যৌক্তিক ও বাস্তবানুগ সিদ্ধান্তে আসতে হবে
Published: 24th, March 2025 GMT
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশেষায়িত চরিত্র অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়ে কেউ দ্বিমত করবেন না। কেননা, বিশেষায়িত দক্ষ স্নাতক ডিগ্রিধারী তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে যে চিত্র উঠে এসেছে, তা উদ্বেগজনক। সেখনে মানবিক, সমাজবিজ্ঞান, কৃষি ও ব্যবসায় শিক্ষার মতো বিষয়েও পড়ানো ও ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের বাইরের বিষয়ের শিক্ষার্থী অর্ধেকের মতো। সে ক্ষেত্রে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পার্থক্যই থাকল না।
সম্প্রতি উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টিম)-সংশ্লিষ্ট সাধারণ বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। যেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, সেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম যুক্তিসংগতভাবে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সীমিত অথবা বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত—সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত প্রকৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, এমন বিষয়েও শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে।
বর্তমানে সারা দেশে ৫৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৬। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৮টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ওপরের চিত্রে আমাদের শিক্ষার মালিক-মোক্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এসব বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের প্রক্রিয়ার সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন, সেটাও দেখার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ খোলার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন নিতে হয়। তারাই–বা কীভাবে অনুমোদন দিল?
বিভিন্ন সরকারের সময় কখনো রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে, কখনো পদাধিকারীদের দল ভারী করতে নতুন নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে, যা বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র নষ্ট করেছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত জ্ঞানের বাইরের শিক্ষকদের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি উঠলেও আমলে নেওয়া হয়নি। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে আমরা সমাজবিজ্ঞান বা কলা বিভাগের কোনো শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না। একই কথা প্রযোজ্য শাহজালাল বা নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা একই চরিত্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পর্কেও।
আমরা মনে করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথার্থই সমস্যাটি চিহ্নিত করেছে। প্রশ্ন হলো সমাধান করা যাবে কী করে? দীর্ঘদিন ধরে যেসব বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিশেষায়িত বিভাগ খোলা হয়েছে, হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। দিলে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিপদে পড়বেন। তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কথাও সরকারকে ভাবতে হবে।
এই জটিল সমস্যাটি চিঠি কিংবা নির্দেশনা দিয়ে সমাধান করা যাবে না। আমরা আশা করব, শিক্ষা উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন, ইউজিসির সঙ্গে কথা বলবেন। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষাবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন। আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসতে হবে।
বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অবিশেষায়িত বিষয় আছে, সেগুলো মেজর না হলেও মাইনর বিষয় হিসেবে থাকতে পারে। প্রথম ও দ্বিতীয় বছরের শিক্ষার্থীদের জন্য যা বাধ্যতামূলক। ভবিষ্যতে যাতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ স্বেচ্ছাচারীভাবে বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে না পারে, সে বিষয়েও ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসব ব শ অন ম দ সব ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভিন্ন স্বাদের মজার খাবার
ঈদ মানেই নতুন জামাকাপড় পরার সঙ্গে সঙ্গে ভরপুর খাওয়াদাওয়া। ঈদের দিন বাড়িতে রান্না করা যায় এমন মজার স্বাদের তিন পদের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা
কাজুবাদাম দিয়ে মাটন ভুনা
উপকরণ: মাটন ১ কেজি, টকদই ২ কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, শাহি জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচামরিচ ১০-১২টা, কাজু বাদাম বাটা ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল আধা কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাটন, টক দই, সব গুঁড়া মসলা দিয়ে মাখিয়ে ঢেকে রাখুন ২-৩ ঘণ্টা। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি হালকা বাদামি করে ভেজে মাখানো মাংস দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে ঢাকনা খুলে অল্প আঁচে রান্না করুন ১০-১৫ মিনিট। এবার কষানো হলে যদি মাংস সেদ্ধ না হয় তবে সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে রান্না করুন মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত। মাংসের ওপর তেল ভেসে উঠলে কাঁচামরিচ, ঘি দিয়ে দমে রাখুন ১০ মিনিট। এভাবে তৈরি করুন কাজুবাদাম দিয়ে মাটন ভুনা।
ফুলেল পোলাও
উপকরণ: পোলাও চাল ৫০০ গ্রাম, ডিম ২টা, ফুলকপি ২ কাপ, গাজর ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, ক্যাপসিকাম কুচি আধা কাপ, চিনি ও লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ২ টেবিল চামচ, টেস্টিং সল্ট ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল আধা কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি: গাজর ও ফুলকপি ফুটন্ত পানিতে বেকিং পাউডার দিয়ে ৫ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। চাল ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ফুটন্ত পানিতে হাফ সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি সামান্য ভেজে ডিম দিয়ে ঝুরি করে ভেজে গাজর-ফুলকপি দিয়ে সয়াসস, চিনি, টেস্টিং সল্ট, লবণ দিয়ে নেড়ে সেদ্ধ করা চাল দিয়ে ঢাকনাসহ ৫-৭ মিনিট রান্না করে ঘি, গোল মরিচ গুঁড়া, ক্যাপসিকাম দিয়ে নেড়ে আবারও ৫ মিনিট রান্না করে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল ফুলেল পোলাও।
টমেটো দিয়ে বিফ কড়াই ভুনা
উপকরণ: গরুর মাংস ১ কেজি, টমেটো টুকরা করে কাটা ৩-৪টা, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা ও রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, গরম মসলা ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গোল মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, গোটা শুকনা মরিচ ৭-৮টি, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, সয়াবিন তেল আধা কাপ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, পাকা কাঁচামরিচ ৫-৬টি।
প্রস্তুত প্রণালি: মাংস পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সামান্য ভেজে সব বাটা মসলা, মরিচের গুঁড়া, আস্ত মরিচ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে মাংস দিন এবং রান্না করুন কিছুক্ষণ। মাংসের গায়ে মসলা লেগে এলে টমেটোর টুকরা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। এবার পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ঢেকে রান্না করুন মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত। মাংস ভুনা ভুনা হলে গোল মরিচ গুঁড়া ও ভাজা জিরা গুঁড়া, পাকা-কাঁচা মরিচ দিয়ে দমে রাখুন ৫ মিনিট। চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল টমেটো দিয়ে বিফ কড়াই ভুনা।