পিরোজপুরে সেতুর টোলঘর ও নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে হামলা, চাঁদাবাজি, টাকা ছিনতাই, ভাঙচুরের মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার জেলা শহরের কাপুড়িয়া পট্টি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্ত দু’জন হলেন– পিরোজপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও এনসিপির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি ও তাঁর সহযোগী মিলন শিকদার। মুসাব্বির সদর উপজেলার উত্তর মাছিমপুর গ্রামের এবং মিলন উত্তর নামাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

সদর উপজেলার নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম এবং বলেশ্বর ব্রিজের টোলঘরের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দুটি করেন। মামলায় সানিসহ তিনজনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। 

মামলা থেকে জানা গেছে, মুসাব্বির মাহমুদ সানিসহ কয়েকজন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে শহরের বাইপাস এলাকায় নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের প্রকল্পে হামলা চালান। এ সময় তারা প্রকল্পের ঠিকাদারের অফিস ভাঙচুর, মারধর এবং ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যান। একই দিন তারা পিরোজপুর-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের বলেশ্বর সেতুর টোলঘরে কর্মচারীদের মারধর করে লুটপাট চালান। পরে টোলঘরে অগ্নিসংযোগ করেন।

পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান বলেন, হামলা-ভাঙচুর মামলায় সানিসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে অসুস্থ বোধ করায় রোববার পুলিশ পাহারায় সানিকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

মোসাব্বির মাহমুদ সানি গ্রেপ্তারের খবরে তাঁর বিচারের দাবিতে শনিবার বিকেলে পিরোজপুরে মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশসহ সাধারণ ছাত্র-জনতা। তারা মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী চাঁদাবাজসহ সব অপরাধীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প ট লঘর

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

মে মাসের প্রথমার্ধে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে এবং একই মাসের মাঝামাঝি ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে তফসিল ও চূড়ান্ত নির্বাচনের তারিখ কবে ঘোষণা করা হবে, সেটি রোডম্যাপে বলা নেই।

আরো পড়ুন:

বিএনপির বর্ধিত সভায় ঐক্যের ডাক, ভোটের জোর প্রস্তুতিতে চোখ

ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ভোট: প্রেস সচিব

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন মনে করে ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর এবং সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সম্বলিত পথনকশা প্রকাশ করা হলো।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহে ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন অংশীদারীর সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর ডাকসু সংবিধান সংশোধন কমিটি গঠিত হয়। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি ডাকসু নির্বাচন আচরণবিধি কমিটি গঠিত হয়, যা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারি পরামর্শ প্রদান কমিটি গঠিত হয়, যা এপ্রিলের প্রথমার্ধে চূড়ান্ত করা হবে। 

এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, প্রভোস্ট, ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালকদেরকে অবহিত করা হবে।

জুনের প্রথমার্ধেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত ৩৭ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ বারই হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছরে নির্বাচন হয়েছে মাত্র মাত্র আটবার।

১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডাকসু মনোনীত পাঁচ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগের বিষয় তুলে ধরেন সিনেটে।

২০১৯ সালে সর্ববেশ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। সেই সংসদের মেয়াদপূর্তির পর পেরিয়ে গেছে আরো পাঁচ বছর। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব শূন্যতা চলতে দীর্ঘদিন ধরে।

গত বছর গণঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ডাকসু নির্বাচনের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। এই নির্বাচনের পক্ষে জোরালো মত রয়েছে দেশের বুদ্ধিজীবীদেরও।

ঢাকা/সৌরভ/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ