চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো.

ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব য ক কর মকর ত র স ত র কর ছ ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষের উচ্ছাসে অশুভের পরাজয় নিশ্চিত

বাংলা নববর্ষকে বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব বলে অভিহিত করে পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেছেন, জণগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন প্রমাণ করেছে, বাঙালি জাতির জাতিসত্ত্বাবোধ বিনস্ট করা অসম্ভব। 

রোববার জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলন মোহাম্মদপুর থানা ও স্থানীয় শিশু কিশোর সংগঠন শৈশব মেলা বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় মোহাম্মদপুরস্থ বেঙ্গলি মিডিয়াম হাই স্কুলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সংগঠনটির সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন।

ড. তারিকুজ্জামান সুদানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক লেখক সাংবাদিক সাইফুর রহমান তপন, খেলাঘরের উপদেষ্টা আহসান হাবিব লাভলু, পরিজা সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, শৈশব মেলা বাংলাদেশ এর সভাপতি গোলাম কিবরিয়া অপু, শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলনের নেতা সৈয়দ বাবলু, নাজমুল হাসান, অনন্ত রূপ চক্রবর্তী প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে সারাদেশে উগ্রবাদী গোষ্ঠী বাঙালি সংস্কৃতির ওপর নানাভাবে আঘাত হানছে। পহেলা বৈশাখকে ধর্মের বিরুদ্ধে উপস্থাপন করার পুরোনো অপচেষ্টায় এই মৌলবাদী উগ্রবাদী মহল লিপ্ত। কতক ক্ষেত্রে অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততা জণগণকে বিস্মিত করছে।

তারা বলেন, বায়ান্নর চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে বাঙালি এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বায়ান্ন ও একাত্তরের চেতনায় মৌলবাদ, দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজ, অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী স্বেচ্ছাচারী অপশাসনসহ সব অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাংলাদেশ বদ্ধপরিকর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ