। সাত–আট মাস ধরে কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন না।
ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানানো প্রসঙ্গে
বনানীর ১২ নম্বর সড়কের ৪৪ নম্বর বাড়ির দোতলায় টেগোর টেরেসে ২০ মার্চ শুরু হয় ‘রিভোগ ওয়্যার টু কেয়ার’ নামের আয়োজন। নানা রঙের শাড়ি আর অন্যান্য বাহারি পোশাক নিয়ে তিন দিনের এই আয়োজন শেষ হয় গতকাল শনিবার। আয়োজনের উদ্যোক্তা ও উপস্থাপক সামিয়া আফরিন জানান, ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষদের জন্য তার এমন কিছু করার ইচ্ছা ছিল, যা সামগ্রিকভাবে সমাজের কাজে আসবে। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক সময় চাইলেও অনেক বড় কিছু করা সম্ভব হয় না। ভিন্নভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। সেই থেকেই শুরু। তাঁর ভাবনায় সানন্দ সাড়া দিয়েছেন তারকা বন্ধুরা। ভবিষ্যতে ক্যানসার–বিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে এমন আরও আয়োজনের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর ও তাঁর বন্ধুদের। এই আয়োজনে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি প্রকাশ্যে আনেন সামিয়া।
প্রথম আলোকে সামিয়া বলেন, ‘সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, কেন ক্যানসারে আক্রান্তদের জন্য পোশাক প্রদর্শনী করছি। একটা পর্যায়ে বাধ্য হয়েই আমার নিজের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি জানাই। আমি আসলে উপলব্ধি করতে পারছিলাম যে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের কতটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ ধরনের রোগীদের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়টা অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়। অনেকেই ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারেন না। ক্যানসারের রোগী মরেও যায়, মেরেও যায়, এ রকম একটা কথা প্রচলিত আছে। বিষয়টা হচ্ছে, আগে এই রোগ হতোই খুব কম মানুষের, তাই মানুষ মুখেও আনত না। বলতে চাইত না এই রোগের কথা। এটা একটা স্টিগমা ছিল। এখন দেখা যায়, প্রায় ঘরে ঘরে ক্যানসার। আমার এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ক্যানসার রোগীদের অর্থসহায়তার মাধ্যমে পাশে থাকা। তাই ভাবলাম, এখন সবাই জানুক।’
সামিয়া আফরিন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনার সঙ্গে এই আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী
‘মডেল মেঘনা আলমের সঙ্গে এই আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে, বিষয়টা তা নয়। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি আদালতে গেছে। বিচারাধীন বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী বলেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে মেঘনা আলমের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, আপনার প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে সরকার একটা বেআইনি কাজ করে ফেলেছে। এই আইন যে ব্যবহৃত হচ্ছে না, তা নয়। তারা আদালতে গেছেন। আদালত আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। আমরা আদালতকে জবাব দেব।
মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াটা সঠিক হয়নি বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, আরেক সাংবাদিক এমন প্রসঙ্গ তুলে ধরে খোদা বখস চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন- আইন উপদেষ্টা কোনও প্রেক্ষিতে এই কথা বলেছেন, তা আমরা জানি না। তিনি আমাদের কাছে এ বিষয়ে কিছু জানতেও চাননি। এখন বিষয়টি আদালতে চলে গেছে।
১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে আপনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, জনগণ এই সরকারকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়, কোন পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেছিলেন- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি তো বলিনি সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটা জনগণ বলেছে। সরকার তো বলে দিয়েছে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমি রাজনীতিবিদ নই। আমার এই কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না।
ডিবির প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের পদগুলোতে যাবে, আসবে এটাই নিয়ম। মেঘনা আলমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে সরানো হয়নি। উনি হয়তো অসুস্থ আছেন, সে জন্য তাকে সরানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস পেরিয়ে গেল, পুলিশ এখনো দায়িত্ব পালন করছে না, জনগণের অভিযোগ নিচ্ছে না এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, পুলিশ অভিযোগ নেয় না, এটা আজকের অভিযোগ নয়। বহু পুরোনো। অন্তর্বর্তী সরকার দুটি বিষয় অনলাইনে করতে যাচ্ছে। এক, জেনারেল ডায়েরি (জিডি), দুই, এফআইআর বা অভিযোগপত্র। প্রথমে দুটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে জিডি নেওয়া শুরু হবে। পরে এফআইআর নেওয়া শুরু হবে। ধীরে ধীরে একটা স্থায়ী সমাধান হবে।
জুলাই আন্দোলনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের মধ্যে ধরছেন চুনোপুঁটিদের, রাঘববোয়ালদের ধরছেন না, এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাঘববোয়ালদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তাদের জালে আসতে হবে। রাঘববোয়ালরা জালে আসার পর যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন আপনারা অভিযোগ করতে পারেন।